সমুদ্র পথে পালানোর সময় গত মাসে প্রায় দুইশো রোহিঙ্গাকে আটক করে মিয়ানমারের নৌবাহিনী। সোমবার তাদের রাখাইনে ফেরত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। শরণার্থী প্রত্যাবাসন কেন্দ্রে তাদের নাম নিবন্ধন করা হলেও তাদের কোথায় রাখা হবে সে বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি। ফরাসি বার্তা সংস্থা এফপি জানিয়েছে, রাখাইনের রাজধানী সিত্তির কাছের একটি সৈকতে বিধ্বস্ত অবস্থায় এসব রোহিঙ্গাকে নৌকা থেকে নামতে দেখা গেছে।
সমুদ্রে পথে শান্ত মৌসুমের সুযোগ নিয়ে পাচারকারীদের হাতে নিজেদের জীবন তুলে দিয়ে মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ায় পৌঁছানোর চেষ্টা করছে মিয়ানমারের রোহিঙ্গারা। কেউ কেউ মিয়ানমারের সর্বদক্ষিণের উপকূল কাওথং থেকেও নৌকায় ওঠার চেষ্টা করছেন। গত বছরের ডিসেম্বরে সেখান থেকেই ১৭৩ জন রোহিঙ্গাকে আটক করে মিয়ানমারের নৌবাহিনী।
সোমবার এসব রোহিঙ্গার মধ্যে ১৭ জনকে সিত্তের একটি সৈকতে একটি কাঠের নৌকা থেকে নামতে দেখা যায়। গলায় পরিচয়সূচক নাম্বার নিয়ে সারিবদ্ধ এসব রোহিঙ্গার ওপর নিরাপত্তা বাহিনীকে কড়া নজর রাখতে দেখা যায়। সেখান থেকে তাদের টেচাউন শিবিরে নিয়ে যাওয়া হয়। ওই শিবিরে আগেই আরও ১৫৬ রোহিঙ্গাকে এনে রাখা হয়েছে।
রাখাইনের নিরাপত্তা ও সীমান্ত বিষয়ক মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এসব রোহিঙ্গাকে মংডু টাউনশিপের নাগাখুয়া শিবিরে নেওয়া হবে। এই শিবিরটি বাংলাদেশ থেকে যাওয়া রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের জন্য তৈরি হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এসব রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হবে কিনা সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে সরকারের রাখাইন সংশ্লিষ্ট বিভাগ।
প্রসঙ্গত, রোহিঙ্গাদের নিজ দেশের জনগোষ্ঠী হিসেবে স্বীকার করে না মিয়ানমার। তাদের ‘বাঙালি মুসলমান’ আখ্যা দিয়ে বাংলাদেশের বাসিন্দা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চায় নেপিদো। সেনা চৌকিতে হামলার জেরে ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে রাখাইনে রোহিঙ্গাবিরোধী অভিযান শুরু করে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী। খুন, ধর্ষণ ও অগ্নিসংযোগের মুখে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে সাত লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা। ওই ঘটনায় চলতি মাসে জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) গণহত্যার অভিযোগের শুনানিতে অংশ নিয়েছেন মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা অং সান সু চি।
পাঠকের মতামত