প্রকাশিত: ১৪/০৭/২০১৮ ৪:৩৭ পিএম , আপডেট: ১৭/০৮/২০১৮ ১২:৪৪ এএম

নিজস্ব প্রতিবেদক- আগামি ২৫ জুলাই অনুষ্টিতব্য কক্সবাজার পৌরসভা নির্বাচনে কোন ধরণের ভোট কারচুপি, কেন্দ্র দখল, ভোটদানে বাধা প্রদান কিংবা সহিংসতার কোন ঘটনা ঘটানো হলে রোহিঙ্গা ক্যাম্প অধ্যূষিত এলাকায় টানা ৪ দিনের হরতালের হুমকি দিয়েছে কক্সবাজার জেলা বিএনপি।

শনিবার (১৪ জুলাই) দুপুরে কক্সবাজার পৌরসভা নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত ‘ধানের শীষ’ প্রতীকের প্রার্থীর নির্বাচনী ‘অঙ্গিকারনামা’ নিয়ে সাংবাদিকদের কাছে ব্রিফিংকালে জেলা বিএনপি সভাপতি ও জাতীয় সংসদের সাবেক হুইপ শাহজাহান চৌধুরী।

শনিবার সকাল ১১টায় জেলা বিএনপি কার্যালয়ে স্থাপিত ‘ধানের শীষ’ প্রতীকের মেয়র প্রার্থী রফিকুল ইসলামের প্রধান নির্বাচনী কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয়েছিল।

ওই সংবাদ সম্মেলনে ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ ভাবে পৌরসভার ১১নং ওয়ার্ড এলাকায় ৩টি ভোট কেন্দ্রে ইভিএম (ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন) পদ্ধতিতে ভোটগ্রহণের ঘোষণাকে বিএনপি প্রার্থীর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র বলে দাবি করা হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির মৎস্যজীবী বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক সাংসদ লুৎফুর রহমান কাজল প্রশ্ন তুলেন, ইভিএম সিস্টেমে ভোট শুধু ১১ নাম্বার ওয়ার্ডে কেন? সেটা ২ নাম্বার ওয়ার্ডে নয় কেন?

তিনি মনে করেন, যেহেতু ১১ নাম্বার ওয়ার্ড বিএনপি প্রার্থীর ওয়ার্ড সেহেতু ওই ওয়ার্ডে ইভিএম সিস্টেমের মাধ্যমে ভোট কম কাস্টিং করার জন্য ষড়যন্ত্র করা হয়েছে।

বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা লুৎফুর রহমান কাজল ও জেলা বিএনপি সভাপতি শাহজাহান চৌধুরী পৌর নির্বাচনে শুধুমাত্র ১১ নাম্বার ওয়ার্ডে ইভিএম সিস্টেম বাতিল করে প্রতিজন মেয়র প্রার্থীর নিজস্ব এলাকায় অন্তত একটি করে কেন্দ্রে ইভিএম পদ্ধতিতে ভোটগ্রহণের দাবি জানান।

এই সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী ও বর্তমান প্যানেল মেয়র রফিকুল ইসলাম তাঁর ১৩টি নির্বাচনী ‘অঙ্গিকারনামা’ উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, ‘আমি মেয়র নির্বাচিত হলে আগামি ৫ বছরে যদি এই অঙ্গিকার বাস্তবায়ন করতে না পারি তাহলে আগামিবার ভোট চাইলে আসলে সেই প্রশ্ন তুলতে পারবেন ভোটাররা।’

সংবাদ সম্মেলনে বক্তাগণ সরকার দলীয় মেয়র প্রার্থীর বিরুদ্ধে ভোটারদের ভয়-ভীতি প্রদর্শন ও শতাধিক নির্বাচনী ক্যাম্প অফিস করার মাধ্যমে নির্বাচনী আচরণবিধি লংঘনের অভিযোগ তুলেন।

বক্তাগণ দাবি করেন, পৌরসভার নির্বাচনী আচরণবিধি মতে প্রতি ২০ হাজার জনগোষ্টীর হিসাবে এক থেকে সর্বোচ্চ ৫টি নির্বাচনী অফিস করতে পারবেন একজন মেয়র প্রার্থী। সেই হিসাবে পুরো পৌর এলাকায় একজন মেয়র প্রার্থী সর্বাধিক ২০টি নির্বাচনী অফিস করতে পারেন। অথচ আওয়ামী লীগ মনোনীত ‘নৌকা’ প্রতীকের প্রার্থী এ পর্যন্ত শতাধিক নির্বাচনী অফিস করেছেন।

সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিএনপি নেতারা জানান, পৌরসভা নির্বাচনে অনিয়ম ও কারচুপির এবং সহিংসতার চেষ্টা করা হলে ‘কঠিনতর’ আন্দোলনের কর্মসূচিতে যেতে পারে বিএনপি।

এই সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন ‘ধানের শীষ’ প্রতীকের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহবায়ক ও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এড. শামীম আরা স্বপ্না, নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব ও পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রাশেদ মো. আলী, জেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি ও কুতুবদিয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এটিএম নুরুল বশর চৌধুরী প্রমূখ।

বিএনপি প্রার্থীর ১৩ ‘অঙ্গিকার’
কক্সবাজার পৌরসভা নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী রফিকুল ইসলাম লিফলেট আকারে ১৩টি নির্বাচনী ‘অঙ্গিকার’ তুলে ধরেন। ওই ১৩টি অঙ্গিকারের ১৩টি শিরোনামও দেয়া হয়েছে।

বিএনপি প্রার্থীর ১৩টি নির্বাচনী অঙ্গিকারের শিরোনাম হলো, পরিচ্ছন্ন শহর, জলাবদ্ধতা নিরসন, মেয়রের দপ্তর হবে জনতার, পৌর সেবার বিকেন্দ্রীকরণ, শিক্ষা উদ্যোগ, ডিজিটাল শহর, পর্যটন সেবা, আবাসন প্রকল্প, যানজটমুক্ত শহর, সহনীয় কর নির্ধারণ, দূর্ণীতি মুক্ত, সন্ত্রাস ও মাদক মুক্ত এবং সুপেয় পানি সরবরাহ।

পাঠকের মতামত