উখিয়া নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: ২১/০৪/২০২৫ ৯:১৮ পিএম

কক্সবাজারে কাজ করতে এসে সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার এক গ্রামের ৬ জন রাজমিস্ত্রী ৬ দিন ধরে নিখোঁজ রয়েছে।

নিখোঁজরা হলেন, খলাছড়া ইউনিয়নের পশ্চিম লোহারমহল গ্রামের মৃত লুকুছ মিয়ার ছেলে রশিদ আহমদ (২০), ফারুক আহমদের ছেলে মারুফ আহমদ (১৮), আজির উদ্দিনের ছেলে শাহিন আহমদ (২১), মৃত দুরাই মিয়ার ছেলে এমাদ উদ্দিন (২২), সফর উদ্দিনের ছেলে খালেদ হাসান (১৯) ও মৃত সর বদির ছেলে আব্দুল জলিল (৫৫)। তারা গত ১৫ এপ্রিল জকিগঞ্জ থেকে কক্সবাজারের উদ্দেশ্য বের হন।

পুলিশ বলছে, মোবাইলের লোকেশন ট্র্যাক করে ৬ জনের মধ্যে দুজনের অবস্থান কক্সবাজারের টেকনাফে পাওয়া গেছে। বিষয়টি নিয়ে কাজ চলছে।

নিখোঁজ ব্যক্তিদের পরিবার সূত্রে জানা যায়, ১৬ এপ্রিল কক্সবাজার পৌঁছানোর পর পরিবারের লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন তারা। কিন্তু এরপর থেকে তাদের মোবাইল বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। এ ঘটনায় নিখোঁজদের পরিবার চরম দুশ্চিন্তায় রয়েছেন।

নিখোঁজ এমাদ উদ্দিনের চাচাতো ভাই ও নিখোঁজ খালেদ হাসানের চাচা আব্দুল বাছিত দুলাল জানান, ১৬ এপ্রিল সন্ধ্যা ৬টার দিকে এমাদ উদ্দিন ফোনে কল দিয়ে বাড়িতে জানায় তারা কর্মস্থলে পৌঁছেছেন। এরপর আর যোগাযোগ করেনি। পরে বাড়ি থেকে কল করা হলে মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়। এরপর এমাদ ও খালেদের সঙ্গে থাকা অন্যদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। তখন তাদের নম্বরও বন্ধ পাওয়া যায়। প্রথমে স্বাভাবিক মনে হলেও পাঁচদিনেও কারো সঙ্গে যোগাযোগ না হওয়ায় বিষয়টি অস্বাভাবিক মনে হয়।

আব্দুল বাছিত দুলাল বলেন, এ ঘটনায় জকিগঞ্জ থানায় জিডি করতে চাইলে পুলিশ পরামর্শ দেয় কক্সবাজারে জিডি করার জন্য। জকিগঞ্জ থানা থেকে সেখানে যোগাযোগ করা হয়েছে। আমাদের লোকজন কক্সবাজারের উদ্দেশ্য রওনা হয়েছে।

অপরদিকে নিখোঁজ রশিদের ভাই আব্দুল বাছিত বলেন, রশিদ কয়েক বছর ধরে চট্টগ্রামে এক ঠিকাদারের অধীনে কাজ করত। বিভিন্ন সময়ে বাড়িতে আসা যাওয়া ছিল। চট্টগ্রামের ঠিকাদারের মাধ্যমে কক্সবাজার এবার প্রথম গিয়েছে। কক্সবাজার যাওয়ার পর থেকে রশিদসহ সঙ্গে থাকা সবার মোবাইল ফোন বন্ধ দেখাচ্ছে। তবে ওই ঠিকাদারের নাম ঠিকানা জানাতে পারেননি তিনি।

তিনি বলেন, আমাদের ধারণা তাদের ওইখানে যে লোক নিয়েছে তিনি কিছু করেছেন। কেউ জিম্মি করলে কারো না কারো পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করত। টাকা-পয়সা দাবি করত।

নিখোঁজ খালেদ হাসানের বাবা ও ইউপি সদস্য সফর উদ্দিন বলেন, তারা কাজের জন্য চট্টগ্রাম গিয়ে ৫/৬ মাস সেখানে থাকে। ঈদে বা ওয়াজের সময় বাড়িতে আসে। তাছাড়া সারা বছরই চট্টগ্রামে রাজমিস্ত্রীর কাজ করে। মঙ্গলবার আমার ছেলে বাড়ি থেকে যাওয়ার পরে আর কোনো যোগাযোগ নেই। ছেলের সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পারায় পরিবার আত্মীয় স্বজনরা অস্থির হয়ে পড়েছে। খালেদের মা ছেলের জন্য কান্নায় ভেঙে পড়ছেন। কোনোভাবেই সান্ত্বনা দেয়া যাচ্ছে না। রোববার সারারাত থানায় ছিলাম। যে ঠিকাদার নিয়েছিল তার মোবাইল নম্বর বন্ধ। থানার ওসি খবর নিয়ে আমাদের জানিয়েছেন, চট্টগ্রামের ওই ঠিকাদারের নাম রশিদ ও তার সাথে থাকা অপর একজনের নাম বাবুল।

সফর উদ্দিন আরও বলেন, যে জায়গা থেকে তারা নিখোঁজ হয়েছে সেখানে অভিযোগ দেয়ার জন্য পুলিশ আমাদের পরামর্শ দিয়েছে। আমাদের এলাকার অনেক লোক সেখানে বিভিন্ন ধরনের কাজ করে। তারাও খোঁজাখুজি করছে। কিন্তু কোথাও নিখোঁজ ৬ জনের মধ্যে কারো সন্ধান মেলেনি।

জকিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জহিরুল ইসলাম মুন্না বলেন, জকিগঞ্জ থেকে কক্সবাজার গিয়ে ৬ জন রাজমিস্ত্রী শ্রমিক নিখোঁজ হওয়ার খবর পেয়েছি। নিখোঁজদের পরিবার থেকে পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। আমরা তাদের সহায়তা করে যাচ্ছি। নিখোঁজদের মধ্যে দুজনের মোবাইল ফোন ট্র্যাক করে তাদের সর্বশেষ অবস্থান পাওয়া গেছে। আমরা বিষয়টি গুরুত্ব-সহকারে দেখছি।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন বলেন, বিষয়টি তিনি শুনেছেন। তবে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত কেউ অভিযোগ নিয়ে থানায় আসেনি।

পাঠকের মতামত

দৈনিক জনকণ্ঠের রিপোর্ট রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকায় প্রাইভেট হাসপাতালগুলোর সরকারি লাইসেন্স নেই, তদন্ত টিমের পরিদর্শন

রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকা উখিয়ায় ১৫টি ক্লিনিক হাসপাতাল ও ডায়াগনষ্টিক সেন্টার চলছে অনুমতি বিহীন। সরকারিভাবে কোন ...

উখিয়ায় র‌্যাব পরিচয়ে অপহরণ, ইউনিফর্ম, অস্ত্র-গুলি ও হাতকড়াসহ আটক ১

কক্সবাজারের উখিয়ায় র‌্যাব পরিচয়ে রোহিঙ্গা যুবককে অপহরণ, মুক্তিপণ আদায়ের চেষ্টা এবং প্রতারণার অভিযোগে একটি সংঘবদ্ধ ...