উখিয়া নিউজ ডটকম :
মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের পরিচয় ব্যবস্থাপনা এবং ডকুমেন্টেশনের জন্য জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে একত্রে যাচাইকরণের কাজ করছে। এ কাজ শেষ হতে আরো আনুমানিক পাঁচ থেকে ছয় মাস লাগবে।
জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর মঙ্গলবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়।
সংস্থাটি বলছে, এই যাচাইকরণের মাধ্যমে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের পরিচয় ব্যবস্থাপনা, ডকুমেন্টেশন, সুরক্ষা, সহায়তার বিধান, জনসংখ্যা পরিসংখ্যান এবং সমাধানে ব্যবহারের জন্য একটি একত্রিত তথ্যভান্ডার (ডাটাবেজ) তৈরিতে সাহায্য করবে।
চোখের স্ক্যান, আঙুলের ছাপ এবং স্বতন্ত্র পরিচয় নিশ্চিত করার জন্য ছবিসহ বিভিন্ন বায়োমেট্রিক তথ্য ব্যবহার করে ১২ বছরের ঊর্ধ্বে সব শরণার্থীকে পরিচয়পত্র দেওয়া হবে। বাংলাদেশ সরকার ও ইউএনএইচসিআর কর্তৃক যৌথভাবে প্রদত্ত এবং অনেকটা ক্রেডিট কার্ড সমমাপের প্লাস্টিকের এ পরিচয়পত্রে আছে জালিয়াতি-বিরোধী বিভিন্ন উপাদান যা বাংলাদেশে সুরক্ষা এবং সহযোগিতা লাভের জন্য শরণার্থীদের সাহায্য করবে।
ইউএনএইচসিআর এর কক্সবাজার অপারেশনের প্রধান কেভিন জে. অ্যালেন বলেন, মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বৈধ পরিচয় প্রতিষ্ঠার জন্য এটি একটি বড় পদক্ষেপ।
তিনি আরো বলেন, এটি পরিষ্কার জানিয়ে দেয় যে, রোহিঙ্গাদের অস্তিত্ব আছে। তাদের অধিকারগুলো অবশ্যই সম্মানিত হওয়া উচিত এবং সমাধানের ভিত্তিটা রচনা করতে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।
এ কাজে ইউএনএইচসিআর এবং সহযোগী সংস্থার আনুমানিক ১৫০ জন কর্মীকে কাজে লাগানো হবে। পাশাপাশি সরকার ও কমিউনিটি স্বেচ্ছাসেবকরা থাকবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে আগে নিবন্ধনকৃত সব শরণার্থীদেরও এ অনুশীলনের আওতায় আনা হবে।
বাংলাদেশের শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ আবুল কালাম বলেন, সহায়তার পরিকল্পনাগুলো আরো ভালোভাবে গ্রহণ করতে, সেবা কার্যক্রমে ডুপ্লিকেশন এড়াতে এবং সব নিবন্ধিত পরিবারগুলোর প্রতি সহায়তা নিশ্চিত করতে এ কাজ সরকার ও এজেন্সিগুলোকে সাহায্য করবে।
তিনি আরো বলেন, সমাধান খুঁজে বের করতেও এটি অবদান রাখবে।
মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা ব্যক্তি যাদের বাংলাদেশে উদারভাবে স্থান দেওয়া হচ্ছে, তাদের পরিচয় নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হচ্ছে এ যাচাই প্রক্রিয়া।
এ যাচাই প্রক্রিয়াটি শরণার্থীদের পরিচয় যাচাই, তারা যে মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন সেটা প্রতিষ্ঠা করা এবং স্বেচ্ছায় ও নিরাপদের ফিরে যাওয়ার ব্যাপারে তাদের অধিকার চর্চার স্বাধীনতা দেওয়ার ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থী বলতে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে আগত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বুঝানো হয়। ২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাসের হিসেব অনুযায়ী, ওই বছরের ২৫ আগস্টের পর থেকে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর দ্বারা শুরু হওয়া গণহত্যা থেকে পরিত্রাণ পেতে প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। এরপর থেকে এখন পর্যন্ত আরো তিন লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসে।