প্রকাশিত: ২৫/০২/২০২০ ১০:১২ এএম

সৈয়দুল কাদের :
জেলাব্যাপী বিভিন্ন মেগা প্রকল্প ও রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কর্মরত সকল বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা (এনজিও) থেকে যেন স্থানীয় লোকবল ছাটাইয়ের মহোৎসব চলছে। ভিন্ন জেলা থেকে আসা কর্মকর্তারা নিজস্ব লোক নিয়োগ করতে স্থানীয়দের ছাটাই করছে এমন অভিযোগ রয়েছে। যার ফলে স্থানীয়দের মাঝে হতাশা বিরাজ করছে।
জেলাব্যাপী বিভিন্ন প্রকল্প থেকে স্থানীয়দের ছাটাই করছে একটি অসাধু চক্র। তৎমধ্যে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কর্মরত বিভিন্ন এনজিও সংস্থা থেকেই বেশি ছাটাই চলছে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কর্মরত একজন এনজিও কর্মী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, তিনি নেদারল্যান্ড সংস্থায় কাজ করেন। ওই সংস্থায় যারা বড় কর্মকর্তা আছেন তাদের প্রায় সবাই ভিন্ন জেলার। কক্সবাজারের স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে এনজিওতে কর্মরত তেমন কোন বড় কর্মকর্তা নেই। ভিন্ন জেলা থেকে আগত কর্মকর্তারা তাদের নিজ জেলা থেকে লোকদের নিয়োগ দিতে ছাটাই করা হচ্ছে স্থানীয়দের। যোগ্যতা থাকলেও স্থানীয়দের বিভিন্ন কৌশলে চাকরিচ্যুত করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে অসংখ্য কর্মীকে এনজিও থেকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। কোন প্রতিবাদ কর্মসূচী দিলে স্থানীয়দের নিয়োগের নামে যা করা হয় তা সবই লোকদেখানো। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা থেকেও একই কায়দায় কর্মচারী ছাটাই করা হচ্ছে। এসব ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ভিন্ন জেলার লোকদের টাকার বিনিময়ে নিয়োগ দেওয়ার অভিযোগও আছে।
বিদেশী এনজিওতে কর্মরত সিনিয়র কর্মকর্তা মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম জানিয়েছেন, সব এনজিও এ কাজে জড়িত নয়। কিছু এনজিও আছে যারা এখনো স্থানীয়দের অগ্রাধিকার দিয়ে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। রোহিঙ্গাদের কারণে স্থানীয়রা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এতে যদি অগ্রাধীকার ভিত্তিতে চাকরি না পায় তা হতাশাজনক। আমাদের এনজিওতে ৭৫% কর্মী স্থানীয়।
এদিকে মহেশখালীর মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পে স্থানীয় শ্রমিকদের ছাটাইয়ের মহোৎসব চলছে। কৌশলে স্থানীয়দের শ্রমিকদের ছাটাই করছে দুই আন্তর্জাতিক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ৬ কর্মকর্তা। তারা নিজস্ব লোকজনের নামে সাব-ঠিকাদারির প্রতিষ্ঠান খুলে কাজ করার অভিযোগ রয়েছে। এসব প্রকল্পে স্থানীয় এজেন্টের মাধ্যমে ঘুষের বিনিময়ে চাকরি দিচ্ছেন বহিরাগতদের। এ ছাড়া কমিশনের ভিত্তিতে কাজ দিচ্ছেন স্থানীয় কয়েকটি নির্ধারিত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে। ফলে স্থানীয় শ্রমিকরা বেকার হওয়ার পাশাপাশি স্থানীয় ব্যবসায়িরাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
মাতারবাড়িতে দুটি কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়াও একটি বাণিজ্যিক বন্দরের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। জাপানি সংস্থা জাইকার অর্থায়নে নির্মাণাধীন একটি প্রকল্পে বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণের মূল দায়িত্বে রয়েছে ১২টি আন্তর্জাতিক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এসব প্রতিষ্ঠানের অধীনে কাজ করছে ৩০টির অধিক সাব-ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। প্রকল্পে কর্মরত শ্রমিক ও স্থানীয় ঠিকাদারদের অভিযোগ, দুই আন্তর্জাতিক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দক্ষিণ কোরিয়ার পস্কো লিমিটেড ও জাপানের পেন্টাওশানে কর্মরত ৬ কর্মকর্তা দুর্নীতিতে জড়িত।
কয়েকজন শ্রমিক অভিযোগ করেন পস্কো কোম্পানিতে কর্মরত জসিম উদ্দিন, শাহ-নেওয়াজ নীল, আল-আমিন ও সুমনের নেতৃত্বে গড়ে তুলেছে একটি বিশাল সিন্ডিকেট। স্থানীয় কয়েকজন দালালের মাধ্যমে স্থানীয় শ্রমিকদের ছাটাই করে বহিরাগত লোকদের টাকার বিনিময়ে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায় দেশের এই বৃহত্তম প্রকল্পে স্থানীয়দের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নিয়োগ দিতে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি গোপন রেখে কতিপয় কর্মকর্তা এসব অপকর্ম করে যাচ্ছে।
কোল পাওয়ার জেনারেশনের প্রধান প্রকৌশলী মনিরুল ইসলাম জানিয়েছেন, এমন অভিযোগ নিয়ে কেউ যোগাযোগ করেনি। আমরা চাই প্রধানমন্ত্রীর এই অগ্রাধিকার প্রকল্প স্বচ্ছতার মাধ্যমে বাস্তবায়ন করতে। এর বাইরে আমাদের কিছু ভাবছি না।
জেলা প্রশাসক মোঃ কামাল হোসেন জানিয়েছেন, এমন কোন অভিযোগ এখনো পাইনি। কোন অভিযোগ পেলে বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সুত্র: দৈনিক কক্সবাজার

পাঠকের মতামত

পুলিশ থেকে বাঁচতে জীবনটাই দিলেন সিএনজিচালক

গ্রামের চন্দনাইশে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে সিলিন্ডার বিস্ফোরণে এক সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালকের মৃত্যু হয়েছে। পুলিশ দেখে পালাতে গিয়ে ...

চট্টগ্রাম – কক্সবাজার সড়কে চলন্ত সিএনজিতে সিলিন্ডার বি’স্ফোরণ, চালক নিহত

চট্টগ্রাম – কক্সবাজার সড়কে চন্দনাইশ এলাকায় চলন্ত সিএনজি অটোরিকশার সিলিন্ডার বিস্ফোরণের পর আগুনে দগ্ধ হয়ে ...