প্রকাশিত: ২৬/০৮/২০১৮ ৬:১৯ পিএম

ডেস্ক রিপোর্ট-  বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়ে নতুন জীবন পেয়েছিল রোহিঙ্গারা। ঠাঁই হয় সীমান্তের উখিয়া-টেকনাফের বিশাল বনভূমিতে। কিন্তু এখানে আশ্রয় নিয়ে শান্ত নেই রোহিঙ্গারা। তারা প্রতিনিয়ত নতুন নতুন সমস্যা তৈরী করছে। জড়িয়ে যাচ্ছে নানান অপরাধে।

গত এক বছরে আশ্রয় শিবিরে ১৮টি খুন হয়েছে। এরফলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতির দিকে।

২০১৭ সালের ২৫ আগষ্ট মিয়ানমারে নির্যাতন-নিপীড়ন শুরু হওয়ায় বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে শুরু করে রোহিঙ্গারা। সেই হিসেবে রোহিঙ্গা প্রবেশের আজ এক বছর। হত্যা, ধর্ষণ, মাদক পাচার, ডাকাতিসহ এমন কোন অপরাধ নেই যা রোহিঙ্গারা গত এক বছরে করেনি। দিনদিন রোহিঙ্গাদের মধ্যে অপরাধ প্রবণতা বৃদ্ধি পাওয়ায় চরম আশঙ্কা তৈরী হয়েছে।

জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত এক বছরে আশ্রয় শিবিরে নিজেদের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে ১৮ জন রোহিঙ্গা খুন হয়েছে। রোহিঙ্গা নাগরিকদের বিরুদ্ধে ২৩৮টি মামলা হয়েছে। এরমধ্যে মাদক (ইয়াবা, গাঁজা) মামলা ৬৮টি। একটি গণ ধর্ষণসহ ৬টি ধর্ষণ মামলা হয়েছে। বাকি গুলো ডাকাতি, মারামারি, চোরা চালান সহ অন্যান্য। এসব মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছে ১২২ জন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঠুনকো বিষয় নিয়ে খুনোখুনিতে জড়িয়ে পড়ে রোহিঙ্গারা। হিংস্র দানবের মত মুহুর্তেই খুন করে বসে স্বজাতিকে। অল্প জায়গার মধ্যে বিশাল জনগোষ্ঠীর বসবাস হওয়ায় এসব ঘটনা সহজে প্রতিরোধ করতে সক্ষম হয় না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

ইয়াবা ব্যবসায়ীদের পাচারকারী হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে রোহিঙ্গারা। পাচার করতে গিয়ে আটকও হচ্ছে প্রতিনিয়ত। কিন্তু তারপরও রোহিঙ্গাদের ইয়াবা পাচার থামানো যাচ্ছে না।

আশ্রয় শিবিরে বেকার বসে সময় কাটানোয় রোহিঙ্গারা সংঘবদ্ধ হয়ে ডাকাতিতে জড়িয়ে যাচ্ছে। স্থানীয়দের ঘরবাড়িতে গভীর রাতে হানা দিয়ে সর্বস্ব ডাকাতি করে নিয়ে যাচ্ছে রোহিঙ্গারা।

গত ২৩ আগষ্ট টেকনাফ উপজেলার সদর ইউনিয়নের নতুন পল্লানপাড়া এলাকায় হাজী বশিরের বাড়িতে রোহিঙ্গাদের সংঘবদ্ধ একটি ডাকাত দল হানা দেয়। পরে বাড়ির মালিক ও স্থানীয়রা এগিয়ে আসলে সংঘবদ্ধ ডাকাত দল পালিয়ে যায়। এঘটনায় হাজী বশিরের পরিবারে ডাকাত আতঙ্ক বিরাজ করছে।

কক্সবাজার পিপলস ফোরামের মুখপাত্র এইচএম নজরুল ইসলাম বলেন, রোহিঙ্গারা দিনদিন নানান অপরাধে জড়িয়ে যাচ্ছে। কিছু কিছু জায়গায় তারা স্থানীয়দের উপর অত্যাচার শুরু করে দিয়েছে। তাদেরকে কঠোরভাবে দমন করা না হলে, নিকট ভবিষ্যতে সমস্যা হয়ে দাঁড়াবে।

নিজেদের মধ্যে মারামারি, হানাহানি, অপহরণ, ধর্ষণ, এমনকি খুন পর্যন্ত আছে। এই প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মধূরছড়া-২ আশ্রয় শিবিরের হেড মাঝি জাহিদ হোসেন বলেন, ‘খারাপ মানুষ তো সব জায়গায়ই আছে। তাছাড়া, শরণার্থী শিবিরে অনেকেরই মাথা ঠিক থাকে না।’

জেলা পুলিশ সূত্র আরও জানায়, কক্সবাজারে রোহিঙ্গাদের ৩০টি আশ্রয় শিবির রয়েছে। এরমধ্যে উখিয়ায় ২৩ টি ও টেকনাফে ৭টি। এসব রোহিঙ্গা শিবিরে নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য পুলিশ মোতায়েন রয়েছে ১ হাজারের কম।

গত মে মাসে রোহিঙ্গা শিবিরে নিরাপত্তার জন্য দুটি আমর্ড পুলিশ ব্যাটালিয়ান স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। কিন্তু অদ্যাবদি এই উদ্যোগের বাস্তবায়ন নেই। এরফলে রোহিঙ্গাদের সামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

কক্সবাজারের পুলিশ সুপার ড. একেএম ইকবাল হোসেন বলেন, রোহিঙ্গাদের কিছু কিছু আশ্রয় শিবির পাহাড়ের দুর্গম এলাকায়। আশ্রয় শিবির গুলোতে কোন ধরণের নিরাপত্তা বেষ্টনি নেই। একারণে রাতের বেলায় কে ঢুকছে বা বের হচ্ছে এসব সনাক্ত করা কঠিন। তারপরও পুলিশ তৎপর রয়েছে। এখন পর্যন্ত বড় ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।

পাঠকের মতামত

সোনার দামে আবারও রেকর্ড, ভ‌রি‌ ১ লাখ ১৯ হাজার ৬৩৮ টাকা

আবারও সোনার দাম বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে জুয়েলারি ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। প্রতি ভরিতে ...