সাঈদ মুহাম্মদ আনোয়ার, উখিয়া নিউজ ডটকম।
প্রকাশিত: ০৪/০৯/২০২৪ ৭:৫৬ পিএম

উখিয়ার রাজাপালং ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সালাউদ্দিন। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে অবৈধ মাদক ও চোরাচালানে হয়ে উঠেন আঙুল ফুলে কলাগাছ। পূর্বে আয়ের উৎস হিসেবে ছোট একটি কাপড়ের দোকান থাকলেও তার আয়ের মূল উৎস ইয়াবা। মাদক সম্রাট হিসেবে খ্যাত এই সালাউদ্দিনের বাবা পেশায় একজন সাধারণ ড্রাইভার। এলাকায় জাফর ড্রাইভার নামে পরিচিতি। কিন্তু কয়েক বছরের ব্যবধানে আলাউদ্দিনের চেরাগ পাওয়ার মতো রাতারাতি সালাউদ্দিন রীতিমতো বিপুল অর্থ-সম্পত্তির মালিক বনে যায়।

বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের পর রোহিঙ্গাদের ব্যবহারের মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যক্তির সখ্যতায় সে মাদক ব্যবসায়ের সাথে জড়িত হয়ে পড়ে। সমাজসেবার আড়ালে সে মাদক ব্যবসার ছোঁয়ায় শত কোটি টাকার মালিক হয়ে উঠে।

মাদক এবং চোরাচালানের মাধ্যমে গড়ে তুলে বিশাল সাম্রাজ্য। সে শেখ পাড়ায় দুই কোটি টাকায় জমি ক্রয় করে তিন কোটি টাকা ব্যয় করে নির্মাণ করেছে বিলাশ বহুল ডুপ্লেক্স বাড়ি, কক্সবাজার শহরের বৌদ্ধ মন্দির এলাকায় ফ্লাট ক্রয়, ঢাকায় ছেলেকে পড়ানোর জন্য মাইলস্টোন কলেজের পাশে ফ্লাট ক্রয়, উখিয়া উপজেলা গেইটের তার শ্বশুড় বাড়ির জায়গার উপর তিনতলা বিল্ডিং নির্মাণ, দুই কোটি টাকা দিয়ে জমি ক্রয় করে উখিয়া স্টেশনে মার্কেট এবং এক কোটি টাকায় জাদিমুরা এলাকায় মেইন রোডের পার্শ্ববর্তী জায়গা ক্রয় করেছে।

এছাড়াও তার রয়েছে একটি প্রিমিও ২০২২ মডেল গাড়ি, নোহা স্কয়ার ২০২৩ মডেল, ০২টি নোহা, ০৩টি মোটরসাইকেল, এবং নিজের নামে ও অন্যজনের নামে অসংখ্য জমি রয়েছে। তাছাড়াও ঢাকা ও কক্সবাজার শহরসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে নামে-বেনামে অঢেল সম্পত্তি আছে বলে জানা যায়।

সেই সাথে নিজের তত্ত্বাবধানে ইয়াবার সিন্ডিকেট গড়ে তোলে। সে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ইয়াবা সরবরাহকারী এবং সিন্ডিকেটের একজন সক্রিয় সদস্য ছিল। কথিত রয়েছে, ইয়াবা সম্রাট আব্দুর রহমান ওরপে বদির সব অবৈধ উপার্জনের ক্যাশিয়ার হিসেবে কাজ করতেন এই সালাউদ্দিন মেম্বার এবং সে বদির ক্যাশিয়ার হিসেবেও ব্যাপক পরিচিত। বদির ছত্র-ছায়ায় থেকে সে মাদকসহ বিভিন্ন অপকর্মের সাথে জড়িত ছিল। সালাউদ্দিনের লাইসেন্সে বদির দেয়া প্রায় ১০০ কোটির উপরে কাজ রয়েছে বলেও জানা যায়।

ওমরাহ যাত্রীর ছদ্মবেশে দেশ থেকে পালানোর চেষ্টাকালে ইহরাম পরিহিত অবস্থায় বিমান রানওয়েতে থাকা অবস্থায় গ্রেফতারকৃত সালাউদ্দিন মেম্বার এর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপরাধে ০৫টি মামলা রয়েছে বলে জানা যায়।

গত ১৮ আগস্ট জনৈক মোঃ আব্দুল্লাহ বাদী হয়ে আব্দুর রহমান বদিকে ১নং আসামী করে ৩০ জন এজাহারনামীয় এবং ৫০/৬০ জন অজ্ঞাতনামা আসামী বিরুদ্ধে কক্সবাজারের টেকনাফ থানায় একটি হত্যা চেষ্টা মামলা দায়ের করেন। মামলার পর থেকে বদি ও অন্যান্য আসামীরা আত্মগোপনে চলে যান। ২০ আগস্ট ২০২৪ তারিখে চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ থানাধীন জিইসি মোড়ের একটি আবাসিক এলাকা থেকে গ্রেপ্তার হন আব্দুর রহমান বদি। ঘটনার পর থেকে আত্মগোপনে চলে যায় সালাউদ্দিন মেম্বার।

র‌্যাব জানায়, ইয়াবা সম্রাট বদীর মাদক ব্যবসার ক্যাশিয়ার ইয়াবা গডফাদার সালাউদ্দিন মেম্বার জেদ্দাগামী একটি ফ্লাইটে করে ওমরাহ যাত্রীর ছদ্মবেশে দেশ থেকে পলায়নের উদ্দেশ্যে সিলেট বিমানবন্দরে অবস্থান করছে তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে করে বিমান রানওয়েতে থাকা অবস্থায় বিমান বাংলাদেশের জেদ্দাগামী একটি ফ্লাইট থেকে ইহরাম পরিহিত অবস্থায় সালাউদ্দিন মেম্বরকে (৪০) গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারের পর সালাউদ্দিনকে বিমানবন্দর থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয় এবং মঙ্গলবার দুপুরে তাকে আদালতে পাঠানো হয়। বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

পাঠকের মতামত

দৈনিক জনকণ্ঠের রিপোর্ট রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকায় প্রাইভেট হাসপাতালগুলোর সরকারি লাইসেন্স নেই, তদন্ত টিমের পরিদর্শন

রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকা উখিয়ায় ১৫টি ক্লিনিক হাসপাতাল ও ডায়াগনষ্টিক সেন্টার চলছে অনুমতি বিহীন। সরকারিভাবে কোন ...

উখিয়ায় র‌্যাব পরিচয়ে অপহরণ, ইউনিফর্ম, অস্ত্র-গুলি ও হাতকড়াসহ আটক ১

কক্সবাজারের উখিয়ায় র‌্যাব পরিচয়ে রোহিঙ্গা যুবককে অপহরণ, মুক্তিপণ আদায়ের চেষ্টা এবং প্রতারণার অভিযোগে একটি সংঘবদ্ধ ...