নিজস্ব প্রতিবেদক
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রনালয়ের তালিকাভুক্ত শীর্ষ ইয়াবা ব্যবসায়ী এবং মানব পাচারকারী এবং সাংবাদিক হামলা মামলার প্রধান আসামী নুরুল হক ওরফে ভুট্টো আবারো প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে বলে লোকেমুখে শুনা যাচ্ছে। সম্প্রতি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানের সময় দীর্ঘদিন আত্মগোপনে ছিল এই মাদক চোরাকারবারী। এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে জড়িত রয়েছে এমন অভিযোগও রয়েছে এই ভুট্টোর বিরুদ্ধে। তবে শীর্ষ এই ইয়াবা ব্যবসায়ীকে ধরতে বারবার ব্যার্থ হচ্ছে পুলিশ।
টেকনাফের ইয়াবা সম্রাট ভুট্টোর সহযোগী হিসেবে রয়েছে তার আপনভাই সহ পরিবারের একাধিক সদস্য। ভুট্টোর বিশ্বস্থ সহযোগী হিসেবে ইয়াবা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পাচার করে থাকেন ফরিদুল আলম ও জিয়াউর রহমান। এই দুইজনের বাড়ি টেকনাফে। সম্প্রতি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অনুসন্ধানে পাওয়া গেছে ভুট্টো এবং তার সহযোগীদের কোটি টাকার হিসেব।
নুরুল হক ওরফে ভুট্টো, ফরিদুল আলম, ও জিয়াউর রহমানের ব্যাংক হিসাব গুলোয় বিপুল অঙ্কের অর্থের সন্ধান মেলে। গত বছর ২৯ আগস্ট মানি লন্ডারিং আইনে নতুন করে টেকনাফ থানায় তিনটি পৃথক মামলা দায়ের করে সিআইডি (মামলা নম্বর ৭৪, ৭৫, ৭৬)। এর মধ্যে শুধু ৭৪ নম্বর মামলায়ই ১৭ জনকে আসামি করা হয়। এ মামলায় নুরুল হক ভুট্টো, তার ভাই নূর মোহাম্মদ ও তাদের বাবা এজাহার মিয়া প্রধান সন্দেহভাজন।
বাকি সহযোগীরা হলেন-ভুট্টোর চার ভাতিজা যথাক্রমে, আফসার, বেলাল, হেলাল, হুসেন, জালাল, চাচাতো ভাই হামিদ ও বন্ধু আরিফ।
ভুট্টোসহ তার সিন্ডিকেটের বিভিন্ন সদস্যের নামে তিনটি ব্যাংকের (আল-আরাফাহ্, অগ্রণী ও জনতা) শাখায় বিপুল অঙ্কের নগদ অর্থ জমা আছে। ভুট্টোর অ্যাকাউন্টে ৯৭ লাখ, তার ভাই নূর মোহাম্মদের অ্যাকাউন্টে তিন কোটি এবং তাদের বাবা এজাহার মিয়ার অ্যাকাউন্টে ৭০ লাখ টাকা পাওয়া যায়।
এ ছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বিকাশের মাধ্যমে টেকনাফে অবস্থানরত ইয়াবা গডফাদার ভুট্টোর কাছে কয়েক কোটি টাকা আসে।
এদিকে ইয়াবা ব্যবসায়ী এবং তার সহযোগীদের ধরতে সারাদেশে কড়া অভিযান পরিচালনা করা হলেও, কক্সবাজারের চিত্র একেবারে ভিন্ন। কক্সবাজারের টেকনাফে দুই জন র্যাবের সাথে বন্ধুক যুদ্ধে নিহত হওয়ার পর একেবারে অদৃশ্য কারণবশত বন্ধ হয়ে যায় এই অভিযান। টেকনাফ পৌর কাউন্সিলর একরামকে র্যাব পরিকল্পিত হত্যা করেছে এমন অভিযোগ উঠায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের অভিযান বন্ধ করে বলে অভিযোগ জেলার সচেতন মহলের।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আফরাজুল হক টুটুল অভিযান বন্ধ হয়নি মন্তব্য করে বলেন, মাদকের সাথে সংশ্লীষ্ট সকলের বাড়ি বাড়ি গিয়ে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। এখনও অভিযান চলছে বলে জানান তিনি।
মঙ্গলবার কক্সবাজার বিয়াম ফাউন্ডেশন মিলনায়তনে মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার এবং অবৈধ পাচার বিরোধী আন্তর্জাতিক দিবসের আলোচনা সভায় কক্সবাজার পুলিশ সুপার ড. একেএম ইকবাল হোসেন বলেন, মাদকের সাথে যারা বসবাস করছে, তারা দেশ এবং জাতির শত্রু। কক্সবাজারে যারা ইয়াবা ব্যবসার সাথে জড়িত তাদের কোন প্রকার ছাড় দেয়া হবে না বলে জানান তিনি।