প্রকাশিত: ০৩/১০/২০১৯ ৬:০৭ পিএম , আপডেট: ০৩/১০/২০১৯ ৬:১৩ পিএম

অ্যাপোলো হাসপাতাল ঢাকা প্রতিষ্ঠিত হয় ২০০৫ সালে। চারজন দূরদৃষ্টিসম্পন্ন শিল্পপতি বন্ধু দেশে মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার লক্ষ্যে করপোরেট খাতে একটি বিশেষায়িত হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেন। বন্ধুরা হলেন অ্যাপোলো হাসপাতাল ঢাকার বর্তমান চেয়ারম্যান বব ডাব্লিউ কুন্দানমাল, ম্যানেজিং ডিরেক্টর খন্দকার মনির উদ্দিন ও মো. এ মঈন, টিপু মুনশি। এই চারজন মিলে হাসপাতালটি প্রতিষ্ঠা করেন।

তাঁরা মানসম্পন্ন স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকরণে এতটাই দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ছিলেন যে, হাসপাতালটি প্রতিষ্ঠার দুই বছর পর এটি জয়েন্ট কমিশন ইন্টারন্যাশনালের অনুমোদন অর্জন করে। বর্তমানে অ্যাপোলো হাসপাতাল ঢাকাই বাংলাদেশের সর্বপ্রথম ও একমাত্র অনুমোদিত হাসপাতাল।

অ্যাপোলো হাসপাতালটি অ্যাপোলো হাসপাতাল এন্টারপ্রাইজ লিমিটেড (বৃহৎ স্বাস্থ্যসেবা গ্রুপ) ও এসটিএস হোল্ডিংস লিমিটেডের যৌথ উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয়। হাসপাতালটি বর্তমানে ১৪ বছরে পদার্পণ করেছে।
সেবা
অ্যাপোলো হাসপাতালে সব জরুরি ও জটিল বিষয়ের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়। বিশেষত দুর্ঘটনা ও জরুরি চিকিৎসাসেবা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দেওয়া হয়। হাসপাতালটির উন্নত চিকিৎসা কেন্দ্রগুলো হলো নিউরোসায়েন্স (নিউরোলজি ও নিউরোসার্জারি), কার্ডিয়াক সায়েন্স (ইন্টারভেনশনাল কার্ডিওলজি ও কার্ডিওভাসকুলার থোরাসিক সার্জারি), বোন অ্যান্ড জয়েন্ট সার্ভিসেস, কম্প্রিহেনসিভ ক্যানসার সার্ভিসেস – অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপন সুবিধাসহ, নেফ্রোলজি ও ইউরোলজি, গ্যাসট্রোএন্ট্রোলজি ও হেপাটোলজি, নারী-শিশু ও ফার্টিলিটি সেন্টার। ক্রিটিক্যাল কেয়ার : মেডিকেল, সার্জিক্যাল, নিওনেটাল, পেডিয়াট্রিক, নিউরো, কার্ডিয়াক আইসিইউ (নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র)। হাসপাতালে মোট ২৬টি বিভাগ রয়েছে। এপয়েন্টমেন্ট নির্ধারণে কল সেন্টার ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকে।
এ ছাড়া বিশেষ চিকিৎসাগুলো হলো আইভিএফ (ইনভিট্রো ফার্টিলাইজেশন), কিডনি প্রতিস্থাপন, এইচএসসিটি (হেমাটোপোয়েটিক স্টেম সেল প্রতিস্থাপন), ইন্টারভেনশনাল রেডিওলজি, শিশু বিকাশ কেন্দ্র (সিডিসি), স্পাইন সার্জারি (কাইফোসিস-স্কোলিওসিস কারেকশন, স্পাইন টিবি, স্পাইনাল টিউমার, ভারটিব্রোপ্লাসটি, সারভাইকাল স্পাইন সার্জারি), কেআইডিইউ (চাইল্ড কিডনি ও ইউরোলজি ক্লিনিক), ইন্টারভেনশনাল কার্ডিওলজি, কার্ডিওথোরাসিক সার্জারি, নিউরো সার্জারি ও নিউরোলজি। অন্তর্বিভাগে ৪৫০ শয্যা সুবিধা রয়েছে। এর মধ্যে ১০০টি আইসিইউ সুবিধাসম্পন্ন।

অ্যাপোলো হাসপাতাল ঢাকার রোগীদের ফিডব্যাক থেকে দেখা যায় : তাপসী রানী সাহা নামের একজন রোগীর অভিমত, ‘অ্যাপোলো হাসপাতাল ঢাকা বাংলাদেশের অন্যতম একটি হাসপাতাল। এখানে সব ধরনের সেবার মানই বেশ ভালো। আমরা এর সেবায় বেশ খুশি।’
আরেক রোগী রোকেয়া সাঈদ জানান, ‘এখানে চিকিৎসক এবং নার্সরা বেশ চমৎকার।’

বর্তমান অবস্থা
শেয়ারহোল্ডারের বিনিয়োগের মাধ্যমে হাসপাতালের অর্থায়ন করা হয়। বর্তমানে ভারতের বিখ্যাত প্রতিষ্ঠান থেকে আগত চিকিৎসকরা অ্যাপোলো হাসপাতাল ঢাকায় চিকিৎসাসেবা দিয়ে থাকেন। রোগীর চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে রয়েছে ২০৭ জনের চিকিৎসকদল। যাদের মধ্যে রয়েছে রেসিডেন্ট, রেজিস্ট্রার, স্পেশালিস্ট অ্যাসোসিয়েট কনসালটেন্ট। অ্যাপোলো হাসপাতাল ঢাকায় ২৬টি বিশেষায়িত বিভাগে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়।
বর্তমানে গড়ে প্রতিবছর ৩৫ হাজার রোগীকে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয় এবং নয় হাজার অস্ত্রোপচার করা হয়। বহির্বিভাগে চিকিৎসাসেবা শুরু হয় সকাল থেকেই। শুক্রবারেও বহির্বিভাগ খোলা থাকে। হাসপাতালটিতে রয়েছে সুশিক্ষিত নার্সিং স্টাফ। যাঁদের মধ্যে রয়েছেন ফিলিপাইন, শ্রীলঙ্কা ও ভারত থেকে আগত নার্স।
২৮৬ জন চিকিৎসকের মধ্যে ৭৯ জন কনসালটেন্ট ও ২০৭ জন নন-কনসালটেন্ট চিকিৎসক যাঁরা মেডিকেল সার্ভিসের অধীনে ২৬টি বিভাগে কর্মরত আছেন। হাসপাতালে ১৪ জন বিদেশি চিকিৎসকও রয়েছেন।
বিজনেস ডেভেলপমেন্ট বিভাগের ডিরেক্টর এনায়েতুল্লাহ খান বলেন, ‘অ্যাপোলো হাসপাতাল ঢাকা, ভারতের চেন্নাইয়ের সঙ্গে যুক্ত। আমাদের এখানে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার বিষয়টিকে বিশেষভাবে নজর দেওয়া হয়। ফ্লোর ক্লিনার থেকে শুরু করে নার্সদের ভালোভাবে ট্রেনিং দেওয়া হয়। এখানে প্রত্যেকেই একটি বন্ধুসুলভ পরিবেশ বজায় রাখার চেষ্টা করেন।
দরিদ্র রোগীদের আর্থিক অবস্থা বিবেচনায় না এনে রোগীর জীবন ও অঙ্গ রক্ষায় দরকারি চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়। বিশেষত রানা প্লাজায় ট্র্যাজেডিতে আহত ও পঙ্গু রোগীদের চিকিৎসায় অ্যাপোলো হাসপাতাল ঢাকা বিশেষ ভূমিকা রেখেছে।’
সিঙ্গেল বেড এবং কেবিনের মূল্য তালিকা
• শেয়ার সুপিরিয়র চার হাজার ৮০০ টাকা
• সুপিরিয়র আট হাজার ৮০০ টাকা
• ডিলাক্স বেড নয় হাজার ৫০০ টাকা
• স্যুট ২০ হাজার টাকা
নতুন রোগীদের জন্য রয়েছে এককালীন নিবন্ধন পদ্ধতি। এতে রোগীকে একটি ইউনিক হাসপাতাল আইডি নম্বর (ইউএইচআইডি) ও ফটো সম্বলিত একটি কার্ড দেওয়া থাকে। যার মাধ্যমে রোগীরা বিশেষজ্ঞের বহির্বিভাগ সেবা, রোগ নিরূপণকারী ল্যাব সার্ভিস গ্রহণ করতে পারে। রোগীরা বহির্বিভাগ ও জরুরি বিভাগের মাধ্যমে অন্তর্বিভাগেও ভর্তি হতে পারে।
ঠিকানা
প্লট : ৮১, ব্লক : ই, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা, ঢাকা-১২২৯।

পাঠকের মতামত

একটি পেঁয়াজের ওজন ৯ কেজি

বিশ্বের সবচেয়ে বড় পেঁয়াজ ফলাতে সক্ষম হয়েছেন ব্রিটিশ এক কৃষক। গিনেজ বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস ...