প্রকাশিত: ১৪/০২/২০১৮ ১০:৪৩ পিএম , আপডেট: ১৭/০৮/২০১৮ ৬:৩৬ এএম

উখিয়া নিউজ ডটকম::

কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অজ্ঞাত রোগে আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে।একই সঙ্গে বাড়ছে মৃত্যুর হার। এত দিন নানা রোগে রোহিঙ্গাদের মৃত্যুর কথা জানা গেলেও এখন অজ্ঞাত রোগে সেখানে মারা যাচ্ছেন এনজিও কর্মী। গত ১৫ দিনে এ রকম তিনজন এনজিও কর্মীর মৃত্যু হয়েছে।ব্র্যাকের কর্মী সাবেকুন্নাহার ও এমএসএফ কর্মী নুরুল হাকিমের মৃত্যুর রেশ কাটতে না কাটতে আরও এক এনজিও কর্মীর মৃত্যুর ঘটনায় শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন স্থানীয অভিভাবকরা সর্বশেষ গতকাল সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) মারা যান ব্র্যাকের কর্মী শারমিন আক্তার দীপ্তি (১৮)।গতকাল সকালে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। তার রোগ শনাক্ত করতে পারেননি চিকিৎসকরা।এর আগে গত ৩০ জানুয়ারি ব্র্যাকের এনজিওকর্মী সাবেকুন নাহারের মৃত্যু হয় চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। তিনি রাজাপালং গ্রামের ফজল করিমের মেয়ে।দ্ইু দিন পর গত ২ ফেব্রুয়ারি কুতুপালং ক্যাম্পে কর্মরত এনজিও কর্মী নুরুল হাকিমের (২২) মৃত্যু হয়। কুতুপালং গ্রামের আলতাফ হোসেনের ছেলে হাকিম কক্সবাজার সিটি কলেজের অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন।চার মাস ধরে ক্যাম্পে ত্রাণ বিতরণে কাজ করছিলেন। তার বাবা জানান, রাতে নুরুল হাকিম হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা যান তিনি।সব কটি মত্যুর ধরনই একই রকম। চিকিৎসকরা এসব মৃত্যুর কারণ হিসেবে ডিপথেরিয়া রোগের কথা ধারণা করছেন।ক্যাম্পে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের কারণে রোগটি ছড়াচ্ছে বলেও ধারণা করা হচ্ছে। মিয়ানমার থেকে পালিয়ে এসে বাংলাদেশের উখিয়ায় আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গারা তাদের দেশে চিকিৎসা ও টিকা নেয়া থেকে বঞ্চিত ছিল। তাদের প্রায় সবাই নানা ধরনের রোগ বহন করছে। ইতিমধ্যে ক্যাম্পে প্রায় অর্ধশত রোহিঙ্গা ডিপথেরিয়া রোগে মারা গেছে।কক্সবাজার সিভিল সার্জন ডাক্তার আব্দুস সালাম সাংবাদিকদের জানান, ডিপথেরিয়া প্রতিরোধে ক্যাম্পে প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা দেয়া হচ্ছে।কিন্তু টিকাদান কর্মসূচির ফলে বাংলাদেশ থেকে ডিপথেরিয়া প্রায় নির্মূল হয়ে যাওয়ায় স্থানীয় বাজারে এই রোগের প্রয়োজনীয় ওষুধ এখন আর তেমন সুলভ নয়। সোমবার মারা যাওয়া এনজিও কর্মী দীপ্তি ডিপথেরিয়ায় মারা গেছেন কি না এখনো তা জানা যায়নি। উখিয়ার রতœাপালং এলাকার বাসিন্দা দীপ্তি হঠাৎ মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়লে তার রোগ শনাক্ত করতে পারছিলেন না স্থানীয় চিকিৎসকরা। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে সোমবার ভোর চারটার দিকে তিনি মারা যান। রতœাপালং ইউনিয়নের রুহুল্লারডেবা গ্রামের আহমদ সুলতানের মেয়ে দীপ্তি কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ব্র্যাক পরিচালিত শিশু বিকাশ শিক্ষা স্কুলে শিক্ষকতা করতেন । বিনা চিকিৎসায় গত ১৫ দিনে তিনজন এনজিও কর্মীর অকাল মৃত্যুতে শঙ্কিত স্থানীয় অভিভাবকরা। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে শিক্ষা, ত্রাণ বিতরণসহ নানা কাজে নিয়োজিত স্থানীয় অনেক তরুণ-তরুণী। অজ্ঞাত রোগে মেধাবী ও সম্ভাবনাময় প্রাণ হারানোর ভয় এখন সবার মাঝে।অভিভাবকরা জানান, রোহিঙ্গা অধ্যুষিত জনপদ উখিয়া-টেকনাফ এখন চরম বিপর্যয়ের মধ্যে রয়েছে। দ্রুতই এই রোগ শনাক্ত ও প্রয়েজনীয় ব্যবস্থাসহ রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের দাবি জানান তারা। উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নিকারুজ্জামান রবিন বলেন, রোহিঙ্গাদের কারণে নানা সংক্রমিত রোগ প্রতিরোধে টিকাদানের ব্যবস্থা রয়েছে। এর পরও অনাকাঙ্ক্ষিত এসব মৃত্যু চিন্তার বিষয়। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে তিন এনজিও কর্মীর মৃত্যুর কথা জেনেছেন জানিয়ে ইউএনও আরও বলেন, রোহিঙ্গাদের পাশাপাশি সংক্রমিত এলাকায় সবাইকে প্রতিষেধক টিকা দিতে মাসিক সমন্বয় সভায় বিষয়টি তোলা হয়েছে।এ বিষয়ে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সর্তকতা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

পাঠকের মতামত

সোনার দামে আবারও রেকর্ড, ভ‌রি‌ ১ লাখ ১৯ হাজার ৬৩৮ টাকা

আবারও সোনার দাম বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে জুয়েলারি ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। প্রতি ভরিতে ...