প্রকাশিত: ১৯/১১/২০১৬ ৭:২৭ এএম , আপডেট: ১৯/১১/২০১৬ ৭:২৮ এএম

পশ্চিম মিয়ানমারে সামরিক বাহিনীর দমন-পীড়নের শিকার হয়ে অসংখ্য রোহিঙ্গা মুসলিম বাংলাদেশে পালিয়ে আসার চেষ্টা করছে। বাংলাদেশ সীমান্ত থেকে পুশব্যাক করা হচ্ছে তাদের। বাংলাদেশের স্থানীয় অধিবাসী ও সেনা কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে এ খবর দিয়েছে আল জাজিরা। বাংলাদেশ ও মিয়ানমার  সীমান্তবর্তী নাফ নদী পার করার চেষ্টা করতে গিয়ে কয়েকজন রোহিঙ্গা গুলিবিদ্ধ হয়। অপরদিকে, নৌকায় করে নদী পার  হয়ে আসা কয়েকজনকে ফিরিয়ে দেয় বাংলাদেশি সীমান্তরক্ষীরা। স্থানীয় নিবাসীদের উদ্ধৃত করে বুধবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে এ কথা বলা হয়।
মিয়ানমারে নতুন করে মাথাচাড়া দেয়া এই সহিংসতায় প্রাণহানি হয়েছে ১৩০ জনের। এ তথ্য দেশটির সেনাবাহিনীর তরফেই এসেছে। ২০১২ সালে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সাম্প্রদায়িক সংঘাতে কয়েক শ’ মানুষ নিহত হওয়ার পর এটাই সবথেকে মারাত্মক প্রাণহানির ঘটনা। এ ঘটনায় সেনাবাহিনীর ওপর শান্তিতে নোবেল জয়ী অং সান সু চির ৭ মাসের সরকার সজাগ দৃষ্টির ঘাটতিই উঠে এসেছে। ৮ই অক্টোবর বাংলাদেশ সীমান্তে মিয়ানমারের ৩টি সীমান্ত চৌকিতে হামলায় ৯ পুলিশ সদস্য নিহত হয়। এই ঘটনার জবাবে ওই এলাকাজুড়ে অবস্থান নিয়েছে মিয়ানমারের সেনারা। পুরো জেলা লকডাউন করে রেখেছে যেখানের বেশির ভাগ বাসিন্দা হলো রোহিঙ্গা। ত্রাণকর্মী ও স্বতন্ত্র পর্যবেক্ষকদের সেখানে ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না। গত সাত দিনে সেনাবাহিনী সেখানে অভিযান জোরদার করেছে। অভিযানে তারা ব্যবহার করেছে হেলিকপ্টার। কয়েক ডজন মানুষ তাদের অভিযানে নিহত হয়েছে। ত্রাণকর্মী, ক্যাম্প নিবাসী আর বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের অনুমান অক্টোবরে ওই হামলার ঘটনার পর থেকে কমপক্ষে ৫০০ রোহিঙ্গা মিয়ানমার থেকে পালিয়েছে।
মঙ্গলবার রোহিঙ্গাদের বড় একটি দল সীমান্ত পার করার চেষ্টা করলে বাংলাদেশি সীমান্তরক্ষীরা তাদের পুশব্যাক করে দেয়। কক্সবাজার সেক্টরের কমান্ডিং অফিসার লে. কর্নেল আনওয়ারুল আজিম বলেন, ‘মঙ্গলবার সকালের দিকে ৮৬ জন রোহিঙ্গাকে টেকনাফ বর্ডার পয়েন্ট থেকে পুশব্যাক করে দেয় বিজিবি। এদের মধ্যে ৪০ নারী ও ২৫ শিশু ছিল।’
রয়টার্সের সূত্রমতে, রোহিঙ্গাদের ওই দল মিয়ানমারের গ্রামে ফেরত যাওয়ার সম্ভাবনা কম। হয়তো তারা সাগরেই আটকে আছে।
রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দ বার্তা সংস্থা এএফপিকে মঙ্গলবার নিশ্চিত করেন যে, আনুমানিক ২০০ রোহিঙ্গা মুসলিম বাংলাদেশ সীমান্তে আটকে আছে। জাতিসংঘ রোহিঙ্গাদেরকে বিশ্বের মধ্যে অন্যতম নিপীড়িত গোষ্ঠী বলে আখ্যা দিয়েছে। মিয়ানমারের সংখ্যাগরিষ্ঠ বৌদ্ধ জনসংখ্যা রোহিঙ্গাদেরকে বাংলাদেশ থেকে যাওয়া অবৈধ অভিবাসী বলে আখ্যা দিয়ে থাকে। অথচ মিয়ানমারে তারা কয়েক প্রজন্ম ধরে বাস করে আসছে। দেশটিতে এ গোষ্ঠীটি রীতিমতো বর্ণবাদের মতো সীমাবদ্ধতার মধ্যে বাস করে। তাদের নাগরিকত্বের অধিকারও প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। এদিকে, বাংলাদেশ সরকারও তাদের ভূখণ্ডে বসবাসরত হাজার হাজার রোহিঙ্গাকে নিবন্ধিত করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।

পাঠকের মতামত

প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ সফরে আসছেন নাসার প্রধান নভোচারী

দেশের তরুণ প্রজন্ম, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং গণমাধ্যমের সঙ্গে মতবিনিময়ের জন্য ঢাকায় আসছেন নাসার প্রধান মহাকাশচারী জোসেফ ...

মিয়ানমারে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী শহর থেকে শত শত সেনাসহ জেনারেল আটক

মিয়ানমারের বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী মংডু শহর দখলে নেওয়ার দাবি আগেই করেছে দেশটির সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান ...