প্রকাশিত: ০১/১২/২০১৬ ৭:১৫ এএম

মিয়ানমারে রোহিঙ্গা নির্যাতনের বিষয়ে নীরব ভূমিকার জন্য সমালোচিত হওয়ার পরও একই পথে হাঁটলেন দেশটির নোবেলজয়ী নেত্রী অং সান সু চি। এবারো তিনি রোহিঙ্গা নির্যাতনের ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করেননি। আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা এএফপির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে জানানো হয়, আজ বুধবার অং সান সু চি বলেন, তিনি ‘শান্তি এবং জাতীয়ভাবে সমঝোতা’র কাজ করবেন। তাঁর দেশ বর্তমানে নানা প্রতিকূলতার সম্মুখীন। তবে এ সময় তিনি রাখাইন রাজ্যে নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।

মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের নির্যাতনের ব্যাপারে নীরব ভূমিকার জন্য এরই মধ্যে এই নেত্রী আন্তর্জাতিকভাবে সমালোচনা মুখে পড়েছেন। এরপরও তিনি রোহিঙ্গাদের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকলেন।

এদিকে, প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমারে সহিংসতার হাত থেকে বাঁচতে গত সপ্তাহে প্রায় ১০ হাজার রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে এসেছে বলে বাংলাদেশে জানিয়েছে জাতিসংঘ।

মিয়ানমারের পশ্চিম রাখাইন রাজ্যে বসবাসরত এই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ৩০ হাজার রোহিঙ্গাকে এরই মধ্যে উচ্ছেদ করেছে দেশটির সেনাবাহিনী।

রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ ঠেকাতে সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করেছে বাংলাদেশ। কিন্তু গত কয়েক সপ্তাহে প্রায় ১০ হাজার রোহিঙ্গা শুধু গায়ে কাপড়টুকু নিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে বলে জাতিসংঘের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে।

ব্যাংককে জাতিসংঘের অভিবাসী সংস্থার মুখপাত্র ভিভিয়ান ট্যান জানিয়েছেন, পরিস্থিতির দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে এবং এর সংখ্যা আরো বাড়তে পারে।

নিউইয়র্কভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচের স্যাটেলাইটে ধারণ করা ছবি বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, রোহিঙ্গাদের গ্রামে শত শত বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

এদিকে, রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করেছে মিয়ানমার। দেশটিতে বিদেশি সাংবাদিকদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে এবং তদন্তের জন্য ওই এলাকায় কোনো স্বাধীন তদন্তকারীর প্রবেশেও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।

বাংলাদেশি রোহিঙ্গা নেতা আবু গালিব বলছেন, প্রায় তিন হাজার বিচ্ছিন্ন রোহিঙ্গা নাফ নদের একটি দ্বীপে অসহায় জীবন যাপন করছে। তারা বাংলাদেশে প্রবেশের চেষ্টা করছে।

তারা ইতিমধ্যেই প্রায় এক সপ্তাহ পর্যাপ্ত খাবার এবং পোশাক ছাড়া ওই দ্বীপে কাটিয়েছে বলে বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানিয়েছেন আবু গালিব।

ইতিমধ্যেই দুই লাখ ২৩ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে বসবাস করছে, যাদের বেশির ভাগই অবৈধ। মাত্র ৩২ হাজার রোহিঙ্গা অভিবাসী হিসেবে বৈধভাবে নিবন্ধন করেছে।

জাতিসংঘের অভিবাসী সংস্থার মুখপাত্র ভিভিয়ান ট্যান আরো বলেন, রোহিঙ্গাদের প্রবেশ করতে দেওয়ার জন্য বাংলাদেশকে তাগাদা দিচ্ছে জাতিসংঘ।

পাঠকের মতামত