নিউজ ডেস্ক::
দেশের সাত জেলায় বজ্রপাতে শিশুসহ ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন আরও চারজন।শুক্রবার শেরপুর, রংপুর, নেত্রকোনা, গাইবান্ধা, লক্ষ্মীপুর, কক্সবাজার ও হবিগঞ্জ জেলায় এসব বজ্রপাতের ঘটনা ঘটে। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-
শেরপুর
শুক্রবার দুপুরে শেরপুর সদর উপজেলার কুসুমহাটি কৃষ্ণপুর গ্রামে মুষলধারে বৃষ্টির মধ্যে বজ্রপাতে জ্যোছনা মিয়া (৫৫) নামে একজন নিহত হয়েছেন।
জানা গেছে, দুপুর ১২টার দিকে মাঠে কাজ করার সময় বজ্রপাতে আহত হন ওই গ্রামের ইজ্জত আলীর ছেলে জ্যোছনা মিয়া। তাকে দ্রুত শেরপুর জেলা সদর হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
একই সময়ে শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার কালিনগর গ্রামে মাঠে কাজ করার সময় বজ্রপাতে মিয়া হোসেন (৪৫) নামে একজন কৃষক নিহত হন। তিনি ওই গ্রামের হামিদ আলীর ছেলে।
পীরগাছা (রংপুর)
দুপুরে রংপুরের পীরগাছা উপজেলার কল্যানী ইউনিয়নের বিহারী খড়খড়ির ঘাট গ্রামে বজ্রপাতে দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
নিহত দুই শিশুর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ওই গ্রামের বাদল চন্দ্রের ছেলে বিজয় (৮) ও পরিতোষ চন্দ্রের ছেলে দীলিপ (১২) পার্শ্ববর্তী বিহারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।
স্কুল বন্ধ থাকায় ওই দুই শিশু বাড়ির আঙ্গিনায় খেলা করছিল। এ সময় বজ্রপাত হলে তারা ঘটনাস্থলেই মারা যায়।
কেন্দুয়া (নেত্রকোনা)
নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলায় শুক্রবার সকালে বিলে মাছ ধরতে গিয়ে বজ্রপাতে আলম মিয়া (৩০) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।
নিহত আলম উপজেলার মোজাফরপুর ইউনিয়নের ছয়দুন গ্রামের আবদুল বারেকের ছেলে।
জানা গেছে, আলম মিয়া পাশ্ববর্তী চিরাং ইউনিয়নের বাট্রা মধ্যপাড়া গ্রামের করিম মিয়ার মেয়েকে বিয়ে করে দীর্ঘদিন ধরে শ্বশুর বাড়িতে বসবাস করছিলেন।
শুক্রবার সকালে বৃষ্টির মধ্যে বাড়ির পেছনে কালিয়ান বিলে মাছ ধরতে গেলে বজ্রপাতে আলম আহত হন। পরে গুরুতর অবস্থায় তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করে।
কেন্দুয়া থানার ওসি অভিরঞ্জন দেব বজ্রপাতে আলমের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গাইবান্ধা
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার তালুককানুপুর ইউনিয়নের নুনদহ সমসপাড়া গ্রামে বজ্রপাতে শরিফুল ইসলাম (৩০) নামের এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন।
জানা গেছে, শুক্রবার বেলা দেড়টার দিকে বৃষ্টির মধ্যে মাঠে কাজ করার সময় ওই বজ্রপাতের ঘটনা ঘটে। এ সময় ওই এলাকার আবদুস সামাদের ছেলে শরিফুল ইসলাম ঘটনাস্থলেই মারা যান।
তালুককানুপুন ইউপি চেয়ারম্যান আতিকুর রহমান আতিক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
লক্ষ্মীপুর
লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলায় ব্রজপাতে ভাগিনা মো. সজিব হোসেন (২০) নিহত ও মামা ইসমাইল হোসেন আহত হয়েছেন। শুক্রবার উপজেলার চররুহিতা ইউনিয়নের চর মণ্ডল গ্রামে এ বজ্রপাতের ঘটনা ঘটে।
নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, বেলা সাড়ে ১১টার দিকে চর মণ্ডল গ্রামে বজ্রপাত হলে মাঠে কাজ করার সময় মামা-ভাগিনা আহত হন। বেলা পৌনে ১২টার দিকে হাসপাতালে নেয়ার পথে চররুহিতা এলাকার আবুল হাসেমের ছেলে সজিবের মৃত্যু হয়।
আহত ইসমাইল হোসেনকে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। তিনি চরমণ্ডল গ্রামের আবুল কালামের ছেলে।
লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আনোয়ার হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
চকরিয়া (কক্সবাজার)
শুক্রবার দুপুর আড়াইটার দিকে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার বরইতলী ইউনিয়নের ভাইগ্যার ঘোনা এলাকায় বজ্রপাতে আবু ছৈয়দ (৫৫) নামের এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে।
তিনি কুতুবদিয়া উপজেলার উত্তর ধুরুং ইউনিয়নের মৃত ছিদ্দিক আহমদের ছেলে। ঘূর্ণিঝড় 'রোয়ানু’র পর তিনি চকরিয়া উপজেলার বরইতলী ইউনিয়নের হারবাং সীমান্ত এলাকায় পাহাড়ী এলাকায় বসবাস করতেন।
হবিগঞ্জ প্রতিনিধি
শুক্রবার ভোরে হবিগঞ্জ বানিয়াচং উপজেলার সুজাতপুর বাজার এলাকার চামাড়পুর এলাকায় খোয়াই নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে বজ্রপাতে মোজাক্কির (১৬) নামে এক কিশোর নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছে আরও তিনজন।
মোজাক্কির উপজেলার শতমুখা গ্রামের আবুয়াল হোসেনের ছেলে। আহতরা হলেন- একই গ্রামের বাহাউদ্দিন, জুয়েল মিয়া, হারুনুর রশিদ।
স্থানীয়রা জানান, উপজেলার সুজাতপুর ইউনিয়নের শতমুখা গ্রামের বাহাউদ্দিনের নেতৃত্বে জাল নিয়ে শুক্রবার ভোরে একটি ডিঙ্গি নৌকা নিয়ে খোয়াই নদীতে মাছ ধরতে নামে। এ সময় হাওরে বজ্রপাত হয়।
এতে মোজাক্কির আহত হয়ে নদীতে পড়ে যান। খবর পেয়ে সিলেট থেকে ডুবুরি দল এসে বিকেল ৪টার দিকে নদী থেকে তার লাশ উদ্ধার করে।