প্রকাশিত: ১৭/০১/২০১৮ ৯:৩৬ পিএম , আপডেট: ১৭/০৮/২০১৮ ৭:৫৭ এএম

ঢাকা : ফুটপাতে হকার বসানো কে কেন্দ্র করে গতকাল প্রকাশ্যে সংঘর্ষে জড়ায় নারায়ণগঞ্জের সংসদ সদস্য এ কে এম শামীম ওসমান ও মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীর সমর্থকরা। ক্ষমতাসীন দলের এই দুই নেতার ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বের বহিঃপ্রকাশ বলে বর্ণনা করে তা নিয়ে রসিকতাও করলেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

আওয়ামী লীগের দুই নেতার উপস্থিতিতে এই সংঘর্ষ নিয়ে আলোচনার মধ্যে দুপুরে সচিবালয়ে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মোশাররফ হোসেন বলেন, মেয়র আইভী ও সাংসদ শামীম ওসমানের ‘ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বের’ বিষয়টি যে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে রূপ নেবে তা কারও ধারণায় ছিল না। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে হাসতে হাসতে তিনি বলেন, “আপনারা দুইজন পাশাপাসি বসা- একজন সুদর্শন পুরুষ আরেকজন সুন্দরী মহিলা, আপনারা যদি মারামারি করেন আমি কি করতে পারি, কন? “আমার যতদূর মনে হয়, তাদের ব্যক্তিগত সমস্যা থেকে এই ঘটনাটা ঘটতেছে।”

এই দুইজনের দ্বন্দ্ব অনেক দিনের, মনে করিয়ে দেওয়ার পর মোশাররফ বলেন, “কালকে যে ইটপাটকেলের মধ্যে সংঘর্ষ চলে যাবে এটা তো বুঝি নাই। বুঝলে আমরা ইন্টারভেন করতাম, আমরা বুঝিইনি জিনিসটা।”এই দ্বন্দ্ব-সংঘাত আর যাতে না হয় সেজন্য হস্তক্ষেপ করবেন কি না- সেই প্রশ্নে তিনি বলেন, “দুজনই আমাদের নির্বাচিত প্রতিনিধি, আমাদের দলেরই। বন্ধু-বান্ধবীর মধ্যে মারামারি হবে, এটা একটু বেশি মাত্রায় হয়ে গেছে।”

“এখন এটা যদি সরকারের ইন্টারভেনশন দরকার লাগে অবশ্যই আমরা ইন্টারভেন করব। যদিও মনে হয় বিষয়টি একেবারেই ব্যক্তিগত। তবুও আমরা রিপোর্ট চাচ্ছি কী হয়েছে। যদি পয়েন্ট অব কনফ্লিক্ট থাকে সেটা আমরা অবশ্যই মীমাংসা করব, অবশ্যই এরমধ্যে আমরা ইনভলবড হব।

“আমরা অলরেডি ডিসি-এসপির কাছে রিপোর্ট চেয়েছি। ঘটনাটি কী- জেনে দুপক্ষকে ডেকে, আমি তো করব না মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নিজেই করবেন দুপক্ষরে ডেকে নিয়ে। আর যদি উনি আমাকে দায়িত্ব দেন আমিও কথাবার্তা বলতে পারব। আমাদের দলের জেনারেল সেক্রেটারিও করতে পারেন।”

বিষয়টি নিয়ে এখন আর চুপ থাকার সুযোগ নেই মন্তব্য করে মোশাররফ হোসেন বলেন, “বিষয়টা মুখ ঘুরিয়ে রাখার বিষয় না, বিষয়টা রাস্তায় এসে গেছে। শুধু রাস্তায়ই আসেনি, ইটপাটকেলের মধ্যে চলে আসছে।” সেজন্যই আওয়ামী লীগ থেকে দুই পক্ষকে ঢাকায় ডাকা হয়েছে বলে জানান তিনি।

প্রসঙ্গত, আওয়ামী লীগ আমলেই বিভিন্ন সময়ে শামীম ওসমান ও আইভীর দ্বন্দ্বে উত্তাপ ছড়িয়েছে নারায়ণগঞ্জে। ফুটপাত থেকে হকার উচ্ছেদে সিটি করপোরেশনের উদ্যোগ নিয়ে সর্বশেষ উত্তেজনার শুরু। শামীম ওসমান হকারদের পক্ষ নিয়ে মাঠে নামার পর মঙ্গলবার বিকালে দলবল নিয়ে নগরীর চাষাঢ়া এলাকায় গিয়ে হামলার মুখে পড়েন মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী। ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও দুই পক্ষের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার মধ্যে আইভীসহ উভয়পক্ষের শতাধিক নেতাকর্মী আহত হন। পিস্তল হাতে সংঘর্ষের মধ্যে এসে ব্যাপক পিটুনি খেয়েছেন শামীম ওসমানের অনুসারী হিসেবে পরিচিত নিয়াজুল ইসলাম নামের একজন, যার অস্ত্র উঁচিয়ে ধরা ছবি বুধবার অধিকাংশ সংবাদপত্রের প্রধান খবরে এসেছে। হামলার জন্য সরাসরি শামীম ওসমানকে দায়ী করেছেন আইভী। অন্যদিকে শামীম ওসমানের দাবি, হকারদের বসাকে কেন্দ্র করে উসকানি দিয়ে গণ্ডগোল বাঁধানো হয়েছে। হকার উচ্ছেদ নিয়ে মেয়র আইভীর পক্ষে অবস্থান জানালেও পুনর্বাসন ছাড়া উচ্ছেদ নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি, যাতে শামীম ওসমানের পক্ষেও সমর্থনের প্রকাশ ঘটে।

পাঠকের মতামত

পবিত্র ঈদুল ফিতর আজ

‘ঈদ এসেছে দুনিয়াতে শিরনি বেহেশতী/দুষমনে আজ গলায় গলায় পাতালো ভাই দোস্তি’- জাতীয় কবি কাজী নজরুল ...