প্রকাশিত: ২৮/০৩/২০১৭ ১:২২ পিএম

নিউজ ডেস্ক::
মিয়ানমারে রোহিঙ্গা নিপীড়নের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে জাতিসংঘে পাস হওয়া তদন্ত প্রস্তাবকে সার্বভৌমত্বের প্রতি হুমকি আখ্যা দিয়েছে মিয়ানমার। রাখাইন রাজ্যে বসবাসরত ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা মুসলিমকে ‘বাঙালি’ অনুপ্রবেশকারী দাবি করে মিয়ানমারের সেনাপ্রধান এই হুঁশিয়ারি দেন। ক’দিন আগে সু চির নেতৃত্বাধীন পররাষ্ট্র দফতর থেকে তদন্ত প্রস্তাব প্রত্যাখান করা হয়েছিল। এবার সেনাপ্রধানের বিরোধিতায় মিয়ানমারের সিভিল-মিলিটারি ডি ফ্যাক্টো সরকারের দুই পক্ষেরই জাতিসংঘ-তদন্ত বিরোধী অবস্থান স্পষ্ট হলো।
গত ২৪ মার্চ মিয়ানমারে রোহিঙ্গা নিপীড়নের বিরুদ্ধে তদন্ত চালানোর একটি প্রস্তাব জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলে অনুমোদিত হয়। সিদ্ধান্ত হয়, রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর নির্যাতনের অভিযোগ তদন্তের জন্য দেশটিতে সত্য অনুসন্ধানকারী দল পাঠাবে জাতিসংঘ। ওই প্রস্তাবে বলা হয়, দোষীদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা এবং ভুক্তভোগীদের জন্য ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে ওই তদন্ত শুরু হবে। সেপ্টেম্বরে তদন্তকারীরা মৌখিকভাবে তদন্তের তথ্য জানাবে আর আগামী বছরের একই সময়ের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন জমা দেবে। চীন, ভারত, কিউবাসহ কয়েকটি দেশ ওই প্রস্তাব থেকে বিচ্যুত থেকেছে।
সোমবার (২৭ মার্চ) মিয়ানমারের সশস্ত্র বাহিনী দিবসের প্যারেডে মিন অং বলেন, ‘আমরা এরইমধ্যে বিশ্বকে জানিয়ে দিয়েছি যে আমাদের দেশে রোহিঙ্গা নেই। রাখাইন রাজ্যে থাকার বাঙালিরা মিয়ানমারের নাগরিক নয়, তারা কেবল আমাদের দেশে থাকতে এসেছে।’
মিন অং আরও বলেন, ‘আমাদের কী করা উচিত সে ব্যাপারে আইন অনুযায়ী আমাদের দায়িত্ব আছে। আমাদের সার্বভৌমত্বকে রাজনৈতিক, ধর্মীয় ও বর্ণবৈষম্যজনিত সংকট থেকে সুরক্ষিত রাখারও দায়িত্ব আছে আমাদের’।

এর আগে মিয়ানমারের পররাষ্ট্র দফতরের পক্ষ থেকেও জাতিসংঘের তদন্তের বিরোধিতা করা হয়েছিল। ২৪ মার্চ রাতে মিয়ানমারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আন্তর্জাতিক তদন্ত মিশন গঠন বিষয়টির সমাধানের পরিবর্তে এটিকে আরও উস্কে দিবে।’

উল্লেখ্য, গত বছর অক্টোবর মাসের ৯ তারিখে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ এলাকায় সন্ত্রাসীদের সমন্বিত হামলায় ৯ পুলিশ সদস্য নিহত হওয়ার পর তার দায় চাপানো হয় রোহিঙ্গাদের ওপর। আর তখন থেকেই শুরু হয় সেনাবাহিনীর দমন প্রক্রিয়া। মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের দাবি,এরপর থেকেই রাখাইন রাজ্যে ‘ক্লিয়ারেন্স অপারেশন’চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। জাতিসংঘ এরইমধ্যে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে জাতিগতভাবে নির্মূল করার অভিযোগ এনেছে। তাদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ডেরও অভিযোগ তোলা হয় দুই দফায়। এবারের সংঘর্ষে রাখাইন রাজ্যের মৃতের সংখ্যা ৮৬ জন বলে জানিয়েছে তারা। জাতিসংঘের হিসাব মতে,এখন পর্যন্ত ঘরহারা হয়েছেন ৩০ হাজার মানুষ। পালাতে গিয়েও গুলি খেয়ে মরতে হচ্ছে তাদের। ২০১২ সালে মিয়ানমার সরকারের মদদপুষ্ট উগ্র জাতীয়তাবাদী বৌদ্ধদের তাণ্ডবে প্রায় ২০০ রোহিঙ্গা নিহত হন। ঘর ছাড়তে বাধ্য হন ১ লাখেরও বেশি মানুষ।Bangla Tribune

পাঠকের মতামত

ইরানের ভয়ে তটস্থ ইসরায়েল!

ইসরায়েলে বড় ধরনের ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র বা ড্রোন হামলা আসন্ন বলে মনে করছে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি ...