প্রকাশিত: ১১/১০/২০১৭ ৭:৪০ এএম , আপডেট: ১৭/০৮/২০১৮ ১২:২৫ পিএম

অপ্রতিরোধ্য মেসি হ্যাটট্রিক করেছেন। আর সেই সুবাদে বিশ্বকাপের মূল পর্বে আর্জেন্টিনা খেলতে পারবে কিনা তা নিয়ে যে সংশয় ছিল তার অবসান ঘটল। মঙ্গলবার রাতে (বাংলাদেশ সময় বুধবার সকালে) ৩-১ গোলে ইকুয়েডরকে হারায় আর্জেন্টিনা। মেসি হ্যাটট্রিক করেছেন। তিনি ১২, ২০, ৬২ মিনিটে গোল তিনটি করেন। আরেক গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে চিলিকে ৩-১ গোলে হারিয়েছে ব্রাজিল।

খেলা শুরু হওয়ার ৪০ সেকেন্ডের মধ্যে আর্জেন্টিনা ১ গোলে পিছিয়ে যায়। এর পর একের পর এক আক্রমণ করতে থাকে পিঠ দেয়ালে ঠেকে যাওয়া আর্জেন্টিনা। এর ফল হিসাবে খেলার ১১ মিনিটের মাথায় ডি মারিয়ার দারুণ এক পাসে মেসি একুয়েডর এর জালে বল পাঠিয়ে ১-১ এ সমতা আনেন।

এর পর খেলার ১৬ মিনিটে ডি- বক্সের বাইরে ফ্রিকিক মেসি কাজে লাগাতে না পারলে গোল বঞ্চিত হয় মেসিরা। তবে এর ঠিক ২ মিনিট পর আবারো মেসি ম্যাজিকে গোল পায় আর্জেন্টিনা। ফলাফল ২-১ গোলে এগিয়ে মেসিবাহিনী। প্রথমার্ধে এভাবেই শেষ হয় খেলা। দ্বিতীয়ার্ধে আবার গোল করেন মেসি। ৬২ মিনিটে তিনি গোলটি করেন।

৩২ মিনিটে মেসির পাসে সহজ এক সুযোগ দি- মারিয়া মিস করলে আরেকটি গোল বঞ্চিত হয় মেসিরা। বাকি সময়ে আর গোল করতে পারেনি কোন দল। এখন সেকেন্ড হাফে কেমন করে মেসিরা সেটাই দেখার বিষয়।

বিশ্বকাপের বাছাই পর্বে এখন পর্যন্ত ১৭ ম্যাচ খেলে ২৫ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে তারা। ইকুয়েডরের বিপক্ষে শেষ দুই বারের সাক্ষাতে একটি জয় আর্জেন্টিনার আরেকটিতে জয় পায় তারা। বিশ্বকাপে সুযোগ পেতে আর্জেন্টিনার সামনে জয়ের বিকল্প ছিল না।

মেসি-রোনালদো-নেইমারকে সামনে রেখে ব্যালন ডিঅঁর-এর সংক্ষিপ্ত তালিকা
ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো, লিওনেল মেসি ও নেইমারকে ফেবারিট হিসেবে বিবেচনা করে প্রণীত হয়েছে ৩০ ফুটবলারকে নিয়ে ২০১৭ সালের ব্যালন ডিঅঁর-এর সংক্ষিপ্ত তালিকা।

এবারের পুরস্কারটি জয়ের মাধ্যমে পঞ্চম বারের মত লিওনেল মেসির সমান সংখ্যক ব্যালন ডিঅঁর খেতাব নিশ্চিত করতে চান পর্তুগাল সুপার স্টার ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। ফুটবলের ৫৯ বছরের ইতিহাসে রিয়াল মাদ্রিদকে প্রথমবারের মত এক মৌসুমে লা লীগা ও চ্যাম্পিয়ন্স লীগ শিরোপা জয়ে তারকাসুলভ ভূমিকা রেখেছেন তিনি।

সর্বশেষ চার বছরের মধ্যে তিনবার সম্মানসূচক এই খেতাবটি জয় করেছেন রোনালদো। অপরদিকে বার্সেলোনাকে ট্রেভল শিরোপা এনে দিয়ে ২০১৫ সালের বর্ষ সেরার পুরস্কারটি শেষবার জিতেছেন ৫ বারের খেতাব জয়ী আর্জন্টাইন সুপার স্টার লিওনেল মেসি। ২০০৭ সালের পর এই দুই মহাতারকা মিলে জয় করে আসছে ফরাসি ফুটবল ম্যাগাজিন প্রবর্তিত এই বর্ষসেরার খেতাব। ২০০৭ সালে খেতাবটি জয় করেছিলেন সাবেক ব্রাজিল ও এসি মিলান তারকা কাকা।

স্প্যানিশ সুপার কাপ থেকে বিতাড়িত হবার পর ঘরোয়া ফুটবলে ৫ ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে মাঠে ফেরা রোনালদো এখনো পর্যন্ত ২০১৭-১৮ মৌসুমে গোলের দেখা পাননি। তারপরও আসন্ন বর্ষসেরার খেতাব জয়ের জন্য ফেভারিটের তালিকায় রয়েছেন রোনালদো।

চির প্রতিদ্বন্দ্বির অনুপস্থিতির সুযোগটি বেশ ভালভাবেই কাজে লাগিয়েছেন মেসি। বার্সেলোনাকে দারুণ সূচনা এনে দেয়া এই আর্জেন্টাইন তারকা এরই মধ্যে ৭ ম্যাচ থেকে গোল করেছেন ১১টি। ইউরোপীয় লড়াইয়ে করেছেন আরো দু’টি গোল। তবে দু’জনই ২০১৮ সালের বিশ্বকাপ ফুটবলে অংশগ্রহণ থেকে বঞ্চিত হবার হুমকির মধ্যে রয়েছেন।

গ্রুপ ভিত্তিক বাছাইপর্বের শেষ ম্যাচে শীর্ষ পয়েন্ট ধারী সুইজারল্যান্ডকে যদি হারাতে না পারে তাহলে ‘বি’ গ্রুপের রানার্সআপ হিসেবে আগামী মাসের প্লে অফ ম্যাচের ভরসায় থাকতে হবে রোনালদোর দেশ ইউরো চ্যাম্পিয়ন পর্তুগালকে।
অপরদিকে দুইবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা এখনো পর্যন্ত দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের বাছাইপর্বে রয়েছে শীর্ষ পাঁচের বাইরে। শেষ ম্যাচে তারা যদি ইকুয়েডর সফরে গিয়ে তাদের হারাতে পারে তাহলে অন্তত পক্ষে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দুই লেগের প্লে অফ ম্যাচ দিয়ে রাশিয়ার টিকিট পাবার চেষ্টা করতে পারবে। অন্যথায় বিশ্বকাপে অংশ নিতে পারবেনা মেসির দল।

এদিকে ২২২ মিলিয়ন ইউরোর রেকর্ড ট্রন্সফার ফির বিনিময়ে বার্সেলোনা থেকে প্যারিস সেন্ট জার্মেইয়ে (পিএসজি) পাড়ি দিয়ে মেসির ছায়ামুক্ত হওয়া ব্রাজিলীয় সুপার স্টার নেইমার ফ্রান্সে এখন দারুণ সময় কাটাচ্ছেন। এরই মধ্যে ফরাসি ক্লাবটির হয়ে আট গোল করেছেন ২৫ বছর বয়সি এই তারকা।

সংক্ষিপ্ত তালিকায় মনোনয়ন পাওয়া ৩০ জন ফুটবলারদের মধ্যে ৭ জনই রয়েছে রিয়াল মাদ্রিদের। রোনালদোসহ অন্যরা হলেন- অধিনায়ক সর্জিও রামোস, মার্সেলো, টনি ক্রুস, লুকা মড্রিচ, ইসকো এবং করিম বেনজেমা।

২০১৭ ব্যালন ডি’অরের জন্য ৩০ ফুটবলারের সংক্ষিপ্ত তালিকা :
নেইমার (পিএসজি), লুকা মড্রিচ (রিয়াল মাদ্রিদ), পাওলো দিবালা (জুভেন্টাস), মার্সেলো (রিয়াল মাদ্রিদ), এনগোলো কঁন্তে (চেলসি), লুইস সুয়ারেজ (বার্সেলোনা), সার্জিও রামোস (রিয়াল মাদ্রিদ), ইয়ান ওবলাক (অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ), ফিলিপ কুটিনহো (লিভারপুল), ড্রাইস মার্টেন্স (নাপোলি), কেভিন ডি ব্রুইন (ম্যানচেস্টার সিটি), রবার্ট লিওয়ানদোভস্কি (বায়ার্ন মিউনিখ), ডেভিড ডি গিয়া (ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড), হ্যারি কেন(টটেনহ্যাম হটস্পার), এডিন জেকো (রোমা), এন্টোনিও গ্রিজম্যান (আতলেতিকো মাদ্রিদ), টনি ক্রুস (রিয়াল মাদ্রিদ), জিয়ানলুইজি বুফন (জুভেন্টাস), সাদিও মানে (লিভারপুল), রাদামেল ফ্যালকাও (মোনাকো), লিওনেল মেসি (বার্সেলোনা), পিয়েরে-এমেরিক আউবামেয়াং (বরুসিয়া ডর্টমুন্ড), এডিনসন কাভানি (পিএসজি), ম্যাটস হুমেলস (বায়ার্ন মিউনিখ), করিম বেনজেমা (রিয়াল মাদ্রিদ), ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো (রিয়াল মাদ্রিদ), এডেন হ্যাজার্ড (চেলসি), লিওনার্দো বোনুচ্চি (এসি মিলান), ইসকো (রিয়াল মাদ্রিদ) ও কিলিয়ান এমবাপে (পিএসজি)।

পাঠকের মতামত