প্রকাশিত: ২১/০৮/২০১৮ ৭:০১ পিএম

উখিয়া নিউজ ডেস্ক::
ঈদুল আজহার দিন রোহিঙ্গাদের খাবারের তালিকায় মাংস রাখার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা বাস্তবায়নে গত এক সপ্তাহেরও বেশী সময় ধরে মাঠে কাজ করছে কক্সবাজার জেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্টরা।

গত বছরের ঈদুল আজহার সময় রোহিঙ্গাদের জীবন সংশয়ে ছিল। প্রাণ বাঁচাতে তারা আশ্রয় নিয়েছিল বন-জঙ্গল, পাহাড়, আর ধানক্ষেতে। নিজ দেশের সেনাবাহিনীর হাত থেকে জীবন ও সম্ভ্রম বাঁচাতে মাইলের পর মাইল হেটে, ছোট ডিঙ্গিতে করে উত্তাল সাগর পাড়ি দিয়ে কিংবা সাতরে নদী পার হয়ে এপারে আশ্রয় নেয় লাখ লাখ রোহিঙ্গা।

সেসময়ে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে এক অনন্য মানবিকতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তখন থেকেই বাস্তুহারা জনগোষ্ঠী হিসেবে উখিয়া আর টেকনাফে আশ্রিত রয়েছে মিয়ানমারের ১২ লাখ রোহিঙ্গা। এরপর কেটে গেছে এক বছর। আবারো দরজায় কড়া নাড়ছে কোরবানির ঈদ।

জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, উখিয়া ও টেকনাফের প্রায় ৫ হাজার একর বনভূমি উজাড় করে ১২ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে সরকার। বিভিন্ন দাতা ও সেবা সংস্থার সহযোগিতায় তাদের জন্য অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসা নিশ্চিত করা হয়েছে। এবার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে তাদের ঈদ আনন্দকে বাড়িয়ে দেওয়ার। এই লক্ষ্যে ৩০টি ক্যাম্পের এক লাখ ৯৫ হাজার রোহিঙ্গা পরিবারকে কোরবানির মাংস দেওয়া ব্যবস্থা করা হয়েছে।

এ বিষয়ে উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. নিকারুজ্জামান চৌধুরী বলেন, শুধু রোহিঙ্গা নয়, রোহিঙ্গা আশ্রয় দিতে গিয়ে ক্ষতির মুখে পড়া স্থানীয় দরিদ্র পরিবারগুলোতেও আমরা কোরবানির দিন পশুর মাংস বিতরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এজন্য প্রায় ১০-১২ হাজার গবাদিপশু প্রয়োজন । দাতা ও এনজিও সংস্থার প্রতিনিধিদের সাথে এ ব্যাপারে আলাপ হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, মাংস সরবরাহ ও বিতরন মনিটরিং করতে জেলা প্রশাসককে প্রধান করে ৫ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিতে জেলা প্রশাসক ছাড়াও রয়েছেন কক্সবাজার শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কর্মকর্তা (আরআরআরসি), উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ও উখিয়া থানার ওসি।

সরকারের এমন সিদ্ধান্তে খুশি আশ্রিত রোহিঙ্গারা।

এ বিষয়ে কুতুপালং সরকারি বনভূমিতে আশ্রয় নেয়া প্রায় ৫০ হাজার রোহিঙ্গা বসতির বিভিন্ন ব্লকের মাঝি (নেতা) আবু ছিদ্দিক, অাবুল কালাম, সৈয়দ অালম, নুর কামাল বলেন, ২০১২ সাল থেকে এখানে রয়েছি। কিন্তু অবৈধভাবে অবস্থান করায় এতদিন কোন সহযোগিতা পাইনি। তবে গত বছরের আগস্ট মাসে মিয়ানমারের বর্বরতার পর পুরনো নতুন সব রোহিঙ্গাই তালিকাভুক্ত হয়েছি। এরপর থেকে সরকারিভাবে সবধরণের সহযোগিতা পেয়ে আসছি আমরা। এবার সরকার কোরবানির ঈদে রোহিঙ্গাদের জন্য আলাদাভাবে পশু কোরবানির ব্যবস্থা করছে জানতে পেরেছি। মনে হচ্ছে, আশ্রিত জীবনে এবারই প্রথম রোহিঙ্গারা ঈদুল আজহার আনন্দ উপভোগ করতে পারবে।

শরণার্থী ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আবুল কালাম বলেন, ২০ আগস্ট রাত ১১টা পর্যন্ত ৬ হাজার গরু ত্রাণ হিসেবে পেয়েছি। রোববার আরো হাজার তিনেক পাওয়া যাবে বলে আশা করছি। যা পাওয়া যাবে সেসব গবাদি পশুর মাংস প্যাকেটজাত করে বন্টন করা হবে। খবর চ্যানেল আইয়ের

কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন বলেন, যত পশু উপহার হিসেবে পাওয়া যাবে। তার ২৫ ভাগ স্থানীয়দের জন্য ও বাকিগুলো রোহিঙ্গাদের মাঝে বিতরণ করা হবে।

তিনি আরো বলেন, প্রতিটি পরিবার যাতে অন্তত ঈদের দিন মাংস খেতে পারে সে বিষয়টি নিশ্চিত করা হবে।

পাঠকের মতামত

১৫০ বাংলাদেশিকে ফিরিয়ে ২৮৫ সেনাকে নিয়ে ফিরবে মিয়ানমারের জাহাজ

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ জা‌নি‌য়ে‌ছেন, বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশ ও সেনাবাহিনীর ২৮৫ ...

সোনার দামে আবারও রেকর্ড, ভ‌রি‌ ১ লাখ ১৯ হাজার ৬৩৮ টাকা

আবারও সোনার দাম বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে জুয়েলারি ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। প্রতি ভরিতে ...