উখিয়া নিউজ ডটকম : রোহিঙ্গা শিবিরে জন্মগ্রহণকারী শিশুরা জন্মসনদ পেলেও বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পাবে না। শুধু শিশুদের সংখ্যা হিসাব রাখার প্রয়োজনে জন্মসনদ দেওয়া হচ্ছে। এই সনদের সঙ্গে নাগরিকত্বের কোনো সম্পর্ক নেই বলেও জানিয়েছেন সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বাংলাদেশে জন্ম নেওয়া রোহিঙ্গা শিশুদের সরকার থেকে জন্মসনদ দেওয়া হচ্ছে। প্রতিটি রোহিঙ্গা শিশুই এ সনদ পাবে। বাংলাদেশি শিশুদেরও জন্মসনদ দেওয়া হয়ে থাকে। তবে রোহিঙ্গা শিশুদের জন্মসনদের সঙ্গে বাংলাদেশের শিশুদের জন্মসনদের একটি পার্থক্য রয়েছে। রোহিঙ্গা শিশুদের জন্মসনদের ওপর ‘মিয়ানমারের নাগরিক’ -এমন একটি সিল দেওয়া হয়ে থাকে। আর এই জন্মসনদের সঙ্গে নাগরিকত্বের কোনো রকম সম্পর্ক নেই বলেও জানান তারা।
সূত্র জানায়, বাংলাদেশের নাগরিকত্ব আইন অনুযায়ী কোনো শিশু বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করলেই বাংলাদেশি নাগরিক বলে বিবেচিত হবে। তবে সেক্ষেত্রে শিশুটির মা অথবা বাবাকে বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে। মা-বাবা বাংলাদেশের নাগরিক না হলে শিশুটি বাংলাদেশে জন্ম নিলেও নাগরিকত্ব পাবে না। রোহিঙ্গা শিশুদের ক্ষেত্রেও এই আইনই প্রযোজ্য।
কর্মকর্তারা বলছেন, রোহিঙ্গা শিশুদের নাগরিকত্বের বিষয়ে সরকার সতর্কতা বজায় রেখেছে। নাগরিকত্ব নিয়ে যেনো রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে কোনো নেতিবাচক প্রভাব না ফেলে সে কারণেই এই সতর্কতা। কেননা রোহিঙ্গা শিশুদের বাংলাদেশে নাগরিকত্ব দিলে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হতে পারে। এছাড়া নাগরিকত্ব দেওয়ার এই সুযোগটি নিতে পারে মিয়ানমার। রোহিঙ্গা শিশুদের নাগরিকত্ব দেওয়া হলে হয়তো আর কোনোভাবেই তাদের ফিরিয়ে নিতে চাইবে না দেশটি।
রোহিঙ্গা শিশুদের নাগরিকত্বের বিষয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন, বাংলাদেশ সরকার মানবিক কারণে সাময়িকভাবে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে। আর বাংলাদেশে আসার পর যেসব শিশু ভূমিষ্ট হয়েছে, তারা মিয়ানমারের নাগরিক। এসব শিশু কোনোভাবেই বাংলাদেশের নাগরিক বলে বিবেচিত হবে না। কেননা তাদের মা ও বাবা উভয়ই মিয়ানমারের নাগরিক।
সম্প্রতি ইউনিসেফের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বছরের আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত রোহিঙ্গা শিবিরে ১৬ হাজারেরও বেশি শিশু জন্মগ্রহণ করেছে। তাদের হিসাব অনুযায়ী প্রতিদিন রোহিঙ্গা শিবিরে ৬০টি শিশু জন্মগ্রহণ করছে।
আর সেভ দ্য চিলড্রেন বলছে, চলতি বছর রোহিঙ্গা শিবিরে প্রতিদিন গড়ে কমপক্ষে ১৩০টি শিশু জন্মগ্রহণ করবে। সে হিসাবে চলতি বছর ৫০ হাজার রোহিঙ্গা শিশু জন্ম নেবে।
পাঠকের মতামত