জসিম মাহমুদ, টেকনাফ ::
মাদকবিরোধী অভিযানের মধ্যেও নাফ নদী ও সাগরপথে বাংলাদেশে ঢুকছে ইয়াবার চালান। মাদকবিরোধী অভিযানে আত্মগোপনে যাওয়া টেকনাফের শীর্ষ ইয়াবা ব্যবসায়ীরাও ফিরতে শুরু করেছেন। ফিরেই আবার ইয়াবা ব্যবসা নিয়ন্ত্রণে নিতে শুরু করেছেন তারা।প্রশাসনের এক শ্রেণির অসাদু ব্যক্তিকে ম্যানেজ করেই প্রকাশ্যে এসেছে ইয়াবা ব্যবসায়ীরা।
মাদকবিরোধী অভিযানের মধ্যে চলতি মাসে সীমান্তে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বিজিবির সদস্যরা দেড় লাখের বেশি ইয়াবা জব্দ করে।সূত্র জানায়, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মে মাস এ পাঁচ মাসে ১ কোটি ৭২ লাখের বেশি ইয়াবা জব্দ করে বিজিবি, র্যাব, পুলিশ ও কোস্টগার্ড সদস্যরা।
এ প্রসঙ্গে টেকনাফ-২ বিজিবির উপঅধিনায়ক মেজর শরীফুল ইসলাম জোমাদ্দার বলেন, সীমান্তে বিজিবির দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় কঠোরভাবে জওয়ানরা টহল দিচ্ছেন। এতে করে ইয়াবার চালানও জব্দ করা সম্ভব হয়েছে। এর মধ্যে চলতি মাসে দুইজন পাচারকারীসহ ১ লাখ ৫১ হাজার ৬৫ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে। যা অন্য মাসের তুলনায় অনেকাংশে কম।
গত ২৫ মে সাবরাং ইউপির সদস্য আক্তার কামাল ও ২৭ মে র্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ টেকনাফ পৌরসভার কাউন্সিলর ও সাবেক উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মো. একরামুল হকসহ টেকনাফের চারজন ইয়াবা ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন।
জানা যায়, টেকনাফকে ইয়াবার ট্রানজিট বলা হলেও এসব ইয়াবার চালান সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ছে। রাজধানীতে প্রতিটি ইয়াবার বেশি দামে বিক্রি হলেও টেকনাফে তা কম দামেই মিলছে। মাদক ব্যবসায়ীরা টেকনাফে এসে এসব মাদক নিয়ে যাচ্ছেন। পান-সুপারি-লবণবোঝাই ট্রাক, যাত্রীবাহী বাস ও ব্যক্তিগত গাড়িতে করে ইয়াবা পাচার হচ্ছে।সীমান্তের নিয়োজিত আইন প্রয়োগকারী সংস্থার হাতে প্রতিদিন ছোট-বড় ইয়াবার চালান ধরা পড়ছে। তবে মূল হোতারা ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকায় মাদক পাচার বন্ধ হচ্ছে না।
বাংলাদেশে চোরাই পথে পাচারের জন্য মিয়ানমারের সীমান্তবর্তী এলাকায় স্থাপিত কারখানায় ইয়াবা তৈরি হচ্ছে। মিয়ানমারের কয়েকজন ডিলার ওই সব কারখানায় তৈরি করা প্রতিদিন গড়ে ৩০ লাখের বেশি ইয়াবা পৌঁছে দিচ্ছে টেকনাফের ডিলারের কাছে।
সম্প্রতি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউনাইটেড ওয়া স্টে-ইট আর্মির অধিনে বর্তমানে ১৩টি, কাসির ডিপ্ন্যাস আর্মির অধিনে ১০টি, পানসে ক্যা-ম্যা ইয়ন মলিয়ান গ্রুপের অধিনে ২টি, পুলিশ এক্স হলি ট্রেক গ্রুপের অধিনে ১টি, ম্যানটাং মিলেটিয়ার অধিনে ৩টি, ইয়ানজু গ্রুপের অধিনে ১টি, এসএনপিএলর অধিনে ৬টি, এমএনডিএ’র অধিনে ১টি ইয়াবা তৈরির কারখানা পরিচালিত হচ্ছে।
টেকনাফ থানার ওসি রনজিত কুমার বড়ুয়া বলেন, এখনো ইয়াবার চালান পাচার হয়ে আসছে। তবে স্থলপথে ইয়াবাসহ পাচারকারীকে আটক করছে পুলিশ। নাফ নদী ও সাগরে অভিযান চালানোর নৌযান পুলিশের নেই। তবে আগের চেয়ে ইয়াবা পাচার অনেক কমে গেছে।