প্রকাশিত: ২১/১১/২০১৯ ৯:২২ এএম

প্রতিবছর বাংলাদেশ থেকে হাজার-হাজার মানুষ কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে বিদেশে পাড়ি জমান। অন্যদিকে বিভিন্ন কারণে বিদেশ থেকে দেশে ফেরতও আসেন অনেকে। এসব মানুষের পুনর্বাসনের লক্ষ্যে ঋণ দিয়ে থাকে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক।

জানা গেছে, বিদেশে সর্বনিম্ন পাঁচ বছর থেকে দেশে আসার পর বৈধ ব্যবসা বা প্রকল্প নিয়ে ব্যাংকে আবেদন করলে ঋণ দিয়ে থাকে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক। এক্ষেত্রে সবকিছু যাচাই-বাচাই করে সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত পুনর্বাসন ঋণ দিয়ে থাকে ব্যাংক।

পূণর্বাসন ঋণ নেয়ার বিভিন্ন খাত:
১. কৃষি ঋণ প্রকল্প।
২. মাঝারী ধরণের কৃষি নির্ভর শিল্প ঋণ প্রকল্প।
৩. মুরগীর খামার প্রকল্প।
৪. মৎষ চাষ প্রকল্প।
৫. বায়োগ্যাস প্লান্ট প্রকল্প।
৬. সৌর জ্বালানী খাত প্রকল্প।
৭. তথ্য প্রযুক্তি নির্ভর উদ্যোক্তা ঋণ প্রকল্প।
৮. একটি বাড়ী একটি খামার প্রকল্প।
৯. নারী উদ্যোক্তাদের জন্য ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প প্রকল্প।
১০. গরু মোটাতাজাকরণ প্রকল্প।
১১। দুগ্ধ উৎপাদনকারী খামার প্রকল্প।

ঋণ পাওয়ার প্রাথমিক যোগ্যতা:
১. পূণর্বাসন ঋণ নেয়ার জন্য আবেদনকারীকে বিদেশ ফেরত হতে হবে এবং তার বৈধ কাগজ-পত্র থাকতে হবে।
২. আবেদকারীকে বিদেশ থেকে ফিরে আসার পাঁচ বছরের মধ্যে আবেদন করতে হবে।
৩. প্রাথমিকভাবে বৈধ ব্যবসা বা প্রকল্প শুরু করার পর আবেদন করতে হবে।
৪. জামানতের জন্য দেয়া সম্পত্তি আবেদনকারীর নিজ অথবা পিতার নামে থাকতে হবে।
৫. ঋণ নেয়ার সময় জামানত হিসেবে দেয়া সম্পত্তির মালিকানার দলিলসহ অন্যান্য কাগজপত্র জমা দিতে হবে।

ঋণ নেয়ার জন্য যেসব কাগজপত্র জমা দেয়া লাগবে:
১. আবেদনকারীর পারিবারিক তথ্য সংবলিত জীবন বৃত্তান্ত।
২. আবেদনকারীর সদ্য তোলা তিন কপি সত্যায়িত ছবি, ভোটার আইডি কার্ডের সত্যায়িত ফটোকপি, বর্তমান ঠিকানা এবং স্থায়ী ঠিকানা সংবলিত পৌরসভা  বা ইউনিয়ন পরিষদের সার্টিফিকেটের সত্যায়িত ফটোকপি।
৩. হাল নাগাদ ট্রেড লাইসেন্সের ফটোকপি।
৪. প্রকল্পের বিস্তারিত বিবরণসহ ঠিকানা, তবে নতুন প্রকল্প হলে আগামী দুই বছরের সম্ভাব্য আয়-ব্যয় বিবরণী।
৪. প্রকল্পের স্থান: (ক) ভাড়া করা হলে চুক্তিপত্রের ফটোকপি, (খ) নিজস্ব জায়গা হলে মালিকানার প্রমাণপত্র, (গ) পুরোনো প্রকল্প হলে দুই বছরের লাভ-লোকসানের হিসাব ও ঋণ গ্রহীতার নিজস্ব বিনিয়োগের পরিমাণের তথ্য জমা দিতে হবে।
৫. জামানত হিসেবে জমির দলিল বা পর্চা অথবা খারিজ খতিয়ান ও হাল সনের খাজনার দাখিলের সত্যায়িত ফটোকপি।
৬. জামিনদারদের প্রত্যেকের সদ্য তোলা দুই কপি করে সত্যায়িত ছবি, ভোটার আইডি কার্ডের সত্যায়িত ফটোকপি, বর্তমান ঠিকানা এবং স্থায়ী ঠিকানা সংবলিত পৌরসভা বা  ইউনিয়ন পরিষদের সার্টিফিকেটের সত্যায়িত ফটোকপি।
৭. জামিনদারের আর্থিক সংগতির কাগজপত্র।
৮. বিদেশ থেকে ফিরে আসা সংক্রান্ত যাবতীয় কাগজপত্রের সত্যায়িত ফটোকপি।
৯. আবেদনকারীর অভিজ্ঞতার সনদপত্র: ক) হাঁস-মুরগী পালন, গরু-ছাগল পালন, মৎস চাষ ইত্যাদি প্রকল্পের জন্য কোন প্রশিক্ষণ বা অভিজ্ঞতা থাকলে তার সনদপত্র, খ) হাতের কাজ, আসবাবপত্র তৈরি ও অন্য কোন পেশার অভিজ্ঞতা থাকলে তার বিবরণ।
১০.আর্থিক ও সামাজিকভাবে প্রতিষ্ঠিত দুইজন ব্যক্তির নাম, ঠিকানা ও ফোন নম্বর।
১১.ঋণ সংক্রান্ত তথ্যাবলী: ক) ব্যক্তিগত ঋণের বিবরণ ( অন্য কোন ঋণ থাকলে তার বিবরণী), খ) কোন সংস্থা, এনজিও, ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে থাকলে তার বিবরণ।
১২.ঋণ ফেরত দেয়ার হলফনামা।

ঋণ পরিশোধের চার্জ ও নিয়মাবলী:
১. এই ঋণের সুদের হার ১১ শতাংশ।
২. প্রকল্পের ধরন অনুযায়ী ঋণের গ্রেস পিরিয়ড নির্ধারিত হবে।

এসব বিষয়ে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ জসীম উদ্দিন ডেইলি বাংলাদেশকে বলেন, পুনর্বাসন ঋণ নেয়ার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ প্রাথমিকভাবে আবেদন করতে হয়। প্রাথমিক আবেদন গ্রহণ করা হলে ঋণ সম্পর্কিত মূল ফরমটি পূরণ করে জমা দিতে হয়। এরপর যাচাই-বাচাই শেষে ঋণ দেয়া হয়।

 

ব্যাংকের এসিসটেন্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট হাসনা হেনা পারভীন বলেন, যারা বিদেশে কমপক্ষে ৫ বছর থাকার পর কোনো কারণে দেশে ফিরে আসেন তাদেরকেই পুনর্বাসন ঋণ দেয়া হয়। কেউ যদি বিদেশ যাওয়ার কয়েকমাস পর ফিরে আসেন তাকে এই ঋণ দেয়া হয় না।

তিনি আরো বলেন, ঋণের সর্বনিম্ন পরিমাণ নির্ধারিত না থাকলেও সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা ঋণ দেয়া হয়। তবে বিদেশে অপরাধের সঙ্গে জড়িত থেকে শাস্তি পেয়েছেন, এমন কাউকে এ ঋণ দেয়া হয় না বলেও জনান তিনি।

ডেইলি বাংলাদেশ

 

পাঠকের মতামত

পবিত্র ঈদুল ফিতর আজ

‘ঈদ এসেছে দুনিয়াতে শিরনি বেহেশতী/দুষমনে আজ গলায় গলায় পাতালো ভাই দোস্তি’- জাতীয় কবি কাজী নজরুল ...