প্রকাশিত: ২০/০৩/২০১৭ ২:৫১ পিএম

বাংলানিউজ::
জ্ঞাত আয়বর্হিভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় আত্মসমর্পণের পর জামিন পেয়েছেন টেকনাফের আলোচিত সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদি।

সোমবার (২০ মার্চ) সকালে আওয়ামী লীগের সাংসদ বদি চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিশেষ জজ মীর রহুল আমিনের আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। এসময় সাংসদের পক্ষে জামিনের আবেদন জানান তার আইনজীবী।

শুনানি শেষে আদালত আসামির অর্ন্তবর্তীকালীন জামিন মঞ্জুর করেছেন বলে বাংলানিউজকে জানিয়েছেন বিভাগীয় বিশেষ পিপি অ্যাডভোকেট মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী।

জরুরি অবস্থার সময় ২০০৭ সালের ১৭ ডিসেম্বর নগরীর ডবলমুরিং থানায় সাংসদ বদির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক-২ আবুল কালাম আজাদ।

মামলার এজাহারে বদির বিরুদ্ধে ৭৯ লাখ ৩৭ হাজার ৭৯৭ টাকা ১১ পয়সা জ্ঞাত আয় বর্হিভূত সম্পদ এবং ৫৬ লাখ ১১ হাজার ৫০০ টাকার সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগ করা হয়।

মামলার একমাত্র আসামি সাংসদ বদির বিরুদ্ধে দুদক আইনের ২৬ (২) ও ২৭ (১) ও ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) এবং ২০০৭ সালের জরুরি বিধিমালার ১৫ ধারায় অভিযোগ আনা হয়।

২০০৮ সালের ২৪ জুন আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে দুদক। ২৭ জুলাই অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে পরবর্তী কার্যক্রমের জন্য সেটি বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতে পাঠিয়ে দেন মহানগর দায়রা জজ। বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতে এক দফা অভিযোগ গঠনের শুনানি হয়। তবে অভিযোগ গঠন হয়নি।

এর মধ্যে ২০০৮ সালের ২০ আগস্ট বদির রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে হাইকোর্ট মামলার কার্যক্রম তিন মাসের জন্য স্থগিত করেন। ২০০৯ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে জারি হওয়া রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত মামলার কার্যক্রম স্থগিত করেন হাইকোর্ট।

আট বছর পর চলতি বছরের ৩ জানুয়ারি হাইকোর্ট মামলার কার্যক্রম চালানোর আদেশ দিয়ে রুলের নিষ্পত্তি করেন। একইসঙ্গে আসামিকে ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে আত্মসমর্পণের আদেশ দেন। গত ৫ মার্চ হাইকোর্টের আদেশের নথি বিচারিক আদালতে এসে পৌঁছে।

এরপর সাংসদ বদি আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে আদালতে এসে তিনি সরাসরি পিপির কক্ষে ঢুকে যান। সেখানে আধাঘণ্টা অবস্থানের পর পিপির সঙ্গে আদালতে প্রবেশ করেন। এসময় তার সঙ্গে দেহরক্ষীসহ অর্ধশতাধিক লোক আদালতে আসেন বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।

বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী বলেন, মামলাটি বর্তমানে অভিযোগ গঠনের অপেক্ষায় আছে। অভিযোগ গঠনের পর সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হবে।

এর আগে জরুরি অবস্থার সময় ২০০৭ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি গ্রেফতার হন টেকনাফের তৎকালীন পৌর মেয়র আবদুর রহমান বদি। দেড় বছর জেল থেকে ২০০৮ সালের ৮ সেপ্টেম্বর জামিনে মুক্তি পান।

জেলে থাকা অবস্থায় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) নির্দেশে বদি ২০০৭ সালের ১১ সেপ্টেম্বর সম্পদের তথ্য জমা দেন। একই সময়ে তিনি আয়কর বিভাগেও সম্পদের তথ্য জমা দেন।

দুদকে দাখিল করা বিবরণীতে বদি নিজের নামে স্থাবর ৩২ লাখ ১৯ হাজার ২৪১ টাকা এবং অস্থাবর ৪ লাখ ৩০ হাজার ৮৮৮ টাকা ১৫ পয়সা মূল্যের সম্পদের তথ্য দেন।

স্ত্রী শাহীন আক্তারের নামে স্থাবর ১১ লাখ ৯০ হাজার টাকা এবং অস্থাবর ৭৭ হাজার ৭ টাকা ৯৬ পয়সা মূল্যের সম্পদের তথ্য দেন।

নিজের দশ বছর বয়সী মেয়ে সামিয়া রহমান সানির নামে স্থাবর ৬ লাখ এবং অস্থাবর ৫ হাজার ৭৪০ টাকা ১১ পয়সা মূল্যের সম্পদের তথ্য দেন।

বদি স্ত্রী-মেয়েসহ মোট ৫৫ লাখ ২২ হাজার ৮৭৭ ‍টাকা ১১ পয়সা মূল্যের সম্পদের তথ্য দুদকে জমা দিলেও অনুসন্ধানে দুদক প্রমাণ পায়, বদি ১৪ লাখ টাকা করে ২৮ লাখ টাকা দামের দুটি ট্রাকের তথ্য বিবরণীতে গোপন করেছেন। এছাড়া ১২ লাখ ৮৭ হাজার ৭৫০ টাকা ও ১৫ লাখ ২৩ হাজার ৭৫০ টাকা দামের আরও দুটি ট্রাকের তথ্যও তিনি গোপন করেছেন।

মামলার আরজিতে বাদি সাংসদ বদির বিরুদ্ধে চারটি ট্রাক বাবদ মোট ৫৬ লাখ ১১ হাজার ৫০০ টাকার সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগ এনেছেন। এছাড়া চট্টগ্রাম নগরীর পাঁচলাইশ এলাকায় প্লটসহ ৭৯ লাখ ৩৭ হাজার ৭৯৭ টাকা ১১ পয়সা মূল্যের সম্পদ অসৎ উপায়ে উপার্জনের তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে মামলার আরজিতে।

এছাড়া আয়কর বিবরণীতে বদি সম্পদের যে তথ্য দিয়েছেন দুদকের দাখিল করা বিবেরণীর সঙ্গে তার গরমিল আছে বলে দুদক মামলার আরজিতে উল্লেখ করেছেন।

পাঠকের মতামত

উখিয়া অনলাইন প্রেসক্লাবের কার্যকরী কমিটির শেষ সভা অনুষ্ঠিত; দায়িত্বে নির্বাচন কমিশন 

উখিয়া অনলাইন প্রেসক্লাবের ৩৯তম কার্যকরী কমিটির সভা সম্পন্ন হওয়ার মধ্য দিয়ে বর্তমান কমিটির দায়িত্ব শেষ ...

বেপরোয়া আন্তর্জাতিক হুন্ডিচক্র টেকনাফের গফুর সিন্ডিকেট, পাচার হচ্ছে কোটি কোটি টাকা

আন্তর্জাতিক হুন্ডিচক্র টেকনাফের গফুর সিন্ডিকেট হুন্ডির মাধ্যমে অবৈধভাবে বিদেশ ও ইয়াবার টাকা পাচার অব্যাহত রেখেছে। ...