প্রকাশিত: ২২/০২/২০১৭ ৯:২৫ এএম , আপডেট: ২২/০২/২০১৭ ৯:২৬ এএম

উখিয়া নিউজ ডেস্ক::
দমন-পীড়নের মুখে সম্প্রতি মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের জন্য মালয়েশিয়ার ত্রাণ সহায়তা পাইয়ে দেওয়ার নাম করে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। এই চাঁদা তোলায় জড়িয়ে পড়েছেন কক্সবাজার ও উখিয়ার বিভিন্ন অনিবন্ধিত শিবিরের কয়েকজন রোহিঙ্গা ‘মাঝি’ (নেতা)।
ত্রাণসামগ্রী পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে মাঝিরা পরিবারপ্রতি ২০০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত চাঁদা হাতিয়ে নিচ্ছেন বলে সাধারণ রোহিঙ্গারা অভিযোগ করেছে। রোহিঙ্গা শিবিরগুলোতে বেশ কয়েকটি ব্লক থাকে। প্রতিটি ব্লকে একজন করে মাঝি থাকেন।
উখিয়ার একটি শিবিরে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা সলিম উল্লাহ ও মরিয়ম খাতুন বলেন, গত অক্টোবর মাসের শেষের দিকে উখিয়ার কুতুপালং শিবিরে আশ্রয় নেন তাঁরা। টাকা-পয়সা তেমন কিছুই নিয়ে আনতে পারেননি। চাঁদা দিতে না পারলে ত্রাণের তালিকা
থেকে তাঁদের নাম বাদ দেওয়া হবে বলে মাঝিরা হুমকি দিচ্ছেন। এখন কী করবেন ভেবে পাচ্ছেন না তাঁরা।
গত বছরের অক্টোবর মাসে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সে দেশের সেনাবাহিনী ও পুলিশ যৌথ অভিযান শুরু করার পর থেকে প্রাণ বাঁচাতে সীমান্ত অতিক্রম করে এ পর্যন্ত ৭০ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা নতুন করে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। তাদের জন্য ত্রাণবাহী জাহাজ পাঠিয়েছে মালয়েশিয়া। গত বুধবার কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের ৩টি রোহিঙ্গাশিবিরের ১৫০টি পরিবারকে ত্রাণ দেওয়া হয়। মালয়েশিয়া থেকে পাঠানো ত্রাণসামগ্রীর মধ্যে রয়েছে চাল, ডাল, চিনি, খাদ্যশস্য, ভোজ্যতেল, কম্বলসহ ৩৫ ধরনের পণ্য। নতুন আসা ১৫ হাজার রোহিঙ্গা পরিবারকে ত্রাণ দেওয়া হবে।
২৩ ফেব্রুয়ারি থেকে রোহিঙ্গাদের মাঝে দ্বিতীয় দফায় ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা হতে পারে বলে জানান কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেন। তিনি বলেন, নতুন আসা রোহিঙ্গাদের তালিকা তৈরিতে কোনো অনিয়ম এবং ত্রাণ বিতরণে যাতে কোনো দুর্নীতি না হয় তা দেখার জন্য অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের (শিক্ষা ও আইসিটি) নেতৃত্বে একটি কমিটি করা হয়েছে।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) সাইফুল ইসলাম মজুমদার বলেন, আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) ও রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ হবে।
উখিয়ার কুতুপালং অনিবন্ধিত রোহিঙ্গাশিবিরে এখন অবস্থান করছে অন্তত দেড় লাখ রোহিঙ্গা। এর মধ্যে ৯ অক্টোববের পর নতুন করে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা রয়েছে ৪১ হাজারের মতো। বাকিরা কয়েক বছর ধরে এই শিবিরে অবস্থান করছে। আবার উখিয়ার বালুখালীর আরেকটি শিবিরে অবস্থান করছে নতুন করে পালিয়ে আসা আরও ৫ হাজার রোহিঙ্গা।
টেকনাফের অনিবন্ধিত লেদা রোহিঙ্গা ক্যাম্প ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি দুদু মিয়া বলেন, এই শিবিরেও ত্রাণের অপক্ষোয় আছে রাখাইন রাজ্য থেকে সম্প্রতি পালিয়ে আসা অন্তত ৪১ হাজার রোহিঙ্গা। এই শিবিরে কয়েক বছর ধরে অবস্থান করছে আরও ৪০ হাজার রোহিঙ্গা। মালয়েশিয়ার ত্রাণ পাওয়া না পাওয়া নিয়ে পুরোনো ও নতুন রোহিঙ্গাদের মধ্যে আলোচনা-সমালোচনা চলছে। তবে এ নিয়ে কারও চাঁদাবাজি করার সুযোগ নেই। সুত্র প্রথম অালো

পাঠকের মতামত