প্রকাশিত: ২০/০৫/২০২২ ৭:৩৫ এএম

কক্সবাজারে অস্বাভাবিকভাবে মৃত্যু হওয়া ২ তরুণীর অভিভাবক বাদি হয়ে পরিকল্পিত হত্যার অভিযোগে পৃথক ২ টি মামলা দায়ের করেছেন। যার মধ্যে হোটেল বিচ হলিডে-তে অবস্থানকারি লাবণী আকতার (১৯) মৃত্যু ঘটনায় তার পিতা মনির হোসেন বাদি হয়ে কক্সবাজার সদর থানায় মামলাটি দায়ের করেন বলে নিশ্চিত করেছেন ওসি (তদন্ত) মো. সেলিম উদ্দিন।

কক্সবাজার সদর থানায় ওসি (তদন্ত) জানান, বৃহস্পতিবার সকালে পিতা মামলাটি দায়ের করেন। যেখানে ৪ জনকে আসামি করা হয়েছে। আসামিদের মধ্যে যাত্রীবাড়ি এলাকার মো. জাহাঙ্গীরের পুত্র কামরুল আলম (২০) ও আবদুর রহমানের পুত্র আরিফ রহমান নিলু (২১) আটকের পর ৫৪ ধারায় কারা হেফাজতে রয়েছে। পলাতক রয়েছে, শরিয়তপুর জেলার নুরিয়া এলাকার মোশারফ হোসেনের পুত্র তানজিল হাসান (২১) ও নারায়নগঞ্জ জেলার বাসিন্দা মাহিম হাসান অনিক (২০)।
ওসি সেলিম জানান, মামলার এজাহারে পিতা তার মেয়ে এক আত্মীয়দের বাড়িতে বেড়াতে যাওয়ার কথা বলে বের হয়েছিল। অভিযুক্ত ৪ জন কৌশলে তার মেয়েকে কক্সবাজার এনে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে।
সেলিম জানান, ৪ বন্ধু সহ ১১ মে কক্সবাজার আসেন লাবণী। এসে কলাতলীর বীচ হলি ডে নামের একটি আবাসিক হোটেল অবস্থান নেন। ওখানে ১৪ মে অসুস্থ হলে তরুনীকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে ১৬ মে তরুনীকে আইসিইউতে হস্তান্তর করা হয়। এসময় সঙ্গে আসা ৪ জনের মধ্যে ২ জন স্বীকার করেন তারা অতিরিক্ত মদ্যপান করেছিল। এ ঘটনায় ২ জনকে আটক করা হলেও অপর ২ জন পালিয়ে গেছে। বুধবার (১৮ মে) দুপুরে লাবণী হাসপাতালে মৃত্যু বরণ করেন।

অপরদিকে বুধবার সন্ধ্যায় হোটেল রয়েল টিউলিপে অবস্থান নেয়া মাফুয়া খানম (২৯) মৃত্যুর ঘটনায় ভাই ছৈয়দুল ইসলাম বাদি হয়ে উখিয়া থানায় মামলা করেছেন বলে নিশ্চিত করেছেন উখিয়া থানার ওসি (তদন্ত) গাজি সালা উদ্দিন।
উখিয়া থানার ওসি (তদন্ত) জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরে আটক একজনকে আসামি করে মামলাটি দায়ের করা হয়। ওসি জানান, বধুবার সকালে গোপালগঞ্জের মাফুয়া খানম নামের নারীটি দিনাজপুরের নাছির উদ্দিন নামের যুবকের সঙ্গে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে হোটেল রয়েল টিউলিপে উঠেন। দুপুরে খাবার শেষে দুইজনই নিজেদের কক্ষে অবস্থান নেন। এর কিছুক্ষণ পর নারীটির শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যার কথা অবহিত করা হলে তাকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। পরে হাসপাতালে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তবে তারা স্বামী-স্ত্রী ছিল না। প্রেমের সম্পর্কের জের ধরে তার বোনকে কক্সবাজার এনে হত্যা করা হয় বলে এজাহারে অভিযোগ আনা হয়েছে। এ ঘটনায় নাছির উদ্দিন পুলিশের হাতে আটকও রয়েছে।
তবে, কক্সবাজারের তারকা মানের হোটেল সী গালে বুধবার রাতে মো. মনিরুল ইসলাম (৪০) নামের এক পর্যটকের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় এখনো কোন মামলা হয়নি। এ ঘটনায় স্ত্রী পরিচয়ে হোটেলে উঠা লিজা রহমান ঊর্মি (৩৫) কে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ অব্যাহত রেখেছে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার সদর থানার ওসি (তদন্ত) মো. সেলিম উদ্দিন।
তিনি জানান, স্বামী স্ত্রী পরিচয়ে ২ জন বুধবার (১৮ মে) বিকাল সাড়ে ৫ টায় সী গাল হোটেলের ৭২৪ নম্বর কক্ষে অবস্থান নেন। ওখানে রাত সাড়ে ১২ টার দিকে অসুস্থতা বোধ করলে পর্যটক মনিরুলকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে আনা হয়। ওখানে রাত ১ টার দিকে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে। এ ঘটনায় স্ত্রী পরিচয়ে সাথে থাকা নারীকে পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে। কিন্তু তারা স্বামী-স্ত্রী নয় বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটক নারী স্বীকার করেছে। নিহত পুরুষের স্বজনদের খবর পাঠানো হয়েছে। আসলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রফিকুল ইসলাম জানান, ২ নারী সহ ৩ পর্যটক মৃত্যুর ঘটনাটি গুরুত্বের সাথে নেয়া হয়েছে। ময়না তদন্তের পর মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে। এখন পর্যন্ত ২ নারী পক্ষে দায়ের করা মামলা লিপিবদ্ধ হয়েছে। অপর পর্যটকের আত্মীয়রা আসলেই আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। সুত্র: দৈনিক কক্সবাজার

পাঠকের মতামত

উখিয়ায় বহিষ্কৃত যুবলীগ নেতার নেতৃত্বে কলেজছাত্রকে চুরির অপবাদে নির্যাতন

কক্সবাজারের উখিয়ায় সুপারি চুরির অপবাদ দিয়ে কলেজছাত্রকে নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। ভুক্তভোগী রায়হান (১৯) কক্সবাজার সিটি ...