প্রকাশিত: ১১/১১/২০১৯ ৯:৩৩ এএম

ডেস্ক রিপোর্ট ::
কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নিরাপত্তা এবং ক্যাম্পের ভেতরের পরিবেশ আরও উন্নত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। বৈঠক সূত্র জানায়,কক্সবাজারে মোবাইল ডাটা ট্রান্সফার বাদ দিয়ে অন্তত ভয়েস সেবার মান বাড়ানোর সুপারিশ করা হয়েছে।

রোহিঙ্গা ইস্যুতে জড়িত মন্ত্রণালয়,এজেন্সি,জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা,দেশি ও বিদেশি এনজিও, স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিসহ প্রায় ১৫০ প্রতিনিধির সঙ্গে কক্সবাজারে গত সপ্তাহে জাতীয় টাস্কফোর্সের বৈঠকের পরে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, ক্যাম্পের নিরাপত্তা আরও টেকসই করার জন্য কাঁটাতারের বেড়া তৈরির কাজ শিগগিরই শুরু হবে। ক্যাম্পের ভেতরে ময়লা পরিষ্কার করার জন্য স্বেচ্ছা সেবক ব্যবহারের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এছাড়া, স্বেচ্ছাসেবকদের নগদ অর্থের পরিবর্তে অন্য কীভাবে মজুরি পরিশোধ করা যায়— সে বিষয়ে একটি পরিকল্পনা তৈরির দায়িত্ব জাতিসংঘকে দেওয়া হয়েছে।

বৈঠকে উপস্থিত একজন কর্মকর্তা বলেন,‘আমরা সাম্প্রতিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে এখানকার উন্নয়ন এবং ভবিষ্যতের পরিকল্পনা করেছি।’

এরমধ্যে রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা দেওয়ার জন্য আমরা কাঁটাতারের বেড়া তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ক্যাম্পের ভেতরে প্রতিদিন মলমূত্রসহ বিভিন্ন ময়লা জমা হয়, সেগুলো পরিষ্কার করার জন্য ক্যাম্পের ভেতর থেকে স্বেচ্ছাসেবক ব্যবহার করা হবে বলে তিনি জানান।

ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের কারণে কক্সবাজারে মোবাইল নেটওয়ার্ক কার্যক্রম সীমিত করা হয়েছে। এর ফলে মিয়ানমারের সিম ব্যবহার আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে, যা আমাদের নিরাপত্তা জন্য হুমকি।’

তিনি বলেন, ’এ বিষয়টি নিয়েও আলোচনা হয়েছে। ডাটা ট্রান্সফার বাদ দিয়ে অন্তত ভয়েস সেবাটির মান বাড়ানোর সুপারিশ করা হয়েছে।’

ভাষানচরে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তরের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হলে জাতিসংঘের পক্ষ থেকে বলা হয়, তাদের কারিগরি দল আগামী ১৭ থেকে ১৯ নভেম্বর দ্বীপটি পর্যালোচনা করবে। এ বিষয়ে রিপোর্টে তাদের মতামত তুলে ধরা হবে বলে জানানো হয়।

উল্লেখ্য, রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা ও উন্নত জীবনমান নিশ্চিত করার জন্য সরকার এক লাখের মতো রোহিঙ্গাকে কক্সবাজার থেকে ভাষানচরে স্থানান্তর করতে চায়। কিন্তু জাতিসংঘ এর বিরোধিতা করছে।

যৌথ পরিকল্পনা

২০১৮ ও ২০১৯ সালের মতো সামনের বছরে রোহিঙ্গাদের জন্য অর্থ সাহায্যের পরিকল্পনা তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ কী চায়, ওই বৈঠকে জাতিসংঘকে তা অবহিত করা হয়েছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আরেকজন কর্মকর্তা বলেন, ‘সামনের বছর জেআরপিতে কী কী জিনিসের কথা থাকবে সেটির বিষয়েও আমরা জাতিসংঘকে অবহিত করেছি এবং এগুলো না থাকলে তহবিল সংগ্রহে আমাদের সাহায্যের পরিমাণ যে কমে যাবে, তা জানিয়ে দিয়েছি।’

সূত্র জানায়, জেআরপিতে রোহিঙ্গাদের উদ্বাস্তু হিসেবে উল্লেখ করা যাবে না। বাংলাদেশ কীভাবে রোহিঙ্গাদের সাহায্য করছে সেটির বিস্তারিত বর্ণনা, স্থানীয় জনগণকে কীভাবে এবং কোন খাতে সহায়তা দেওয়া হবে তার বিস্তারিত বর্ণনা, ভাষানচরে স্থানান্তরের বিষয় উল্লেখ ও প্রত্যাবাসনসহ অন্যান্য বিষয়গুলোর সুনির্দিষ্ট উল্লেখ চায় সরকার।

সরকারের ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘মিয়ানমারে জাতিসংঘ কী করছে, সেখানে তারা চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে, রাখাইনের পরিস্থিতি কী, ওখানে মিয়ানমার সরকার কী করছে—সেগুলোর বিস্তারিত বর্ণনা যেন জেআরপিতে উল্লেখ থাকে, আমরা সেসবও চাই।’

ওই কর্মকর্তা বলেন, ’জাতিসংঘ কীভাবে তহবিল খরচ করছে, তার বিস্তারিত বর্ণনা এবারের জেআরপিতে উল্লেখ করবে বলেও তারা জানিয়েছে।’ বাংলাট্রিবিউন

পাঠকের মতামত