ডেস্ক রিপোর্ট::
যখন তখন ওষুধের দাম বৃদ্ধির প্রবণতা রোধে উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে সরকার। এখন থেকে প্রতি বছর ওষুধের দাম হালনাগাদ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। কোন ওষুধের দাম কত-সেটি বাংলাদেশ ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে এই দাম উল্লেখ করা হবে।
সোমবার মন্ত্রিসভায় নীতিগত অনুমোদন দেয়া জাতীয়্ ওষুধ নীতি, ২০১৬ এর খসড়ায় এ কথা বলা আছে। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম এই সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান।
প্রায়ই কোনো ওষুধের চাহিদা বাড়লেই দাম বাড়ানোর প্রবণতা আছে। কৃত্রিম সংকট তৈরি করেও মাঝেমধ্যে দাম বাড়ানোর উদাহরণ রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বারবার সরকারকে এই প্রবণতা রোধে ব্যবস্থা নেয়ার তাগিদ দিয়ে আসছিলেন।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, সরকারের নির্ধারিত মূল্য তালিকার বেশি দাম নেয়ার সুযোগ থাকবে না। যদি কোনো প্রতিষ্ঠান নির্ধারিত দামের বেশি রাখারে চেষ্টা করে, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তবে সরকারি নীতিমালার বাইরে গিয়ে কোনো প্রতিষ্ঠান ওষুধের দাম বাড়ালে কী শাস্তি দেয়া হবে-তা নির্ধারণ হয়নি এখন। মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, অনুমোদন করা নীতিমালার আওতায় সরকার একটি আইন করবে এবং সেখানে শাস্তির কথা লিখা থাকবে।
সচিব জানান, জাতীয় ওষুধ নীতিমালার খসড়গায় ভেজাল, নকল ও নিম্ন মানের ওষুধ বিতরণ বন্ধে নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে। এই নীতিমালা কার্যকর হলে সুলভ মুল্যে নিরাপদ ওষুধ নিশ্চিত করা সহজ হবে বলে আশা করছে সরকার।
সরকাররের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওষুধ প্রযুক্তি বিভাগের অধ্যাপক আ ব ম ফারুক। ঢাকাটাইমসকে তিনি বলেন, ‘এটা অবশ্যই অনেক ভালো একটা উদ্যোগ। এটি কার্যকর হলে মানুষ সুফল পাবে।’ এই উদ্যোগ যেন আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় না পড়ে দ্রুত কার্যকর হয়, সেদিকে নজর রাখার তাগিদ দেন এই বিশেষজ্ঞ।
অন্যান্য সিদ্ধান্ত
মন্ত্রিসভার বৈঠকে দক্ষতা উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে অতিরিক্ত অর্থায়ন নিশ্চিত করতে ‘জাতীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন তহবিল গঠন করা হয়। তহবিলটি অর্থ বিভাগের অধীনে পরিচালিত হবে।
এছাড়া দক্ষতা উন্নয়ন সংক্রান্ত সার্বিক কার্ক্রম সমন্বয়ের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীনে ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট অথোরিটি নামে একটি আইনি কাঠামো প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।
বৈঠকে কস্ট ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্টস আইন, ২০১৬ এর খসড়াতেও নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়। এটি মার্শাল ল’ আমলের অধ্যাদেশের মাধ্যমে পরিচালিত হয়ে আসছে। এটিকে এখন বাংলা আইন আকারে করা হয়েছে।
নীতিমালায় শাস্তির পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে। কেউ প্রতারণার উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠানের নাম ব্যবহার করলে আগে যেখানে অর্থদণ্ড এক হাজার টাকা ছিল সেখানে ৫০ হাজার টাকা করা হয়েছে। আর পাঁচ হাজার টাকার শাস্তি বাড়িয়ে একলাখ টাকা করা হয়েছে। তবে ছয় মাসের কারাদণ্ড বহাল আছে।
এ ছাড়া আর নজরুল ইনস্টি্টিউট আইন ২০১৬ এর খসড়ায় নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। ১৯৮৪ সালের আইন দিয়ে এটি পরিচালিত হতো। এটিকে আরও সুবিন্যস্ত করে আইনটিকে বাংলায় করা হয়েছে।
জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ আইন ২০১৬ এরও খসড়া নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। ১৯৭৪ সালে প্রথম এ সংক্রান্ত আইনটি করা হয়। এ পর্যন্ত পাঁচ বার আইনটি সংশোধন হয়েছে। নতুন এ আইনটিতে উল্লেখযোগ্য কোনো পরিবর্তন নেই। তবে এটিকেও বাংলায় করা হয়েছে।