বিশেষ প্রতিবেদক, উখিয়া নিউজ ডটকম::
সন্ত্রাসী ও বখাটেদের আশ্রয়স্থল ছিল উখিয়া উপজেলা সরকারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি।হাসপাতাল ঘিরে কয়েকটি দালাল সিন্ডিকেটের পাশাপাশি প্রবেশ মুখে বখাটে ও সন্ত্রাসীদের আড্ডা থাকতো সবসময়।বিশেষ করে হাসপাতালের সামনের দোকানগুলোতে বখাটেরা আড্ডা দিতো বেশী।বখাটে ও সন্ত্রাসীদের টার্গেটে থাকতো উখিয়া সরকারী হাসপাতালে আসা মুমুর্ষ রোগি ও যুবতী মেয়েরা।কোন সুন্দরী ও যুবতী মেয়ে দেখলেই বখাটে ও সন্ত্রাসীরা তাদের পিছু নিতো।তাছাড়া মুমুর্ষ রোগীকে ভর্তি করিয়ে দেওয়ার নামে তারা আদায় করতো মোটা অংকের টাকা।হাসপাতালের অফিস সহকারী সিন্ডিকেটের সাথে বখাটে ও সন্ত্রাসীদের দহরম মহরম সম্পর্ক থাকার কথা স্থানীয়দের মুখে মুখে।এসব বখাটে ও সন্ত্রাসীদের পৃষ্টপোষকতার মাধ্যমে সিন্ডিকেট সরকারী হাসপাতাল ভিক্তিক ব্যবসা করে সাধারন রোগীদের জিম্মি করে হাতিয়ে নিচ্ছে হাজার হাজার টাকা।দীর্ঘদিন ধরে উখিয়া হাসপাতালে থাকার সুবাধে তারা একাধিক সিন্ডিকেট তৈরী করে ডাক্তার,নার্স,ওয়ার্ডবয় সহ কর্মকর্তা কর্মচারীসহ সবাইকে একপ্রকার নিয়ন্ত্রন করছে।তাদের কথার বাইরে গিয়ে এ হাসপাতালে কোন ডাক্তার স্থায়ী হওয়াতো দুরের কথা সরকারের দেওয়া আবাসিক বাড়ীতেই থাকতে পারেনা।এমনটাই জানা গেছে স্থানীয় জনগনের সাথে কথা বলে।
সরজমিন পরিদর্শনকালে হাসপাতাল কতৃপক্ষ ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে,গত মঙ্গলবার ডায়রিয়া আত্রুান্ত হয়ে উপজেলার জালিয়াপালং ইউনিয়নের সোনারপাড়া গ্রামের কলিম উল্লাহ স্ত্রী ছেনুয়ারা বেগম উখিয়া হাসপাতালে ভর্তি হয়।বাড়ীতে জরুরী কাজ থাকায় কলিম উল্লাহ তার যুবতী মেয়েকে অসুস্থ স্ত্রী ছেনুয়ারার পাশে রেখে নিজ বাড়ীতে ফিরে যায়।এদিকে মায়ের সাথে থাকা যুবতীর উপর লোলুপ দৃষ্টি পড়ে হাসপাতাল সিন্ডিকেটের পালিত বখাটে ও সন্ত্রসীদের।তারা সুযোগের অপেক্ষায় উৎপেতে থাকে হাসপাতালের আশেপাশে।রাত বাড়ার সাথে সাথে বাড়তে থাকে বখাটেদের যুবতী মেয়েটিকে কাছে পাওয়ার যন্ত্রনা।অবশেষে রাত ১২ টার দিকে অসুস্থ মায়ের পাশ থেকে বখাটেরা তুলে নিয়ে যায় যুবতীকে।হাসপাতালের পাশ^বর্তী পাহাড়ে নিয়ে একে একে ধর্ষন করে।স্থানীয়রা মুমুর্ষ অবস্থায় উদ্ধার করে যুবতীকে।প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে ,মেয়েটিকে তুলে নেওয়ার সময় হাসপাতালে অফিস সহকারী হাসপাতাল সিন্ডিকেটের বেশ কয়েকজন হাসপাতালেই ছিল।বখাটেরা যখন হাসপাতালের ২য় তলা থেকে যুবতীকে জোর করে তুলে নিয়ে যাচ্ছিল তখন হাসপাতালের নাইটগার্ড রাশেদ,মোজাম্মেল,মোহাম্মদ আলী সহ অন্যন্যরা বখাটে সন্ত্রাসীদের বাধা দেওয়ার কথা বলা হলেও তার স্বপক্ষে কোন প্রমান পাওয়া যায়নি।উপরন্ত যুবতী ধর্ষনের পর ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে হাসপাতালে অফিস সরকারীর কক্ষে রাতেই একাধিক মিটিং উক্ত সিন্ডিকেট। রাতেই সবকিছু ম্যানেজ করে ধর্ষিতা মেয়েটিকে তড়িগড়ি তরে পাটিয়ে দেওয়া হয় বাড়ীতে।পরদিন সকালে ঘটনা জানাজানি হলে সিন্ডিকেটের সাজানো প্ল্যন উলটপালট হয়ে যায়।সর্বত্র শুরু হয় তোড়পাড়।সাংবাদিক,পুলিশের ভীড় জমে হাসপাতালে। পরে পরদিন বুধবার রাতে ধর্ষিতার মা ছেনুয়ারা বেগম বাদী হয়ে গিয়াস উদ্দিনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত নাম ৩ জনের বিরুদ্ধে উখিয়া থানায় ধর্ষন মামলা দায়ের করে।মামলা করার পর থেকে বিভিন্ন ভাবে ধর্ষিতার পরিবারকে হুমকি ধমকি দেওয়া হচ্ছে মামলা তুলে নিতে।অপরিচিত মোবাইল নাম্বার ব্যবহার করে এ হুমকি দেওযা হচ্ছে বলে জানালেন ধর্ষিতার পিতা কলিম উল্লাহ।হাসপাতালে গনধর্ষনের ঘটনার পর থেকে এলাকায় বিষয়টি টক অব দ্যা টাউনে পরিনত হয়েছে।উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপিত কবি আদিল উদ্দিন চৌধুরী বিষয়টি ভয়ংকর উল্লেখ করে বলেন,হাসপাতাল সংশ্লিষ্টদের কোন সহযোগিতা না থাকলে এরকম ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটনা কঠিন।তিনি এ ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমুলক শান্তি দাবী করেন। উখিয়া থানার ওসি মোঃ আবুল খায়ের বলেন,ধর্ষনের মামলাটি সর্বোচ্চ গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে।গত বৃহস্পতিবার রাতে বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। প্রকৃত আসামীদের গ্রেফতারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।