হুমায়ুন কবির জুশান, উখিয়া নিউজ ডটকম
প্রকাশিত: ১৭/০৭/২০২৫ ৭:০২ পিএম

কক্সবাজারের উখিয়ায় ইউনিয়ন পরিষদের এক মেম্বার গ্রেফতারের ঘটনাকে ঘিরে শুরু হয়েছে নতুন আলোচনা। বিশেষ করে পুলিশের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে তথ্য না দেওয়ার ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছে প্রশাসনিক স্বচ্ছতা ও গণমাধ্যমের তথ্য পাওয়ার অধিকারের ওপর।
বুধবার (১৬ জুলাই) রাতে উখিয়া থানা পুলিশের একটি দল রত্নাপালং ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আব্দুল গফুরকে গ্রেফতার করে। পরদিন বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) পুলিশ তাকে কক্সবাজার আদালতে সোপর্দ করে।
তবে ঘটনার প্রকৃতি, মামলার বিস্তারিত ও গ্রেফতারের কারণ জানতে চাইলেও উখিয়া থানার কোনো কর্মকর্তা স্পষ্ট তথ্য দেননি।
ঘটনার অনুসন্ধানে উখিয়া থানায় গেলে ডিউটি অফিসার জসিম সাংবাদিকদের জানান, এ বিষয়ে তথ্য মিলে দ্বিতীয় তলার মুন্সির কাছে। পরে মুন্সির কক্ষে গেলে তিনি জানান, “এ বিষয়ে ওসি (তদন্ত) নাসির উদ্দিনই বলতে পারবেন।”
কিন্তু ওসি (তদন্ত) নাসির উদ্দিনের কাছে গেলে তিনিও তথ্য দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। তখন সাংবাদিকরা জানতে চান, ওসি (অফিসার ইন চার্জ) মোহাম্মদ আরিফ হোসাইন কোথায় আছেন? জবাবে ওসি তদন্ত বলেন, “ওসি এখন থানায় নেই, তিনি গুরুত্বপূর্ণ এক মিটিংয়ে আছেন।”
এই ঘটনায় সাংবাদিকদের মধ্যে স্পষ্ট অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। তারা বলছেন, একজন জনপ্রতিনিধি গ্রেফতার হওয়া অবশ্যই একটি গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ, বিশেষ করে জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট ঘটনা। এ বিষয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে যথাযথ তথ্য না দেওয়াটা কেবল পেশাগত দায়িত্ব এড়ানো নয়, বরং এটা গণমাধ্যমের অধিকার খর্ব করার নামান্তর।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন স্থানীয় সাংবাদিক বলেন, “আমরা শুধু জানতে চেয়েছিলাম, মেম্বার আব্দুল গফুরকে কী কারণে গ্রেফতার করা হয়েছে, তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা ছিল কি না—কিন্তু থানা পুলিশ তথ্য না দিয়ে ঘুরাতে থাকে। এটা মোটেও গ্রহণযোগ্য নয়।”
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, থানার মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ সরকারি দপ্তরে সাংবাদিকরা তথ্য পাবে না—এমনটা ভাবাও যায় না। তথ্যপ্রযুক্তি ও মুক্ত তথ্য প্রবাহের এই যুগে পুলিশের এমন আচরণ হতাশাজনক এবং পেশাগত বাধা সৃষ্টির শামিল।
এ বিষয়ে কক্সবাজারের একজন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক বলেন, “যেখানে পুলিশ চাইলে ৩০ সেকেন্ডে একটি গ্রেফতার সংক্রান্ত তথ্য দিতে পারে, সেখানে এমন লুকোচুরির অর্থ দাঁড়ায়—তারা হয়তো নিজেই জানে না কেন ধরল, বা কিছু লুকাতে চায়।”
এদিকে স্থানীয় রাজনৈতিক মহলে ইউপি সদস্য আব্দুল গফুরের গ্রেফতারকে ঘিরে নানা গুঞ্জন চলছে। কেউ বলছেন, এটি প্রশাসনিক ধরপাকড়ের অংশ, কেউ বলছেন স্থানীয় রাজনৈতিক বিরোধ এর পেছনে থাকতে পারে।
তবে প্রকৃত ঘটনা জানতে হলে পুলিশের পক্ষ থেকে স্বচ্ছ তথ্য প্রকাশই একমাত্র পথ—এমনটাই মনে করছেন উখিয়ার সচেতন নাগরিক ও সাংবাদিকরা।
জনগণের জানার অধিকার এবং গণমাধ্যমের তথ্য প্রাপ্তি নিশ্চিত না হলে জবাবদিহিতার যে কথা বলা হয়, তা প্রশ্নবিদ্ধ হয়—এমনটিই বলছেন অনুসন্ধানী রিপোর্টাররা। এখন দেখার বিষয়, থানা পুলিশের এই আচরণ নিয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ কী অবস্থান নেন।

পাঠকের মতামত

কুতুপালং পশ্চিমপাড়ায় পরিচয় যাচাইহীন রোহিঙ্গা ভাড়া, বাড়ছে শঙ্কা

মিয়ানমারের রাখাইনে আরাকান আর্মি ও সেনা জান্তার সংঘর্ষে প্রাণ বাঁচাতে রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ অব্যাহত রয়েছে। সীমান্ত ...