প্রকাশিত: ১০/১২/২০১৮ ১২:৪০ এএম

উখিয়া নিউজ ডটকম::
২৫ আগষ্ট ২০১৭ ইং থেকে মিয়ানমারের রাখাইনে মিয়ানমার সেনাবাহিনী উগ্রপন্থী রাখাইন যুবকেরা রাখাইনে বসবাসকারী রোহিঙ্গাদের উপর চালায় হত্যা, ধর্ষণ, নিপীড়ন, গ্রেপ্তার, পৈশাষিক নির্যাতন। এ কারণে মিয়ানমার রাখাইন রাজ্য থেকে পালিয়ে এসে উখিয়া টেকনাফের ৩০টি রোহিঙ্গা শিবিরে আশ্রয় নিয়েছে প্রায় ৭ লাখ রোহিঙ্গা। তাদেরকে সরকার মানবিক সেবায় লালন পালন করলেও এনজিওদের অসহযোগীতার কারণে গতকাল রোববার কোন রোহিঙ্গা শিবিরে আন্তর্জাতিক গণহত্যা প্রতিরোধ দিবস পালিত হয়নি বলে রোহিঙ্গাদের অভিযোগ। মিয়ানমার রাখাইনে মুসলিমদের উপর চালানো বর্বরোচিত নির্যাতন। এ নির্যাতন সইতে না পেরে রোহিঙ্গারা দলে দলে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে।
ওইসব রোহিঙ্গারা উখিয়ার কুতপালং, লম্বাশিয়া, মধুরছড়া, বালুখালী, ময়নারঘোনা, তাজনিমারখোলা, জামতলী, থাইংখালী, ও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার তুমব্রু জিরো পয়েন্টে এবং টেকনাফের উনচিপ্রাং, বাহারছড়া, শামলাপুর, লেদা, নয়াপাড়া, মুছনী ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছে। তাদেরকে এনজিও বিভিন্ন দাতা সংস্থা চিকিৎসাসেবা সহ সব কিছু দিয়ে আসছে। উখিয়ার কুতুপালং ক্যাম্পে অবস্থিত রোহিঙ্গা নেতা ডাক্তার জাফর আলম জানান, রোহিঙ্গারা জানেনা আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস কি? কারণ ক্যাম্পে মধ্যে কোন কিছু করতে হলে এনজিও ও প্রশাসনের সহযোগীতার প্রয়োজন রয়েছে।
তারা সহযোগীতা না করায় এ দিবস পালন করা সম্ভব হয়নি। কুতুপালং অনিবন্ধিত রোহিঙ্গা ক্যাম্পের সেক্রেটারী মোহাম্মদ নুর জানান, আজকেই শুনেছি আন্তর্জাতিক গণহত্যা প্রতিরোধ দিবস কি? কারণ মিয়ানমারে হাজার হাজার রোহিঙ্গা গণহত্যার শিকার হয়ে জীবন দিয়েছে। অথচ এনজিও সংস্থাগুলো এ দিবসটি পালন করতে আমাদের সহযোগীতা করেনি।
মিয়ানমারের রাখাইনে নৃশংসতম গণহত্যার বিচার নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যেই রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পালিত হয়নি আন্তর্জাতিক গণহত্যা প্রতিরোধ দিবস। বিভিন্ন দেশে গণহত্যার ঘটনা স্মরণ এবং এর বিরুদ্ধে সার্বজনীন সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্য নিয়ে ১৯৪৯ সালের ৯ ডিসেম্বর গণহত্যাবিরোধী জাতিসংঘ কনভেনশন গৃহীত হয়। ওই বছর থেকেই এ দিনটিকে আন্তর্জাতিক গণহত্যা প্রতিরোধ দিবস হিসেবে পালন করা হচ্ছে। বাংলাদেশে গণহত্যা প্রতিরোধ দিবসটির গুরুত্ব ব্যাপক। রাখাইনে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের জাতিগত নিধনযজ্ঞের শিকার হয়ে ১১ লাখের বেশি মানুষ কক্সবাজারে উখিয়া টেকনাফে আশ্রয় নিয়েছে।
এখন পর্যন্ত রোহিঙ্গাদের ফিরে যাওয়ার মতো নিরাপদ পরিবেশ হয়নি সেখানে। জাতিসংঘের অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে রাখাইনে গণহত্যা এবং জাতিগত নিধনযজ্ঞের বিষয়টি প্রমাণ হওয়ার পর বিশ্বজুড়েই এই গণহত্যার সঙ্গে জড়িতদের বিচারের দাবিও জোরালো হচ্ছে। কক্সবাজারের উখিয়া টেকনাফের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যারা বসবাস করছেন, তাদের এখনও তাড়া করে ফিরছে মিয়ানমার বাহিনীর বিভীষিকাময় নির্যাতনের স্মৃতি। তারাও বিচার চেয়েছেন গণহত্যার, সন্ধান চেয়েছেন এখনও নিখোঁজ শত-সহস্র স্বজনের।
এ বছর দিবসটি পালন উপলক্ষে এক বাণীতে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গণহত্যাবিরোধী জাতিসংঘ কনভেনশন অনুমোদন না করা দেশগুলোকে দ্রুত তা অনুমোদনের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি এই কনভেনশন প্রতিটি জাতিগোষ্ঠীকে নিজেদের ভাষায় অনুবাদ করে ব্যাপকভাবে প্রচারের আহ্বান জানান। তিনি আরও প্রত্যাশা করেন, অযৌক্তিক মুসলিম ও ইহুদি বিদ্বেষের গোঁড়ামি থেকে মুক্ত হয়ে, জাতিগত বিদ্বেষ এবং পরদেশি ভীতি কাটিয়ে সবার জন্য সমান মর্যাদা ও অধিকারের বিশ্ব প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে।
এব্যাপারে জানতে চাইলে কক্সবাজার শরণার্থী ত্রান ও প্রত্যাবাসন কমিশনার আবুল কালাম বলেন, আন্তর্জাতিক গণহত্যা প্রতিরোধ দিবস রোহিঙ্গারা পালন করেছে কিনা আমার জানা নেই

পাঠকের মতামত

পুলিশ থেকে বাঁচতে জীবনটাই দিলেন সিএনজিচালক

গ্রামের চন্দনাইশে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে সিলিন্ডার বিস্ফোরণে এক সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালকের মৃত্যু হয়েছে। পুলিশ দেখে পালাতে গিয়ে ...

চট্টগ্রাম – কক্সবাজার সড়কে চলন্ত সিএনজিতে সিলিন্ডার বি’স্ফোরণ, চালক নিহত

চট্টগ্রাম – কক্সবাজার সড়কে চন্দনাইশ এলাকায় চলন্ত সিএনজি অটোরিকশার সিলিন্ডার বিস্ফোরণের পর আগুনে দগ্ধ হয়ে ...