প্রকাশিত: ২৯/০৬/২০২০ ৫:২৬ পিএম
ফাইল ছবি

ফাইল ছবি
বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীর ‘শুদ্ধি অভিযানের’ খবরে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের হাজার হাজার গ্রামবাসী ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছে। খবর রয়টার্স।
প্রশাসন থেকে গত সপ্তাহে গ্রামপ্রধানদের পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, বাহিনীগুলো ওই গ্রামগুলোতে শুদ্ধি অভিযান চালাবে। অভিযান চলাকালে ‘এএ’ সন্ত্রাসীদের সঙ্গে যদি লড়াই শুরু হয় তাহলে গ্রামে না থেকে কিছু সময়ের জন্য দূরে থাকবেন। এখানে ‘এএ’ বলতে আরাকান আর্মিকে বোঝানো হয়েছে, এরা রাখাইন রাজ্যের বিদ্রোহী গোষ্ঠী যারা আরাকান নামে পরিচিত রাজ্যের উত্তরাঞ্চলের অধিক স্বায়ত্তশাসন আদায়ের জন্য লড়াই করে চলছে।
চিঠিতে বর্ণিত ‘শুদ্ধি অভিযান’ বলতে ‘সন্ত্রাসীদের’ লক্ষ্য করে সামরিক অভিযান চালানোর কথা বলা হয়েছে। চিঠিতে প্রশাসক তার মন্ত্রণালয় থেকে দেয়া নির্দেশের ভুল ব্যাখ্যা করে কয়েক ডজন গ্রামে অভিযান চালানো হবে বলে উল্লেখ করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, কয়েক ডজন না, মাত্র কয়েকটি গ্রামে অভিযান চালানো হবে। তবে চিঠির অন্য বিষয়গুলো ঠিক আছে বলে নিশ্চিত করেছেন তিনি। অভিযান এক সপ্তাহ স্থায়ী হতে পারে জানিয়ে ফোনে মিন থান বলেন, যারা রয়ে যাবে তারাই হবে এএর অনুগত।
গত বুধবার গ্রামপ্রধানদের লেখা ওই চিঠির খবর ছড়িয়ে পড়লে কায়ুকতান ও এর আশপাশের ৩৯টি গ্রামের

বাসিন্দারা পালিয়ে যাওয়া শুরু করেছে বলে যুক্তরাজ্যভিত্তিক মানবাধিকার গোষ্ঠী বার্মা হিউম্যান রাইটস নেটওয়ার্ক জানিয়েছে। নতুন অভিযানের আশঙ্কায় কায়ুকতান থেকে ৮০ জন লোক রাথেডাং পৌরসভার অন্য এলাকায় চলে গেছে বলে জানিয়েছেন মিন থান। সেনাবাহিনী তাদের আশ্রয় ও খাবারের ব্যবস্থা করেছে বলে জানিয়েছেন তিনি। মানবাধিকার গোষ্ঠী রাখাইন এথনিক কংগ্রেসের সম্পাদক জ জ হতুন জানিয়েছেন, অন্তত ১ হাজার ৭০০ লোক পাশর্^বর্তী পন্নাগিয়ুন পৌরসভায় পালিয়ে গেছে। আরো ১ হাজার ৪০০ লোক আশপাশের গ্রামগুলোতে আশ্রয় নিয়েছে আর তারা তীব্র খাদ্য সংকটে আছে বলে রাথেডাং পৌরসভা থেকে জানিয়েছেন পার্লামেন্টের স্থানীয় প্রতিনিধি ওও থান নায়িং।
তবে গত শনিবার রাতে দেশটির সরকারের এক মুখপাত্র বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, সীমান্ত বিষয়ক কর্মকর্তারা একটি উচ্ছেদ আদেশ জারি করলেও পরে তা প্রত্যাহার করা হয়েছে। মিয়ানমারের সীমান্ত বিষয়ক মন্ত্রণালয় স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে এই আদেশ জারির বিষয়টি স্বীকার করলেও এর প্রভাব অল্প কয়েকটি গ্রামে পড়েছে। গত শনিবার মিয়ানমার সরকারের মুখপাত্র জ হতাই ফেসবুকে দেয়া এক বিবৃতিতে বলেন, সরকার সামরিক বাহিনীকে ‘শুদ্ধি অভিযান’ পরিভাষাটি ব্যবহার না করার নির্দেশ দিয়েছিল।
লোকজনকে পালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেয়া চিঠিটি প্রত্যাহার করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। তবে আরো মন্তব্যের জন্য তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তিনি রয়টার্সের ফোন কলের জবাব দেননি। রয়টার্স চিঠি প্রত্যাহারের নির্দেশও দেখেনি বলে জানিয়েছে।
কায়ুকতান এলাকায় রোহিঙ্গা, রাখাইনসহ প্রায় লাখ খানেক লোক বাস করে বলে জানিয়েছে রাখাইন এথনিক কংগ্রেস। চলতি বছর মিয়ানমারের সেনাবাহিনী এএর সঙ্গে লড়াই করছে। এএ মূলত রাখাইনের বৌদ্ধ নৃগোষ্ঠীর সদস্যদের নিয়ে গঠিত বিদ্রোহী দল। এই দুই পক্ষের লড়াইয়ে এ পর্যন্ত বহু লোকের মৃত্যু হয়েছে এবং হাজার হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
রাখাইনের মুসলিম সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ২০১৭ সালে পরিচালিত অভিযানকে বর্ণনা করতেও ‘শুদ্ধি অভিযান’ পরিভাষা ব্যবহার করেছিল মিয়ানমারের কর্তৃপক্ষ। ওই অভিযান চলাকালে হাজার হাজার রোহিঙ্গা গ্রামবাসী তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায়। অভিযান চলাকালে সেনাবাহিনী নির্বিচার হত্যা ও অগ্নিসংযোগ করেছে বলে শরণার্থী হয়ে যাওয়া রোহিঙ্গারা অভিযোগ করেছে, কিন্তু মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী তা অস্বীকার করেছে। সুত্র: ভোরের কাগজ

পাঠকের মতামত

ইরানের ভয়ে তটস্থ ইসরায়েল!

ইসরায়েলে বড় ধরনের ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র বা ড্রোন হামলা আসন্ন বলে মনে করছে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি ...