প্রকাশিত: ১৭/০১/২০১৭ ১০:২৯ এএম

নিউজ ডেস্ক::

বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) নিবন্ধন পাননি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রামের (ইউএসটিসি) এমবিবিএস কোর্সে ভর্তি হওয়া ১ হাজার ১০৪ জন শিক্ষার্থী। নিবন্ধনের দাবিতে গতকাল সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটক, প্রশাসনিক ভবন ও একাডেমিক ভবনগুলোতে তালা ঝুলিয়ে দেন তারা। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা ইউএসটিসিতে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল হাসপাতাল (বিবিএমএইচ) ছেড়ে অন্যত্র চলে যেতে বাধ্য করেন রোগীদের।

সূত্র জানায়, ইউএসটিসির এমবিবিএস শ্রেণির প্রতি ব্যাচে ৭৫ জন দেশি এবং ২৫ জন বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তির অনুমোদন রয়েছে বিএমডিসির। কিন্তু এ নিয়মের তোয়াক্কা না করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ২০১০-১১ সালে ২৫তম ব্যাচে ২১০ জন দেশি এবং ২০০ জন বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি নেন। ২৬তম ব্যাচে ২৬৩ জন দেশি ও ১৫১ জন বিদেশি এবং ২৭তম ব্যাচে ১৪৯ জন দেশি ও ১৩১ জন বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি নেন। আগামী মাসে ২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষের ৪১০ জন শিক্ষার্থীর চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশগ্রহণের কথা। প্রথম বর্ষেই বিএমডিসির নিবন্ধন পাওয়ার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত নিবন্ধন পাননি তাদের কেউই। নিবন্ধনের ব্যাপারে গত কয়েক বছর ধরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে জানিয়ে আসছিলেন শিক্ষার্থীরা। ছাত্রছাত্রীদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ ব্যাপারে কোনো উদ্যোগ নেয়নি। এজন্য গত বুধবার থেকে কয়েকবার বিশ্ববিদ্যালয়সংলগ্ন জাকির হোসেন রোড অবরোধ, কাস বর্জনসহ বিভিন্ন আন্দোলন চালিয়ে আসছিলেন শিক্ষার্থীরা। সর্বশেষ গতকাল সকাল থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সংযোগকারী জাকির হোসেন সড়ক অবোরধসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেয় তারা। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ধরনের শিক্ষা কার্যক্রম স্থগিত হয়ে যায়। হাসপাতালে ভর্তি থাকা রোগীদের অন্যত্র চলে যেতে বাধ্য করেন শিক্ষার্থীরা।

২৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ সাইফ আমাদের সময়কে বলেন, ভর্তি হওয়ার প্রথম বছরেই বিএমডিসির নিবন্ধন পাওয়ার কথা। শিক্ষাবর্ষের শেষপর্যায়ে এসেও আমাদের নিবন্ধন হয়নি। এতে আমাদের ভবিষ্যৎ জীবন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এতদিন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাদের আশ্বাস দিয়ে আসছিল। কিন্তু এর কোনো অগ্রগতি না হওয়ায় আমরা আন্দোলন করতে বাধ্য হয়েছি।

এ বিষয়ে ইউএসটিসি উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. নুরুল আবছার আমাদের সময়কে বলেন, জাতীয় অধ্যাপক নুরুল ইসলাম উপাচার্যের দায়িত্ব পালনকালে অতিরিক্ত শিক্ষার্থী ভর্তি করানো হয়েছিল। পরবর্তীতে যথাযথ নিয়ম অনুসরণ করেই শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়। কিন্তু পূর্বে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের নিবন্ধন সংক্রান্ত জটিলতা নিরসন করা সম্ভব হয়নি। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা বলে এ সমস্যা সমাধানের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. প্রভাত চন্দ্র বড়–য়া ঢাকা গেছেন।

অভিযোগ রয়েছে, নির্দিষ্ট সংখ্যক ছাত্রছাত্রী ভর্তির ব্যাপারে বিএমডিসির বাধ্যবাধকতা সত্ত্বেও কেবল আর্থিক লাভালাভের বিষয়টি মাথায় রেখেই বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী এখানে ভর্তি করা হয়। প্রত্যেক ছাত্রছাত্রীকে এখানে এমবিবিএস কোর্সে ভর্তির জন্য ফি হিসেবেই নেওয়া হয় ১৪ থেকে ১৬ লাখ টাকা। এর পর প্রতি মাসে ফি নেওয়া হয় ৮ হাজার টাকা। কিন্তু যোগ্য শিক্ষক না থাকায় যথাযথ শিক্ষাও পান না শিক্ষার্থীরা। তার ওপর নিয়মবহির্ভূতভাবে ভর্তি করা শিক্ষার্থীরা এখন বিএমডিসির সনদ পাচ্ছে না। এই সনদ না পেলে ওইসব শিক্ষার্থীরা এমবিবিএস ডিগ্রি কোথাও ব্যবহার করতে পারবেন না।

রোগীদের হাসপাতাল ত্যাগ: মুখে খেতে না পারায় গত পাঁচ দিন ধরে ইউএসটিসি মেডিক্যাল হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন হাজেরা বেগম (৭২)। শিক্ষার্থীদের অন্দোলনের কারণে হাসপাতাল ছেড়ে অন্যত্র চলে যেতে হয় তাকে।

হাজেরা বেগমের মেয়ে পিয়ারা বেগম জানান, সকাল থেকে হাসপাতাল এলাকায় শিক্ষার্থীরা হই চই করছিল। দুপুরে এসে কিছু শিক্ষার্থী বলেন, ‘এখানে চিকিৎসা হবে না, রোগীকে নিয়ে অন্য হাসপাতালে চলে যান। হঠাৎ করেই হাসপাতালের সকল বিল জোগাড় করে তা পরিশোধ করে মাকে নিয়ে অন্য হাসপাতালে চলে যেতে হচ্ছে। আমাদের সময়

পাঠকের মতামত

আজ পহেলা বৈশাখ

আজ রোববার (১৪ এপ্রিল) পহেলা বৈশাখ-বাংলা নববর্ষ। বাংলা বর্ষপঞ্জিতে যুক্ত হলো নতুন বাংলা বর্ষ ১৪৩১ ...

বান্দরবানে যৌথ বাহিনীর অভিযান পরিচালিত এলাকায় ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা

বান্দরবানে সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান পরিচালিত রুমা,রোয়াংছড়ি ও থানচি এলাকায় পর্যটকদের ভ্রমণ নিরুৎসাহিত করছে বান্দরবান জেলা প্রশাসন। ...

বাসের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সড়কে দুই মোটরসাইকেল আরোহী নিহত

পটিয়ায় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় দুই আরোহী নিহত হয়েছে। নিহতরা হলেন- বোয়ালখালী উপজেলার পশ্চিম গোমদন্ডী এলাকার মোঃ ...