প্রকাশিত: ২৯/০৩/২০১৭ ৯:০২ এএম

ডেস্কঃ মিয়ানমারের সেনাপ্রধান জেনারেল মিন অং হাইং সংঘাত কবলিত রাখাইন রাজ্যের রোহিঙ্গা মুসলিমদের নাগরিকত্বের দাবি নতুন করে প্রত্যাখ্যান করে বলেন, রাখাইন রাজ্যে কোনো রোহিঙ্গা নেই, স্থানীয়রা বাঙালি অনুপ্রবেশকারী ।

দেশটির সশস্ত্র বাহিনী দিবসে দেয়া ভাষণে তিনি বলেন, ‘আমরা বিশ্বকে ইতিমধ্যে জানিয়ে দিয়েছি, আমাদের দেশে কোনো রোহিঙ্গা নেই। রাখাইন রাজ্যের বাঙালিরা মিয়ানমারের নাগরিক নন। তারা সবাই বাইরে থেকে এদেশে এসে বসবাস করছেন।’

তিনি আরো বলেন, ‘পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কি করা উচিত সে ব্যাপারে আইন অনুযায়ী আমাদের দায়িত্ব আছে। আমাদের সার্বভৌমত্বকে রাজনৈতিক, ধর্মীয় ও বর্ণবৈষম্যজনিত সংকট থেকে সুরক্ষিত রাখার দায়িত্ব আমাদের।’

গত বছরের ৯ অক্টোবর মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের কয়েকটি সীমান্ত পোস্টে সন্ত্রাসীদের হামলায় নয় সীমান্তরক্ষী নিহত হন। এর পর থেকেই রাজ্যের রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকাগুলোয় অভিযান শুরু করে সেনাবাহিনী। ছড়িয়ে পড়ে সংঘাত। শরণার্থী হন অসংখ্য রোহিঙ্গা।

স্থানীয় রোহিঙ্গাদের ওপর রাষ্ট্রীয় মদদে পরিচালিত এসব বর্বর নির্যাতন ও সম্ভাব্য মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের পরিপ্রেক্ষিতে জাতিসংঘের তদন্ত প্রস্তাবের নিন্দা জানান দেশটির সেনাপ্রধান। এর আগে দেশটির নোবেল বিজয়ী গণতন্ত্রকামী নেত্রী অং সাং সু চি’র নেতৃত্বাধীন কমিশনও এ প্রস্তাবের সমালোচনা করেছিল।

দীর্ঘদিন দেশটি সামরিক শাসনের অধীনে ছিল। মিয়ানমারে বর্তমানে গণতান্ত্রিক সরকার ক্ষমতায় থাকলেও রাষ্ট্র পরিচালনায় সেনাবাহিনীর প্রভাব সুস্পষ্ট। সেনা ও গণতান্ত্রিক উভয় সরকারই রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব দিতে নারাজ। দেশটির শাসনযন্ত্র বরাবরই তাদের বাঙালি অনুপ্রবেশকারী হিসেবে চিহ্নিত করে এসেছে।

সম্প্রতি মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর দেশটির সেনাবাহিনীর নির্যাতনের বিষয়টি তদন্ত করার সিদ্ধান্ত নেয় জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিল। অন্যদিকে বাস্তুচ্যুত মুসলিম রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে আনার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিক কফি আনানের নেতৃত্বাধীন কমিশন। তাদের নাগরিকত্ব দেয়ার পাশাপাশি সব রকমের নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করার সুপারিশ করা হয়েছে।

পাঠকের মতামত