ঢাকা: খালেদা জিয়ার সাজা নিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গন থেকে কেউ ফোন করেননি, জানতেও চাননি বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ইতালি ও ভ্যাটিকান সিটিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সদ্যসমাপ্ত সফর নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। সোমবার বিকেলে গণভবনে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সফর শেষে গত শনিবার ঢাকা ফেরেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, খালেদার সঙ্গে গৃহপরিচারিকা ফাতেমার থাকা নতুন না, সাবজেলে থাকার সময়ও ছিল। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা তার জন্য সবই ব্যবস্থা করেছি। তবে আমি শুধু বলেছি, ওর (ফাতেমার) কাছ থেকে একটা মুছলেকা নিয়ে রাখতে যে সে স্বেচ্ছায় কারাবাস করছেন। এটা এ জন্য বলেছি- যাতে কেউ আবার আদালতে সরকারের বিরুদ্ধে রিট না করে বসে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ওয়ান ইলিভেনের পর সাবজেলে থাকার সময় আমার প্রতিবেশি ছিলেন উনি (খালেদা জিয়া)। আমাকে একটা অপরিষ্কার ঘরে রাখা হয়েছিল, দেয়া হয়েছিল ইঁদুরে কাটা লেপ-তোষক। একটা ভাঙা খাট দেয়া হয়েছিল যেটা বসতেই ভেঙে পড়েছিল, যেটা ইট দিয়ে উচু করেছিলাম। আর উনাকে (খালেদা জিয়া) স্পিকারের বর্তমান বাসভবনে রাখা হয়েছিল। উনাকে গদি তিনবার পরিবর্তন করে দেয়া হয়েছিল।
শেখ হাসিনা এও বলেন, সাবজেলে থাকার সময় আমি আমার প্রতিবেশি সম্পর্কে খুবই সচেতন ছিলাম। আমার খাবার-দাবার বাড়লে সেটা আমি তার (খালেদা) জন্য পাঠিয়ে দিতাম।
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া কারাগারে থাকায় সাজাপ্রাপ্ত অপর নেতা তারেক রহমানকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান করায় সমালোচনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপির নেতৃত্বের কি এতোই দৈন্যদশা যে, তারেক রহমানকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বানানো হল। এই সাজাপ্রাপ্ত নেতা ছাড়া কি চেয়ারম্যান করার মতো দেশে আর কোন বিএনপি নেতা নেই?
বিএনপি চেয়ারপারসনের বিরুদ্ধে আদালতের রায় প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কোর্ট রায় দিয়েছে, এখানে সরকারের করা কিছু নেই।
তিনি বলেন, ‘নির্বাচন ঠেকানোর নামে ২০১৪ সালে তারা (বিএনপি) আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মেরেছে। ৭০টি সরকারি অফিস পুড়িয়েছে। নিরাপত্তা সদস্যদের মেরেছে। নির্বাচন মানুষের অধিকার। সাংবিধানিক অধিকার। দুর্নীতিতে সাজাপ্রাপ্ত তাকে ছাড়া নির্বাচনে যাবে না। রায়তো আমি দেই নাই। রায় দিয়েছেন আদালত। আর মামলা দিয়েছে তত্ত্বাবধায়ক সরকার। মামলা দায়ের করেছে দুদক। দশ বছর মামলা চলেছে। কার্যদিবস ২৬১ দিন। তিনবার জজের প্রতি অনাস্থা দেয়া হয়েছে। সময় চেয়েছেন ১০৯ বার। কোর্টে উপস্থিত ছিলেন মাত্র ৪৩ দিন। তারপর তার সাজা হয়েছে।’
দলের নেত্রীকে ছাড়া বিএনপি নির্বাচন করবে না এমন মন্তব্য নিয়ে করা প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নির্বাচন না করলে কিছু করার নেই। এবারো না আসলে আমাদের কি করার আছে। আমরা বহুদলীয় গণতন্ত্রের দেশ। কোন দল করবে কোন দল করবে না এটা তাদের সিদ্ধান্ত। নির্বাচনও হবে। জনগনও ভোট দেবে। নির্বাচন করতে দেবো না। এটা গায়ের জোরের কথা। এটা বিএনপি বলতে পারে। তাদের চরিত্রই এ রকম। নির্বাচন হবে। যাদের জণগনের ভোটের ওপর আস্থা আছে তারা নির্বাচন করবে। এখানে আমাদের কিছু করার নেই।’
প্রধানমন্ত্রী সংবাদ সম্মেলনে আরো জানান, আগামী মার্চ মাসের যে কোনো সময় বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপন করা হবে। এটা আমাদের ইন্টারনেট ব্যবহার থেকে শুরু করে অন্যান্য ক্ষেত্রে যুগান্তকারী পরিবর্তন আনবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
পাঠকের মতামত