প্রকাশিত: ২৮/১০/২০১৮ ৭:৪৫ এএম

ampঢাকা: রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমার এখন অনেকটাই বৈশ্বিক চাপে আছেন বলে আলাপকালে জানিয়েছেন ঢাকার কর্মকর্তারা। এই চাপ রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে নেপিডোকে আন্তরিক হতে বাধ্য করবে বলে আশা করছে ঢাকা।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জানা গেছে, রোহিঙ্গা সংকট দূর করতে দুদেশের গঠন করা যৌথ ওয়ার্কিং কমিটির তৃতীয় বৈঠক আগামী ৩০ অক্টোবর ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠকে যোগ দিতে পররাষ্ট্র সচিব মিন্ট থোয়ে’র নেতৃত্বে মিয়ানমারের প্রতিনিধি দল এর আগেই ঢাকায় পৌঁছানোর কথা রয়েছে। মিয়ানমারের প্রতিনিধি দল কক্সবাজারের একাধিক রোহিঙ্গা শিবিরও পরিদর্শন করবেন। ওই বৈঠকে ঢাকার পক্ষে নেতৃত্ব দেবেন পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী জানান, ‘রোহিঙ্গা ইস্যুতে ফলপ্রসু অগ্রগতি হয়েছে। ৮ হাজার রোহিঙ্গার পরিবার ভিত্তিক যাচাই-বাছাই শেষ হয়েছে। এই ৮ হাজার রোহিঙ্গা দিয়ে খুব শিগগিরই শুরু হচ্ছে প্রথম ব্যাচের প্রত্যাবাসন।’

কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমার এখন আগের থেকে অনেক বেশি বৈশ্বিক চাপে রয়েছে। এই চাপের মধ্যে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ৮ হাজার রোহিঙ্গার প্রত্যাবাসনের কথা বলে মিয়ানমারের চাপ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। প্রকৃতপক্ষে এখনই প্রত্যাবাসন শুরুর কোনো আলামত দেখা যাচ্ছে না। তবে এই চাপ মিয়ানমারকে প্রত্যাবাসনের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টিতে বাধ্য করবে।

রোহিঙ্গা নাগরিকদের তথ্য যাচাই-বাছাই করার সঙ্গে যুক্ত এমন একাধিক কর্মকর্তা সারাবাংলাকে জানিয়েছে, প্রত্যাবাসনের জন্য এখন পর্যন্ত ঢাকা থেকে নেপিডোকে ৮ হাজারের বেশি কিছু রোহিঙ্গা’র তালিকা দেওয়া হয়েছে। যার মধ্যে ৪ হাজারের কিছু বেশি রোহিঙ্গার তথ্য যাচাই-বাছাই করে তাদের ফেরত নিতে সম্মতি জানিয়েছে মিয়ানমার। এ ছাড়া জাতিসংঘের সহায়তা নিয়ে কমবেশি ২০ হাজার রোহিঙ্গার পরিবার ভিত্তিক তথ্য নিবন্ধনের কাজ শেষ করেছে বাংলাদেশ।

এদিকে, চলমান অক্টোবরে রোহিঙ্গা ইস্যুতে ঢাকা-নেপিডো বৈঠকের আগে মিয়ানমারের ওপর বৈশ্বিক চাপ বাড়ার একাধিক ঘটনা দেখা গেছে। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের ৯টি সদস্য রাষ্ট্র আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে মিয়ানমারের বিচার দাবি করেছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন মিয়ানমারের ওপর নতুন করে বাণিজ্য অবরোধের ঘোষণা দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা এবং যুক্তরাজ্যও নতুন করে মিয়ানমারের ওপর নিষেধ্বাজ্ঞার ঘোষণা দিয়েছে। অন্যদিকে, সিঙ্গাপুর এবং থাইল্যান্ডও এই ইস্যুতে মিয়ানমারকে চাপ দেওয়ার কথা বলেছে।

কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমারের ওপর বৈশ্বিক চাপ বাড়ার কারণে অবশেষে সামনে এসেছে চীন। এই সংকট দূর করতে দুই দেশের সঙ্গে তৃতীয় পক্ষ হিসেবে চীন কাজ করার কথা জানিয়েছে। নিজেদের অর্থনীতি ভিত্তিক একাধিক প্রকল্প মিয়ানমারে বাস্তবায়ন করার কারণে চীন এতোদিন ভিন্ন কথা বললেও এবার রোহিঙ্গা সংকট সমাধানের জন্য বেইজিং-ঢাকা-নেপিডো বৈঠকের কথা জানিয়েছে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী জানান, ‘রোহিঙ্গা ইস্যু সমাধানে কাজ করছে চীন। বেইজিংয়ে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর উপস্থিতিতে ঢাকা-নেপিডোর মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। সামনে আরও অগ্রগতি হবে।’

সারাবাংলা/

পাঠকের মতামত

আশ্রয় নেওয়া বিজিপিদের বিনিময়ে বাংলাদেশি বন্দি মুক্তি দেবে মিয়ানমার

বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিজিপি) সদস্যদের ফেরানোর বদলে দেশটির জান্তা সরকারের কারাগারে থাকা ...