প্রকাশিত: ২১/০৩/২০১৮ ৯:৫৬ পিএম , আপডেট: ১৭/০৮/২০১৮ ৫:০৯ এএম

বিডিনিউজ::
ঐতিহাসিক, জাতিগত ও ধর্মীয়- সব বিষয় মিলিয়ে রোহিঙ্গা সঙ্কটটি এতটাই জটিল যে তার আশু কোনো সমাধান নেই বলে মনে করছে চীন।ঢাকায় চীনের নতুন রাষ্ট্রদূত ঝ্যাং জুয়ো বুধবার প্রথম সংবাদ সম্মেলনে এসে বাংলাদেশের এই সময়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সঙ্কটটি নিয়ে তার দেশের এই মনোভাবের কথা জানান।

নির্বাচনের বছরে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি বেইজিং গভীর মনোযোগের সঙ্গে দেখছে বলেও জানান চীনের প্রতিনিধি।

বিশ্বের প্রভাবশালী এবং বাংলাদেশের উন্নয়নের অন্যতম প্রধান অংশীদার চীনের অবস্থান নানা কারণে গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হয় বাংলাদেশে।

মিয়ানমারের উপর প্রভাব থাকায় রোহিঙ্গা সঙ্কট অবসানেও চীনের ভূমিকার দিয়ে চেয়ে বাংলাদেশের অনেকে।

গত বছরের অগাস্টে মিয়ানমারের রাখাইনে সেনা অভিযান শুরুর পর লাখ লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আসতে শুরু করে। এর আগেও চার লাখের মতো রোহিঙ্গা বাংলাদেশে ছিল, এখন সব মিলিয়ে এই সংখ্যা ১০ লাখ ছাড়িয়েছে।

মুসলিম রোহিঙ্গাদের নিজেদের দেশের নাগরিক হিসেবে মানতে নারাজ বৌদ্ধপ্রধান দেশ মিয়ানমার; তারা এদের বাংলাদেশ থেকে আসা অভিবাসী হিসেবে দেখে। তবে বাংলাদেশ ইতিহাস ঘেঁটে তথ্য দিয়ে বলছে, রোহিঙ্গারা মিয়ানমারেরই নাগরিক।

সংবাদ সম্মেলন সাংবাদিকদের প্রশ্নে রোহিঙ্গা সঙ্কটের বিষয়টিতে নজর রাখার কথা জানান চীনের রাষ্ট্রদূত ঝ্যাং জুয়ো।

তিনি বলেন, “আমরা আপনাদের অবস্থান সম্পর্কে জানি, আপনাদের উদ্বেগও বুঝি। আমরা আশা করি, বাংলাদেশ ও মিয়ানমার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের মধ্য দিয়ে এর একটি সমাধান খুঁজে নেবে।”

এরকম ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গার ভার এখন বাংলাদেশের উপর এরকম ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গার ভার এখন বাংলাদেশের উপর
বিশ্বব্যাপী সমালোচনার মুখে মিয়ানমার বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে রাজি হয়। এ নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হলেও তার অগ্রগতি ধীর।

মিয়ানমারের প্রতিবেশী দেশ চীন বরাবরই বলছে, তারা রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানে ‘গঠনমূলক’ ভূমিকা পালন করতে চায়; যদিও জাতিসংঘে নিরাপত্তা পরিষদে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে যে কোনো প্রস্তাব আটকে দিচ্ছে তারা।

তবে রাষ্ট্রদূত ঝ্যাং জুয়ো বলেন, রোহিঙ্গা সঙ্কটে চীনের ‘কোনো স্বার্থ নেই’।

ঢাকায় চীনের দূতাবাসে দোভাষির মাধ্যমে সাংবাদিকদের প্রশ্নে উত্তরে তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও মিয়ানমার যেন সমস্যার সমাধান করতে পারে, সে বিষয়ে সহযোগিতা করছে তার দেশ।

এই প্রসঙ্গেই তিনি বলেন, “তবে আমরা দেখছি যে রাখাইন রাজ্যের সমস্যা সমাধানের আশু কোনো উপায় নেই। কারণ এটা একটা জটিল সমস্যা; ঐতিহাসিক, জাতিগত এবং ধর্মীয় বিষয় এতে জড়িত।”

তিনি বলেন, এখানে চীন, ভারত, বাংলাদেশ ও মিয়ানমার কেউ কারও শত্রু নয়।

“আমাদের সবার এক শত্রু, সেটা হচ্ছে দারিদ্র্য; আমাদের এখন আঞ্চলিক সহযোগিতা বাড়াতে হবে। উন্নয়নই কেবল রাখাইনের সমস্যার সমাধান করতে পারে।”

বাংলাদেশকে ‘গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী’ বলেও অভিহিত করেন ঝ্যাং জুয়ো।

বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে চীনের রাষ্ট্রদূত বলেন, “আমরা আশা করি, একটি ঝামেলাহীন সাধারণ নির্বাচন আমরা দেখতে পাব।”

বাংলাদেশের উন্নয়নের অংশীদার হিসেবে দেশটির জনগণের চাওয়ার উপর চীন শ্রদ্ধাশীল বলে মন্তব্য করেন তিনি।

পাঠকের মতামত