প্রকাশিত: ০১/১২/২০১৯ ৯:১৮ এএম
ফাইল ছবি

ডেস্ক রিপোর্ট :
রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন শুধু স্বেচ্ছায়, নিরাপদ ও সম্মানজনকই নয়, বরং টেকসই হওয়ার ওপরও গুরুত্ব দিচ্ছে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর। সরকারের অবস্থানও এ ক্ষেত্রে অভিন্ন।

সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, রোহিঙ্গাসংকটের স্থায়ী সমাধান দেখতে চায় বাংলাদেশ। আর এ লক্ষ্যেই সংকট সৃষ্টির মূল কারণগুলো সমাধানের ওপর বাংলাদেশসহ পশ্চিমা দেশগুলো জোর দিচ্ছে।মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের ১৯৭৮ সালে এবং ১৯৯২ সালে বড় পরিসরে ফেরত পাঠানো হলেও সেগুলো কার্যত টেকসই হয়নি। কারণ কয়েক বছরের মধ্যেই আবার রোহিঙ্গাদের এ দেশে ফিরে আসতে হয়েছে। কক্সবাজারের আশ্রয়শিবিরে এমন অনেক রোহিঙ্গা আছে, যারা দ্বিতীয়বার বা তৃতীয়বার বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছে।

রোহিঙ্গাসংকট সমাধানে জাতিসংঘ ব্যর্থ কি না জানতে চাইলে বাংলাদেশে ইউএনএইচসিআরের প্রতিনিধি স্টিভেন করলিস বলেছেন, ‘আমার মনে হয় আমরা সবাই ব্যর্থ হয়েছি। ’ তিনি বলেন, ‘সত্তরের দশকে প্রত্যাবাসন হয়েছে। নব্বইয়ের দশকে লোকজন আবার ফিরে এসেছে। প্রত্যাবাসন উদ্যোগ কাজে আসেনি।বিভিন্ন সময়ে লোকজন ফিরে এসেছে। ’

স্টিভেন করলিস আরো বলেন, ‘আমাদের সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। প্রত্যাবাসনের জন্য মিয়ানমারে পরিবেশ সৃষ্টি হওয়া জরুরি। আমাদের নিশ্চিত করতে হবে যে এবারের যাওয়াটাই তাদের শেষ যাওয়া। ’ আগের প্রত্যাবাসনগুলো ‘প্রিম্যাচিউর’ (যথাসময়ের আগেই) হয়েছে কি না জানতে চাইলে সরাসরি জবাব না দিয়ে ইউএনএইচসিআরের প্রতিনিধি বলেন, ‘আমি সে সময় ছিলাম না। ’ তবে তিনি বলেন, ‘অপ্রয়োজনীয় প্রত্যাবাসনগুলো সফল হয়নি। এর ফলে লোকজন আবার ফিরতে বাধ্য হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী এই সংকটের মূল কারণগুলো সমাধানের ওপর যে জোর দিচ্ছেন তাকে আমরা স্বাগত জানাই। ’

সাবেক পররাষ্ট্রসচিব শমসের মবিন চৌধুরী বলেন, অতীতে প্রত্যাবাসনগুলো মোটেও ‘প্রিম্যাচিউর’ ছিল না। সঠিকভাবেই তাদের প্রত্যাবাসন করা হয়েছিল দ্বিপক্ষীয় সমঝোতার মাধ্যমে। তিনি বলেন, ‘প্রত্যাবাসনের বিকল্প কী ছিল? তাদের না পাঠানো! সেটা তো হতে পারে না। কারণ ফেরত পাঠানোই মূল লক্ষ্য। ’

শমসের মবিন চৌধুরী আরো বলেন, ১৯৭৮ সালে যারা এসেছিল তাদের সবাই ফেরত গেছে। ১৯৯২ সালে যারা এসেছে তাদেরও বেশির ভাগ ফিরে গিয়েছিল। মিয়ানমার সরকার বা মিয়ানমারের সমাজ কোনোভাবেই রোহিঙ্গাদের গ্রহণ করতে রাজি নয়—এটি এবার পরিষ্কার হয়ে গেছে। আগে তারা ছিল সামরিক সরকারের অধীনে। এখন বেসামরিক সরকারের একটি মুখোশ, যার পেছনে আছে সামরিক শক্তি। তাদের মূল লক্ষ্য আরাকানকে (রাখাইন রাজ্যকে) রোহিঙ্গামুক্ত করা। সেই পরিকল্পনায়ই তারা রয়েছে এবং সেটিই তারা এবার সফল করতে চাইছে। তিনি বলেন, ‘আমি এই মুহূর্তে প্রত্যাবাসন শুরু হওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী হতে পারছি না। যতই আন্তর্জাতিক চাপ থাকুক, কথা হোক বা আইনি বিষয় হোক, আমার মনে হয় না, মিয়ানমার সরকার এদের গ্রহণ করতে প্রস্তুত। ’

পাঠকের মতামত

ফেসবুকে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে ঘৃণামূলক বক্তব্য ছড়ানোয় সেনাবাহিনীর হাত ছিল

২০১৭ সালে মুসলিম সংখ্যালঘুদের ওপর সহিংসতার আগে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে ঘৃণামূলক বক্তব্য ছড়ানোর জন্য যে কয়েক ...

আশ্রয় নেওয়া বিজিপিদের বিনিময়ে বাংলাদেশি বন্দি মুক্তি দেবে মিয়ানমার

বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিজিপি) সদস্যদের ফেরানোর বদলে দেশটির জান্তা সরকারের কারাগারে থাকা ...

মিয়ানমারের পরবর্তী নির্বাচন দেশব্যাপী নাও হতে পারে: জান্তা প্রধান

মিয়ানমারে শান্তি ও স্থিতিশীলতা ফিরলে নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে ক্ষমতাসীন জান্তা সরকারের। তবে সে নির্বাচন ...

এমভি আবদুল্লাহতে বিমান বিধ্বংসী অস্ত্র বসিয়েছে জলদস্যুরা

সোমালি জলদস্যুদের হাতে জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) নিজস্ব ...