প্রকাশিত: ১৮/০৪/২০১৯ ৭:১৩ এএম

নিউজ ডেস্ক::
ভোটার তালিকা হালনাগাদে রোহিঙ্গারা যাতে ভোটার হতে না পারে এ জন্য সর্বোচ্চ সতর্ক থাকছে নির্বাচন কমিশন। রোহিঙ্গা ও বিদেশি অনুপ্রবেশকারীদের ভোটার হওয়া ঠেকাতে বিশেষ নজরদারি রাখতে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছে কমিশন। এক্ষেত্রে রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকায় গঠন করা হয়েছে বিশেষ কমিটি। ৩২ উপজেলায় ভোটারদের তথ্য সংগ্রহে ব্যবহার করা হবে বিশেষ ফরম। এ ছাড়াও রোহিঙ্গাদের ‘বায়োমেট্রিক’ কাজে লাগাবে কমিশন। এদিকে ভোটার তালিকা হালনাগাদে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে সতর্ক থাকলেও রোহিঙ্গারা কৌশল বদলে রাজধানীসহ সারা দেশে ভোটার হওয়ার চেষ্টা চালাতে পারে বলে আশঙ্কা করছে নির্বাচন কমিশন। তাই তা ঠেকাতে সর্বাত্মক সতর্কতা অবলম্বন এবং তথ্য সংগ্রহকারীদের বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। ইসির কর্মকর্তারা বলছেন, রোহিঙ্গারা অসাধু চক্রের সহায়তায় সমতল এলাকায় ভোটার হওয়ার চেষ্টা করতে পারে। তারা দেশের অন্য অঞ্চলের মতো ঢাকা মহানগরীতেও ভোটার হওয়ার চেষ্টা করবে। আগামী ২৩ এপ্রিল থেকে তিন সপ্তাহ ধরে দেশজুড়ে ভোটারযোগ্য নাগরিকদের নিবন্ধনের লক্ষ্যে তথ্য সংগ্রহে নামছে নির্বাচন কমিশন। এবার হালনাগাদে প্রায় ৮০ লাখ নাগরিকের তথ্য সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধরেছে সাংবিধানিক সংস্থাটি। আগামী ২৩ এপ্রিল থেকে ১৩ মে পর্যন্ত বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করা হবে। এ সময় আঠারো বছরের কম বয়সী (২০০৩/৪ সালের ১ জানুয়ারি বা তার আগে যাদের জন্ম তাদেরও তথ্য নেওয়া হবে। এ বিষয়ে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এবার ৪ বছরের জন্য হালনাগাদ কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। আগামী ২৩ এপ্রিল তথ্য সংগ্রহ শুরু হবে। রোহিঙ্গা ভোটার হওয়া ঠেকানোর বিষয়ে তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের যে ‘বায়োমেট্রিক’ নেওয়া হয়েছে, তা আমরা আলাদা সার্ভারে রেখেছি। এবার যে কোনো নাগরিক যখন ভোটার হওয়ার জন্য আবেদন করবেন প্রথমে আমরা তার ‘বায়োমেট্রিক’ রোহিঙ্গা সার্ভারের সঙ্গে চেক করব। এক্ষেত্রে রোহিঙ্গা সার্ভারের সঙ্গে যদি কারও ‘বায়োমেট্রিক’ মিলে যায়, তবে তিনি যেখান থেকেই আসুন ভোটার হতে পারবেন না। তিনি বলেন, এবার কোনোভাবে কোনো রোহিঙ্গা ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ার সুযোগ নেই।

রোহিঙ্গাদের ‘বায়োমেট্রিক’ কাজে লাগাবে ইসি : রোহিঙ্গাদের ভোটার হওয়া ঠেকাতে তাদের ‘বায়োমেট্রিক’ কাজে লাগাবে নির্বাচন কমিশন। এ জন্য অটোমেটিক ফিঙ্গার আইডেন্টিফিকেশন সিস্টেমের (এএফআইএস) মাধ্যমে নাগরিকদের তথ্যভা ারের সঙ্গে অনুপ্রবেশকারীদের আঙ্গুলের ছাপ ‘ম্যাচিং’ করা হবে। এক্ষেত্রে রোহিঙ্গা তথ্য সার্ভারের আঙ্গুলের ছাপ তথ্যভা ারে ম্যাচিং করে দেখলে জালিয়াতদের সহজেই ধরা যাবে বলে মনে করছেন ইসির কর্মকর্তারা।

রোহিঙ্গা অধ্যুষিত ৩২ উপজেলা : রোহিঙ্গা অধ্যুষিত হিসেবে ৩২ উপজেলাকে বিশেষ এলাকা ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। বিগত ২০১৭ সালে ভোটার তালিকা হালনাগাদ কর্মসূচির সময় এসব বিশেষ এলাকা চিহ্নিত করা হয়। ইসির কর্মকর্তারা বলেন, বিশেষ ৩২ উপজেলায় ভোটারের ফরমগুলো যাচাই-বাছাই, অনুসন্ধান, পরিদর্শনসহ নিবন্ধন কার্যক্রমের জন্য বিশেষ কমিটি গঠন করেছে ইসি। তারা যাচাই-বাছাই করে দেখবেন।
রোহিঙ্গা অধ্যুষিত বিশেষ এলাকা : কক্সবাজার জেলার ৮টি, বান্দরবানের ৭টি, রাঙামাটির ৮টি এবং চট্টগ্রামের ৯টি উপজেলা রোহিঙ্গা অধ্যুষিত বিশেষ এলাকা। এলাকাগুলো হচ্ছে- কক্সবাজারের সদর উপজেলা, চকোরিয়া, টেকনাফ, রামু, পেকুয়া, উখিয়া, মহেশখালী ও কুতুবদিয়া। বান্দরবানের সদর, রুমা, থানচি, বোয়াংছড়ি, আলীকদম, লামা ও নাইক্ষ্যংছড়ি। রাঙামাটির সদর, লংগদু, রাজস্থলী, বিলাইছড়ি, কাপ্তাই, বাঘাইছড়ি, জুরাছড়ি ও বরকল। চট্টগ্রামের বোয়ালখালী, পটিয়া, আনোয়ারা, চন্দনাইশ, সাতকানিয়া, লোহাগড়া, বাঁশখালী, রাঙ্গুনিয়া ও কর্ণফুলী। প্রথমে রোহিঙ্গা অধ্যুষিত বিশেষ এলাকা ছিল ৩০টি। পরে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া ও কর্ণফুলী উপজেলাকে বিশেষ এলাকায় যুক্ত করা হয়।

পাঠকের মতামত

কঠোর নির্দেশনার পরও মন্ত্রী-এমপিদের স্বজনরা ছাড়ছে না ভোটের মাঠ

সরকারদলীয় এমপি-মন্ত্রীদের সন্তান, পরিবারের সদস্য ও নিকটাত্মীয়দের আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে অংশ না নিতে কঠোর নির্দেশনা ...