প্রকাশিত: ২৯/০১/২০১৭ ৪:০১ পিএম , আপডেট: ২৯/০১/২০১৭ ৪:৫৮ পিএম

শহিদুল ইসলাম / রফিক মাহমুদ::

মিয়ানমার থেকে নির্য়াতনের শিকার হয়ে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের কাছে নির্যাতনের বর্ননা শুনলেন রাখাইন রাজ্যের সঙ্কট নিরসনে মিয়ানমার সরকার গঠিত কফি আনান কমিশনের সদস্যরা। রোহিঙ্গা পরিস্থিতি সরেজমিন দেখতে আনান কমিশনের তিন সদস্যের প্রতিনিধি দল কক্সবাজারে রোহিঙ্গা বস্তিতে এসে পৌঁছান রোববার বেলা পৌনে ১২টার দিকে।বালুখালী রোহিঙ্গা বস্তিতে প্রতিনিধি দলের সদস্যরা মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের সাথে ঘন্টাব্যাপী রুদ্ধতার বৈঠকে মিলিত হন। উক্ত বৈঠকে উপস্থিত প্রত্যক্ষদর্শী সুত্রে জানা গেছে,মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা কমিশনের কাছে জানিয়েছেন, মিয়ানমার সরকারের সামরিক জান্তার নির্যাতন সইতে না পেরে এদেশে পালিয়ে আসেন। ওখানকার সেনা কর্মকর্তারা মানুষকে ধরে নিয়ে গুলি করে হত্যা ঘর বাড়ি জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দেয়। প্রতিনিধি দলের সদস্যরা কয়েকটি রোহিঙ্গা পরিবারের সাথে ঘন্টাব্যাপী আলোচনা করেন। তারা নতুন আসা রোহিঙ্গাদের বিভিন্ন বিষয় খোঁজ খবর নেন। প্রতিনিধি টেকনাফের নয়াপাড়া রোহিঙ্গা বস্তি পরিদর্শনেরও কথা রয়েছে। সেখানে অবস্থান করা নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের কাহিনীও শুনবেন তারা । এরপর প্রতিনিধি দল কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করার কথা রয়েছে। পরে ঢাকায় গিয়ে তারা পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গেও বৈঠক করবে কমিশন। কমিশনের সদস্যরা হলেন- মিয়ানমার নাগরিক উইন ম্রা ও আই লুইন এবং লেবাননের নাগরিক ঘাসান সালামে।ময়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর নোবেল বিজয়ী অং সান সুচি রোহিঙ্গা অধ্যুষিত রাখাইন রাজ্যের সমস্যা সম্পর্কে জানা এবং সমাধানের সুপারিশ প্রণয়নের লক্ষ্যে আনান কমিশন গঠন করেছেন। যৌথভাবে এ কমিশন গঠনে যুক্ত হয়েছে কফি আনান ফাউন্ডেশনে। ৯ সদস্যবিশিষ্ট এ কমিশনের প্রধান জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনান। তবে কফি আনান এ সফরে ঢাকায় আসেননি। এদিকে চলতি বছরের শেষ নাগাদ রাখাইন কমিশন তার্দের প্রতিবেদন মিয়ানমারের সরকারের কাছে পেশ করবে। মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের বিভিন্ন গোষ্ঠি ও সম্প্রদায়ের সঙ্গে আলোচনা করে রাখাইন কমিশন স্বাধীনভাবে প্রতিবেদন দেবে বলে জানানো হয়েছে। রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্বের বিষয়টি নিয়েও সুপারিশ পেশ করা রাখাইন কমিশনের আওতাভুক্ত। বাংলাদেশ সফরকালে রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব সম্পর্কে তাদের কাছে তথ্যপ্রমাণ চাইতে পারে কমিশন, এমন কথা থাকলেও রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কমিশন সদস্যরা কী কথা বলছেন তা গণমাধ্যমকে জানানো হয়নি। উল্লেখ্য ,গত বছরের ৯ অক্টোবর সীমান্ত চৌকিতে সন্ত্রাসী হামলায় মিয়ানমারের নয়জন ‘বর্ডার গার্ড পুলিশ’ (বিজিপি) সদস্য নিহত হওয়ার জের ধরে দেশটিরসেনাবাহিনী রোহিঙ্গা অধ্যুষিত রাখাইন রাজ্যে অভিযান শুরু করে। এ অভিযানে নির্বিচারে রোহিঙ্গাদের হত্যা, বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ এবং রোহিঙ্গা নারীদের ধর্ষণ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযান শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত প্রয় ৬৬ হাজার রোহিঙ্গা সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন। এছাড়া প্রায় তিন লাখ রোহিঙ্গা আগে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে কক্সবাজার ও তার আশপাশে খুপরি ঘর তুলে অবৈধভাবে বাস করছেন। প্রায় প্রতিদিনই রোহিঙ্গারা সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। কুতুপালং,বালুখালী,নয়াপাড়া রোহিঙ্গা বস্তি ছাড়াও এসব রোহিঙ্গারা ছড়িয়ে ছিটিয়ে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে।নিয়ন্ত্রনহীন এসব রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে আইনশৃংখলা বিরোধী কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগ রয়েছে। আইনশৃংখলা রক্ষা বাহিনী বেকায়দায় রযেছে এসব রোহিঙ্গাদের কারনে।

পাঠকের মতামত

কক্সবাজারে বায়ুবিদ্যুৎকেন্দ্র চালু, দৈনিক উৎপাদন ৩০ মেগাওয়াট

কক্সবাজার সদর উপজেলার বাঁকখালী নদীর খুরুশকুল উপকূলে বায়ুবিদ্যুৎকেন্দ্র চালু হয়েছেছবি: প্রথম আলো কক্সবাজার সদর উপজেলার ...

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে টার্গেট কিলিং!

কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে চলছে ‘টার্গেট কিলিং’। ক্যাম্পে আধিপত্য বিস্তার, মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজিসহ নানা অপরাধ কর্মকাণ্ড ...

জান্নাতুলকে খুনের কথা আদালতে স্বীকার করলেন কক্সবাজারের রেজা

রাজধানীর পান্থপথে আবাসিক হোটেলে চিকিৎসক জান্নাতুল নাঈম সিদ্দিকা হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন ...

খাদ্য সংকটে সেন্টমার্টিন

হেলাল উদ্দিন সাগর :: বৈরী আবহাওয়ার কারণে গত এক সপ্তাহ ধরে দেশের একমাত্র প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিন ...