প্রকাশিত: ১০/০৬/২০১৯ ৭:৪৫ এএম

আরফাতুল মজিদ:
ঈদের আগে ও পরের দিন রাতের অন্ধকারে কক্সবাজার সুগন্ধা পয়েন্টস্থ সৈকতের বালিয়াড়িতে নির্মাণাধীন মার্কেট নিয়ে সর্বত্রে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বয়ে যাচ্ছে। কক্সবাজার জেলা প্রশাসনকে ইঙ্গিত করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে অবৈধ মার্কেটের ছবি ভাইরাল হয়েছে ইতোমধ্যে। বালিয়াড়ি দখল করে মার্কেট নির্মাণের ইন্ধনদাতাদের খুঁজে বের করে শাস্তির দাবী জানিয়েছে কক্সবাজারের সামাজিক আন্দোলনের নেতাসহ সর্বস্তরের লোকজন। পাশাপাশি লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়া সিন্ডিকেটের লোকজনকে আইনের আওতায় আনার দাবী জানান তারা।

এদিকে সৈকতের বালিয়াড়ির উপর রাতে মার্কেট নির্মাণের বিষয়টি নজরে আসলেই জেলা প্রশাসকের নির্দেশে প্রায় ৩০ টি মতো দোকান উচ্ছেদ করা হয় শনিবার। রাতের অন্ধকারে অবৈধ মার্কেট নির্মাণে কারা জড়িত বা ইন্ধনদাতা তা বের করতে রোববার বিকালে একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. শাহাজাহান আলীকে প্রধান করে রোবাবার তদন্ত কমিটি গঠন করা হয় বলে জানা গেছে।

এই প্রসঙ্গে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন জানিয়েছেন, ঈদের আগের ও পরের রাতে কে বা কারা বালিয়াড়িতে মার্কেট নির্মাণ করেছিল আমি জানি না। আমাকে কেউ বিষয়টি অবগতও করেনি। তবে বিভিন্ন মাধ্যামে শনিবার সকালে মার্কেট নির্মাণের বিষয়টি জানতে পারেছি। সাথে সাথে দুপুরের মধ্যে লম্বা একটি নির্মাণাধীন মার্কেট উচ্ছেদ করা হয়েছে।

ডিসি বলেন, অবৈধভাবে মার্কেট নির্মাণে যারা জড়িত তাদের আইনের আওতায় আনা হবে দ্রুত সময়ে। এমনকি জেলা প্রশাসনেরও যদি কেউ জড়িত থাকে তাদেরও ব্যবস্থা হবে। এবিষয়ে রোববার বিকালে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সমুদ্রসৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টস্থ বালিয়াড়ি দখল করে দু’পাশে অর্ধশতাধিক দোকান নির্মাণ করা হয় ঈদুল ফিতরের আগের রাতে ও পরের রাতে। প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ও কক্সবাজার সম্পদ রক্ষা আন্দোলনকারীদের চোখ ফাঁকি দিতে সরকারি ছুটিতেই রাতারাতি অর্ধশতাধিক মার্কেট নির্মাণ করা হয়। এতে প্রতিটি দোকান থেকে হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে ২ থেকে ৪ লাখ টাকা পর্যন্ত। এমনকি রাতারাতি মার্কেট নির্মাণ করতে স্থায়ী অনেক দোকান গভীররাতে ভাংচুরও করা হয়েছে। স্থায়ী দোকান ভাংচুর করে জোরপূর্বক অধিকাংশ দোকানও নির্মাণ করা হয়েছে রাতের অন্ধকারে। এর প্রতিবাদ করতে গিয়ে অপহরণপূর্বক হামলা শিকারও হয়েছে কয়েকজন ব্যবসায়ী।

স্থায়ী কয়েকজন ব্যবসায়ীর সূত্রে জানা গেছে, সুগন্ধা বীচ ঝিনুক ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. রুবেল, সুগন্ধা বীচ ঝিনুক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জাকের হোসেন, যুবদল নেতা জয়নাল, নুরুল হুদা, সী-গাল পয়েন্টস্থ ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি জালাল ও অপর ব্যবসায়ী লালুর নেতৃত্বে ঈদের ছুটিতে রাতের অন্ধকারে সুগন্ধা পয়েন্টের দু’পাশে অর্ধশতাধিক দোকান নির্মাণ করা হয়েছে। এদের নেতৃত্বে গত দুই ঈদের রাতে মার্কেট নির্মাণ করা হচ্ছে। এবারও তাদের নেতৃত্বে দু’পাশে রাতারাতি মার্কেট নির্মাণ করা হয়েছে। এসব ব্যবসায়ী নেতাদের আইনের আওতায় আনলে কার ইন্ধনে রাতারাতি মার্কেট নির্মাণ করা হয়েছে বা কোথায় কোথায় কত টাকা আদান প্রদান করেছে সব বের হয়ে আসবে।

অভিযোগ রয়েছে, রাতারাতি দোকান নির্মাণে এই ব্যবসায়ী নেতাদের ইন্ধন দিয়েছে জেলা প্রশাসনের একজন ম্যাজিস্ট্রেট। যার কারনে রাতের অন্ধকারে দোকান নির্মাণের সময় জেলা প্রশাসনের নিয়োজিত সৈকতের বেশ কয়েকজন বীচ কর্মীর উপস্থিত ছিল। তাদের উপস্থিতিতে রাতে দোকান গুলো নির্মাণ করা হয়েছে। অনেকেই গোপনে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে জেলা পর্যটন শাখা থেকে দোকান বাবদ কার্ডও সংগ্রহ করেছে বলে একটি সূত্রে জানা গেছে।

পাঠকের মতামত

মিয়ানমারে সংঘাত/টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে ঢুকল আরও ৯ বিজিপি সদস্য

মিয়ানমারের রাখাইনে সংঘাতময় পরিস্থিতিতে কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেছে মিয়ানমার সীমান্ত রক্ষী বাহিনী ...