প্রকাশিত: ১৮/০৯/২০১৮ ৭:৪১ এএম , আপডেট: ১৮/০৯/২০১৮ ১০:৪৬ এএম

নিউজ ডেস্ক::
ভাই আমার ৩টি দোকান ৬ দিন যাবৎ বন্ধ। ভেতরের সব মালামাল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে । সব ফলমূলের দোকানের একই অবস্থা। ব্যবসার প্রসারের জন্য দেশেও যেতে পারছিনা। ১৫ বছরের মধ্যে এমন অবস্থার কখনো সম্মুখীন হয়নি। কথাগুলো কান্নাজড়িত কন্ঠে সৌদি আরবের মিসপালা থেকে গতকাল বলছিলেন সদরের ঈদগাও মাইজপাড়ার আবদুর রহিম। পিএমখালীর নয়াপাড়ার মোবারক হোসেন ১২ বছর যাবৎ মক্কায় ঘড়িসহ ইলেক্ট্রনিক্সের দোকান করেন। এক যুগের মধ্যে এমন পরিস্থিতির মুখে কখনো পড়েন নি। নিজ দোকান বন্ধ করে দিগম্বর হয়ে পথ খুঁজছেন কি করা যায়। আরবি বছরের শুরুর দিন থেকে তাদের মত অন্তত লক্ষাধিক প্রবাসির দিন কাটছে ব্যবসা বানিজ্য গুটিয়ে। সৌদিয়ার জেদ্দায় প্রসাধনীর দোকান এবং সুগন্ধির দোকান করেন মুহসিনিয়াপাড়ার আবদুল আজিজ। ১৭ বছরের অধিক সময় সেখানে বসবাস করার পর পরিস্থিতি টের পেয়ে স্বপরিবারে চলে আসেন। পরিবার রেখে গত জুনে পাড়ি জমান ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দেখার জন্য। গত রবিবার তিনি পুনরায় ফিরে এসেছেন কক্সবাজারে। গতকাল সন্ধ্যায় ভারাক্রান্ত মনে জানালেন সেখানকার দুরাবস্থার কথা।তিনি জানান কক্সবাজারের অন্তত অর্ধ লক্ষ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। প্রবাসিদের অবস্থা খুবই নাজুক। এ মুহুর্তে কেউ যেন সেখানে না যান। কেননা সৌদি সরকার তাদের নিজস্ব বেকার জনগনকে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে লাখ লাখ প্রবাসির বুকে ছুরি চালাচ্ছে।
জানা যায়, সৌদি সরকারের শ্রমনীতি পরিবর্তন এবং ১২টি পেশা প্রবাসিদের জন্য বন্ধের সিদ্ধান্ত আরবি বছরের শুরুর দিন অর্থাৎ গত ১২ সেপ্টেম্বর থেকে কার্যকর করে। ফলে অন্তত ৪০ হাজার বাংলাদেশি বিভিন্ন পেশার শ্রমিক ও ব্যবসায়িদের প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায়। যে ১২টি খাতে প্রবাসিদের
কাজ করার নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে সেগুলো হল ঘড়ির দোকান, চশমার দোকান, মেডিকেল যন্ত্রাংশের দোকান, ইলেক্ট্রিক্যাল সামগ্রী এবং ইলেক্ট্রনিক্সের দোকান, গাড়ির যন্ত্রাংশের দোকান, ভবন নির্মাণ সামগ্রীর দোকান, কার্পেটের দোকান, গাড়ি এবং মোটরসাইকেলের শোরুম, গৃহস্থালী ও অফিস আদালতের আসবাবপত্রের দোকান, তৈরি পোশাক এবং শিশু ও পুরুষদের টুকিটাকি জিনিসের দোকান, গৃহস্থালি টুকিটাকি জিনিসের দোকান, পেস্ট্রির দোকান। উক্ত ১২ সেক্টরে সে দেশের ৭০ শতাংশ বিক্রয় কেন্দ্রে সৌদিকরণ বাস্তবায়নের জন্য এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজারের কয়েকজন প্রবাসি।
এদিকে সৌদিয়ার মিসপালায় অবস্থানরত প্রবাসি শ্রমিক শওকত হোসেন ও জহির উদ্দিন জানান, ১২ পেশায় অন্যদেশের শ্রমিক নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের কারনে দেশটির সব এলাকায় প্রবাসিদের দোকান চিহ্নিত করে গত কয়েক দিন অভিযান চালাচ্ছে সে দেশের আইন শৃংখলা বাহিনী। ফলে দেশটিতে বাংলাদেশিসহ হাজার হাজার বিদেশি শ্রমিক বেকার হয়ে আতঙ্কে ভুগছেন। রামু রাজারকুলের রমিজ আহমেদ নামের এক প্রবাসি জানান, এর আগে সে দেশে ১২ পেশার যে কোনো পেশায় কাজ করতে পারতো । কফিলে সমস্যা করলেও বিভিন্ন দোকানে কাজ করার সুযোগ ছিল। দেশটিতে গৃহিত ১২ পেশা নিষিদ্ধের আইন বাস্তবায়ন করায় প্রবাসীরা দিনে দিনে অসহায় হয়ে যাচ্ছে। এদেশে বহু মানুষ এই ১২ ক্যাটাগরির কাজের সঙ্গে জড়িত। সৌদির শ্রম মন্ত্রণালয়ের টিম মাঠে রয়েছে বলে জানিয়েছেন উক্ত প্রবাসি। ফলে বিপাকে পড়েছেন হাজার হাজার প্রবাসী শ্রমিক।
ফলে উক্ত ১২ পেশা এবং বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কক্সবাজারের প্রায় ৪ হাজার লোক এবং ৩ হাজার দোকান গত ১২ সেপ্টেম্বর থেকে বন্ধ রয়েছে। অনেকে সৌদি আরব ছাড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানা গেছে। সরকারের শক্তিশালী কুটনৈতিক তৎপরতা না হলে বাংলাদেশের বৃহৎ শ্রমের বাজার বন্ধ হয়ে যাবে অচিরেই এমনটাই আশংকা করছেন সেখানে অবস্থানরত উৎকন্ঠিত প্রবাসিরা। সুত্র: দৈনিক কক্সবাজার

পাঠকের মতামত

আজ পহেলা বৈশাখ

আজ রোববার (১৪ এপ্রিল) পহেলা বৈশাখ-বাংলা নববর্ষ। বাংলা বর্ষপঞ্জিতে যুক্ত হলো নতুন বাংলা বর্ষ ১৪৩১ ...

বান্দরবানে যৌথ বাহিনীর অভিযান পরিচালিত এলাকায় ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা

বান্দরবানে সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান পরিচালিত রুমা,রোয়াংছড়ি ও থানচি এলাকায় পর্যটকদের ভ্রমণ নিরুৎসাহিত করছে বান্দরবান জেলা প্রশাসন। ...

বাসের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সড়কে দুই মোটরসাইকেল আরোহী নিহত

পটিয়ায় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় দুই আরোহী নিহত হয়েছে। নিহতরা হলেন- বোয়ালখালী উপজেলার পশ্চিম গোমদন্ডী এলাকার মোঃ ...