প্রকাশিত: ২৫/০৮/২০১৬ ৭:৫১ এএম

ঈদগাঁও প্রতিনিধি

ঈদগাঁওতে বনবিভাগের জব্দ করা ৬ ঠেলাগাড়ি বিভিন্ন প্রজাতির গাছ মেম্বার কর্তৃক ছিনিয়ে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে অভিযুক্ত মেম্বার ছিনিয়ে নয় আপোষে গাছ সহ গাড়িগুলো নিয়ে যাওয়ার কথা স্বীকার করেছেন। ২৩ আগষ্ট গভীর রাতে ইউনিয়নের মাইজ পাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। সংঘটিত ঘটনায় বনবিভাগের পক্ষ থেকে ইউপি চেয়ারম্যানকে অবহিত করা হলে তিনি বিষয়টির সমাধান করবেন বলে তাদের আশ্বাস দেন। উ™ভুত পরিস্থিতিতে উত্তর বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মেহেরঘোনা এসে জনপ্রতিনিধি, বন কর্মকর্তা-কর্মচারী ও উপকারভোগীদের সাথে জরুরী বৈঠক করেছেন। প্রাপ্ত তথ্যে প্রকাশ, ঈদগাঁও মেহেরঘোনা, কালিরছড়া ও মাছুয়াখালী বিট কেন্দ্রীক একটি সংঘবদ্ধ দল দীর্ঘদিন যাবত বনাঞ্চলের কঁচি গাছ কেটে গভীর রাতে ঈদগাঁও থেকে চৌফলদন্ডীতে পাচার করে আসছিল। ২৩ আগষ্ট গভীর রাতে এ ধরণের সংঘবদ্ধ চোরদের কঁচি গাছ বোঝাই ৬টি ঠেলাগাড়ি পাচার কালে গোপন সূত্রে খবর পেয়ে বনবিভাগ দ্রুত অভিযান চালায়। এক পর্যায়ে মাইজ পাড়া সড়ক থেকে গাড়িগুলো জব্দ করা হয়। অভিযানে নেতৃত্ব দেন মেহেরঘোনা ফরেষ্ট রেঞ্জার এ.কে.এম আতা ইলাহী। তার অভিযোগ, গাছ জব্দের খবর পেয়ে কালিরছড়ার নবনির্বাচিত মেম্বার মাহমুদুল হাসান মিনারের নেতৃত্বে ৩০/৩৫জন লোক জব্দকৃত গাছগুলো ছিনিয়ে নিতে থাকে। এসময় উপস্থিত বনকর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথে তাদের ব্যাপক বাক বিতন্ডা হয়। এক পর্যায়ে উপস্থিত বনকর্মচারীরা বিভাগীয় বন কর্মকর্তা উত্তরের সাথে মেম্বার মিনারকে মোবাইলে কথা বলিয়ে দেন। এসময় ডিএফও মেম্বারকে জব্দকৃত গাছ মেহেরঘোনা অফিসে হেফাজতে নেয়ার জন্য তার সহায়তা চান বলে জানা গেছে। কিন্তু অভিযুক্ত মেম্বার ডিএফও ও বনকর্মকর্তা-কর্মচারীদের কথার কোন তোয়াক্কা না করে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় গাড়ীগুলো ছিনিয়ে নেয়। সংঘটিত ঘটনায় উত্তর বিভাগীয় বন কর্মকর্তা কেরামত আলী মল্লিক জরুরী ভিত্তিতে মেহেরঘোনা বিট অফিসে এসে স্থানীয় চেয়ারম্যান, মেম্বার, বনকর্মকর্তা-কর্মচারী ও উপকারভোগীদের সাথে জরুরী বৈঠক করেন। এ ঘটনায় বনবিভাগের পক্ষ থেকে ঈদগাঁও চেয়ারম্যান আলহাজ্ব ছৈয়দ আলমের নিকট অভিযোগ জানানো হলে তিনি বৃহষ্পতিবার সকালে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত দেবেন বলে তাদের আশ্বাস দেন। উত্তর বনবিভাগীয় কর্মকর্তা কেরামত আলী মল্লিক জানান, সংঘটিত ঘটনায় তিনি জরুরী ভিত্তিতে মেহেরঘোনায় গিয়ে বিভিন্ন পক্ষের সাথে বৈঠক করেছেন। বিষয়টি স্থানীয় চেয়ারম্যান এবং মেম্বারকেও অবহিত করা হয়েছে। তিনি কাঠ ছিনতাইয়ের ঘটনা সত্য বলে স্বীকার করেছেন এবং এ ব্যাপারে চেয়ারম্যানের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন বলে জানান। ঈদগাঁও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ছৈয়দ আলমের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি মেহেরঘোনায় বনকর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথে বৈঠকে অংশ নিয়েছেন স্বীকার করে বলেন, অভিযুক্ত মিনারকে না পাওয়ায় তার সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি। তবে আজ (বৃহষ্পতিবার) এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হতে পারে। মেহেরঘোনা ফরেষ্ট রেঞ্জার এ.কে.এম আতা ইলাহী জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খবর পেয়ে তিনিও তার বনকর্মচারীরা গভীর রাতে কাঠ চোরদের ধরতে অভিযান চালান। অভিযানে ৬টি ঠেলাগাড়ি জব্দ করা হয়। তবে জব্দকৃত গাড়ীগুলো স্থানীয় মেম্বার মিনারের নেতৃত্বে তার লোকজন ছিনিয়ে নেয় বলে স্বীকার করেন। এ ব্যাপারে তিনি পরদিন বিকেলে ঈদগাঁও ইউনিয়ন পরিষদে লিখিত অভিযোগ পাঠালেও পরিষদ বন্ধ থাকায় তা দাখিল করা সম্ভব হয়নি। তবে বৃহষ্পতিবার সকালে অভিযোগটি দাখিল করা হবে বলে স্থানীয় সাংবাদিকদের জানান। এ ব্যাপারে প্রধান অভিযুক্ত মেম্বার মাহমুদুল হাসান মিনারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বনবিভাগের জব্দকৃত কাঠ ছিনিয়ে নেয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, বন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে তিনি লোকজনের সহায়তায় কাঠগুলো নিয়ে এসেছেন। উল্লেখ্য, উক্ত ৩ বিটের বনাঞ্চলে কয়েক বছর সৃজিত সামাজিক ও সংরক্ষিত বনাঞ্চলের বিভিন্ন প্রজাতির চারাগাছ দীর্ঘদিন যাবত কেটে উজাড় করা হচ্ছে। এতে পরিবেশের ভারসাম্য যেমন নষ্ট হচ্ছে, তেমনি উপকারভোগীদের বারোটা বাজছে। মেহেরঘোনা, কালিরছড়া ও মাছুয়াখালী ভিত্তিক কয়েকটি সিন্ডিকেট গাছগুলো কেটে গভীর রাতে বিভিন্ন গাড়ী যোগে চৌফলদন্ডীতে নিয়ে জ্বালানী কাঠ কিংবা পানের বরজে ব্যবহারের জন্য বিক্রি করে থাকে। এর ফলে সংশ্লিষ্ট বনভূমি বিরাণ ভূমিতে পরিণত হচ্ছে।

পাঠকের মতামত

চকরিয়ায় আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের হট্টগোল

কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় আওয়ামী লীগের দুটি পক্ষের মধ্যে হট্টগোল হয়েছে। পরিস্থিতি সামাল ...