প্রকাশিত: ২৮/০৬/২০১৯ ৮:৫১ এএম

হ্যালো এনজিও কর্মী প্রমা ইসরাত!

আপনাকে ব্যক্তি আক্রমণ করে কিছু বলার মতো অসভ্য আমরা নই। গতকাল থেকে লক্ষ্য করলাম আপনার সে কী লম্ফঝম্প। ভিন জেলা থেকে এখানে এসেছেন নিজেদের পেটের বন্দোবস্ত করতে। অথচ সেই আপনি/আপনারাই কীনা কতগুলো রিপোর্টেড প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা হয়ে যে ভাষায় কক্সবাজারের লোকজনদের তুচ্ছতাচ্ছিল্য করলেন তা কোনোভাবেই মেনে নেওয়ার মতো নয়। আপনি আমার জেলার চাকুরিপ্রার্থীদের নিয়ে যেসব কথা তুলে ধরেছেন ওসব কথাগুলোই মূলত এজেলার ছেলেমেয়েদের সংশ্লিষ্ট চাকরিতে যুক্ত হতে সবচেয়ে বড় যোগ্যতা।

প্রিয় প্রমা দি!

রোহিঙ্গা ক্যাম্পের চাকুরি এমন কোনো চাকুরি নয় যে কর্মীদের অন্যান্য হোয়াইট কলার জবের মতো ফিটফাট থাকতে হবে। জুতা স্যান্ডেল এগুলো আমাদের শৈল্পিকতা। কতগুলো দেশ বিতাড়িত অবৈধ শরণার্থীদের মাঝে সেবার কাজ করতে এতো কি ব্যাংক জবের মতো ফিটফাট বেশ নিতে হবে শুনি?? নাকি এদের কোনো হোটেলের বেলডেস্কে কিংবা শো-রুমে এক্সিভিশন করাবেন??

মজার ব্যাপার হলো যাদের উপলক্ষ্য করে আপনারা দুরদুরান্ত থেকে হন্য হয়ে চাকুরি করতে ছুটে এসেছেন তাদের পেট-পিঠ সংকুলানের জায়গাটা আমরা স্থানীয়রাই করে দিয়েছি। আমরাই যত জ্বালা যন্ত্রনায় ভুগছি, ভুগে আসছি। কি এমন যোগ্যতা সম্পন্ন আপনারা হয়ে গেলেন শুনি, স্থানীয়দের কটাক্ষ করে পার পেয়ে যাবেন বলে ভাবছেন? অর্থনীতির অ বোঝেন? সমাজনীতির স বুঝেন? ভূগোলের ভ বুঝেন? প্রায় ১০ লাখ মতান্তরে ১৬লাখ রোহিঙ্গার আকস্মিক আগমনে কক্সবাজারের জনগোষ্ঠীর উপর কী পরিমাণ চাপ পড়েছে এটা কি আপনারা একবারও অনুধাবন করেছেন? সবকিছুর আকস্মিক মূল্যবৃদ্ধি অথচ প্রডাক্টিভিটি নেই। এগুলো কি আমরা সাফার করছি না? আমরা তো আগে আমাদের মতো করে ভালোই ছিলাম। সমগ্র বাংলাদেশের মধ্যে কক্সবাজার চট্টগ্রাম একমাত্র অঞ্চল যাদের নিজস্ব অর্থনৈতিক ভিত্তি এবং মজবুত অবস্থান রয়েছে। চিংড়ি, লবণ, পর্যটন, মৎস, জলবন্দর এসব নিয়ে অত্র অঞ্চলের লোকজন যথেষ্ট আত্মনির্ভরশীল ছিলো। এমনও দেখেছি আমাদের জনগোষ্ঠীর কোনো কোনো সম্প্রদায় তিন মাস মৎস শিকার করছে আর বাকী নয় মাস পায়ের উপর পা তুলে তুলে খেয়েছে। কারও দ্বারস্থ হতে হয়নি। কোনোদিন চাকরির জন্য হন্য হয়ে ঢাকা শহরে ঘুরে বেড়াতে হয়নি। আজকে আমাদের সন্তানদের এই দশা কেনো? এগুলো কি একটা বারও ভেবে দেখেছেন? অথচ বহিঃজেলা থেকে যেভাবে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে এতে করে কক্সবাজারে কোনো টাকাই থাকছে না। সিংহভাগ টাকা জেলার বাহিরে চলে যাচ্ছে। অন্যদিকে এই জেলার মানুষ নিয়মিত নানাবিধ যন্ত্রণা ভোগ করে যাচ্ছে।

এনজিও দাদাদের বলছি!

রোহিঙ্গা ক্যাম্পের চাকরির জন্য শতভাগ যোগ্যতম হলো কক্সবাজার চট্টগ্রাম বেল্টের লোকজন। কারণ রোহিঙ্গাদের আপনারা যেভাবে মিনিমাম আমি তুমি কেমন আছো ভাষায় কথা বলছেন তারা একটু একটু করে হলেও শিখতে থাকবে প্রমিত বাঙলা। এভাবে বাংলা সম্পর্কে তাদের একটি ধারণা চলে আসবে দিনে দিনে। এটি একসময় গিয়ে রাষ্ট্রকে দারুণ ভুগাবে। কিন্তু চট্টগ্রাম বেল্টের লোকজন তাদের সাথে যেভাবে ট্রিট করার সেভাবেই করতে জানে এবং করবে। কারণ তাদের ভাষা এবং আমাদের ভাষা প্রায় কাছাকাছি। যতই চর্চা করুন না কেনো আপনাদের মুখ দিয়ে কখনওই এত সহজে ‘আঁই তুই বদ্দা হদ্দা গুটগুইট্যা গাচর গুইট্যা’ এসব কথা বের হবে না।

শাহনেওয়াজ জিল্লু

শাহনেওয়াজ জিল্লু
এছাড়াও আরও অনেক কথা বিস্তারিত বলতে গেলে দশ পাতা লিখেও শেষ করা যাবে না। আজ এপর্যন্ত লিখলাম। যদি আপনাদের এরপরও বোধদয় না হয় তাহলে আরও কড়া ধাচের কথা বলতে বাধ্য হবো।

সম্প্রতি এটাও লক্ষ্য করেছি আপনার মতো শত শত প্রমা এখন স্থানীয় জনগোষ্ঠীর সমালোচনা করে বলতে শুরু করেছেন। এগুলো অনতিবিলম্বে বন্ধ করুন। স্থানীয়দের এতো ঠ্যাকা পড়ে নাই যে আপনাদের মতো নম নম করে বসকে ত্যালিয়ে তুলিয়ে মাস শেষে বেতন তোলার। কাজের বেলায় টনটন আর ত্যালে থাকেন ভরপুর। এজেলার লোকজন এসবে অভ্যস্থ না। আমরা সবসময়ই স্বাধীনচেতা ছিলাম আছি এবং থাকবো।

বি.দ্র: কক্সবাজারের জনগোষ্ঠীর বৈধ অধিকারের স্বার্থে আমি জাতীয়তাবাদকেও পরিহার করি। আমি স্রেফ কক্সবাজারবাদী।

জয় বাংলা, জয় কক্সবাজারের জনগোষ্ঠী!

শাহনেওয়াজ জিল্লু

২৭.০৬.১৯ ইং

[email protected]

পাঠকের মতামত

নতুন রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকানোই যখন বড় চ্যালেঞ্জ!

মিয়ানমারের তিনটি প্রধান এথনিক রেজিস্ট্যান্ট গ্রুপ—তাং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি (টিএনএলএ), মিয়ানমার ন্যাশনাল এলায়েন্স (এমএমডিএ) এবং ...

একটি ফুল—

একটি ফুল, একটি ফুলের জন্যে কতো নিষ্পাপ গাছ প্রাণ হারালো, এই বর্বর শুকোনের দল বারংবার ...