প্রকাশিত: ২৪/০৩/২০১৮ ১০:০৬ পিএম , আপডেট: ১৭/০৮/২০১৮ ৫:০৩ এএম

ডেস্ক রিপোর্ট ::
উখিয়া ও টেকনাফের ২০টি রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবিরে প্রতিদিন ১ কোটি ৬০ লাখ লিটার পানির প্রয়োজন। রোহিঙ্গাদের চাহিদার সমপরিমাণ পানি সরবরাহ করতে গিয়ে বিভিন্ন সেবা ও সাহায্য সংস্থাগুলোকে রীতিমত হিমশিম খেতে হচ্ছে। রোহিঙ্গাদের কারণে যত্রতত্র শত শত গভীর ও অগভীর নলকূপ স্থাপন করে ভূ-গর্ভস্থ পানি উত্তোলণের ফলে উখিয়ার সর্বত্র দিনের পর দিন পানি সংকট তীব্র থেকে তীব্রতর আকার ধারণ করছে। পানি সংকট মোকাবেলায় ভূ-গর্ভস্থ পানির বিকল্প উৎস্য খাল, ছড়া, জলাশয়ের পানি ব্যবহারের উপর তেমন গুরুত্ব না দেয়ায় চলতি শুষ্ক মৌসুমে পানি সংকট আরো তীব্র হবে বলে আশংকা সংশ্লিষ্টদের।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিশ্ব পানি দিবস উদযাপন উপলক্ষে সরকারের জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর উখিয়া রোহিঙ্গা শিবিরে দিবসটি বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে পালন করেছে। উখিয়ার উপ সহকারী প্রকৌশলী মোঃ ইকবাল হাসান জানিয়েছেন, বিশ্ব পানি দিবস উপলক্ষে গতকাল সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কুতুপালং, লম্বাশিয়া ও মধুর ছড়া রোহিঙ্গা শিবিরে পানির সুষ্ঠু ব্যবহারের উপর রোহিঙ্গাদের নিয়ে আলোচনা সভা, র‌্যালি ও বিভিন্ন পদ্ধতি নিয়ে ধারণা দেওয়া হয়েছে। তিনি জানান, উখিয়ার সর্বত্র প্রতিবছর এমনকি প্রতিদিন পানির সংকট তীব্র হচ্ছে। গত বছর উখিয়ার সর্বত্র গড়ে পানির স্তর ছিল ২৫-৩২ ফুট নিচে। অথচ এক বছরের ব্যবধানে চলতি বছরের গত সপ্তাহের জরিপ অনুযায়ী বর্তমানে পানির স্তর গড়ে ৩০-৩৮ ফুট নেমে গেছে। গতবছর কুতুপালং এলাকায় পানির স্তর ছিল ৯ম পৃষ্ঠার ৭ম
৩২-৩৫ ফুট নিচে। অথচ গত সপ্তাহের জরিপ অনুযায়ী কুতুপালং সংলগ্ন রোহিঙ্গা শিবির এলাকায় বর্তমানে পানির স্তর ৪২-৫০ ফুট নিচে নেমে গেছে। তিনি জানান, উখিয়া উপজেলায় স্থানীয় লোকালয়ে ২ হাজার ৬৭৩টি অগভীর ও ৭১১টি গভীর নলকূপ রয়েছে। এগুলোর মধ্যে অগভীর ৭০ শতাংশ ও গভীর নলকূপের ক্ষেত্রে ১০ শতাংশের বেশী নলকূপ ইতিমধ্যে অচল হয়ে গেছে। এছাড়াও উখিয়ায় চলতি বোরো চাষ অধিকাংশ ভূ-গর্ভস্থ পানির উপর নির্ভরশীল। বর্তমানে উখিয়ার সর্বত্র বোরো চাষাবাদের পাশাপাশি স্থানীয় গ্রামীণ দরিদ্র জনগণের মাঝে চরম পানির সংকট বিরাজ করছে। অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নলকূপ থেকে পানি না আসায় ছাত্র-ছাত্রীরা বিশুদ্ধ সুপেয় পানির সংকটে পড়েছে। গ্রামের লোকজনকে বিশুদ্ধ সুপেয় পানি সংগ্রহ করতে সীমাহীন কষ্টে পড়তে হচ্ছে।
এদিকে রোহিঙ্গা শিবিরগুলোতে গতকাল বৃস্পতিবার পর্যন্ত আট হাজার ৫৩টি অগভীর নলকূপের মধ্যে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের রয়েছে ২ হাজার ১৯২টি। ৪০৩টি গভীর নলকূপের মধ্যে সরকারি নলকূপের সংখ্যা ২৫০টি। মোট অগভীর নলকূপের মধ্যে ৫০ শতাংশের মত নলকূপ অচল হয়ে পড়েছে বলে তিনি জানান।
তাছাড়া নানা সমস্যায় ১৮টি গভীর নলকূপের পানি ব্যবহার করা যাচ্ছে না। যেগুলো স্থাপন করেছে বিভিন্ন এনজিও। অন্যদিকে বিশ্ব পানি দিবস উপল ে গতকাল বৃহস্পতিবার এক বিজ্ঞপ্তিতে জাতিসংঘ শরণার্থী বিষয়ক হাই কমিশন জানিয়েছে, রোহিঙ্গা শিবিরগুলোতে প্রতিদিন ১৬ মিলিয়ন লিটার বা ১ কোটি ৬০ লক্ষ লিটার পানির প্রয়োজন। রোহিঙ্গা শিবিরগুলোতে চাহিদার অনেক কম পানি সরবরাহ সম্ভব হচ্ছে বলে জানা গেছে। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের উখিয়া প্রকৌশলী ইকবাল হাসান বলেন, শুষ্ক মৌসুমের কেবলই শুরু। সামনে আরো চরম সংকট অপেক্ষা করছে। জরুরি প্রয়োজনে পানি সংকট মেটাতে সরকার উখিয়ায় ১২শ’ গভীর নলকূপ বরাদ্দ দিয়েছে। তৎমধ্যে রোহিঙ্গা শিবিরের জন্য ৭২০টি ও স্থানীয় জনগণের জন্য ৪৮০টি বরাদ্দ রয়েছে। যেগুলো স্থাপনের কাজ এগিয়ে চলছে। এছাড়াও জরুরি প্রয়োজনে পানি সমস্যা মেটাতে ১১টি পানিবাহী গাড়ি ও ৩টি ওয়ার্টার প্লেন প্রস্তুত রয়েছে বলে তিনি জানান।

পাঠকের মতামত

সোনার দামে আবারও রেকর্ড, ভ‌রি‌ ১ লাখ ১৯ হাজার ৬৩৮ টাকা

আবারও সোনার দাম বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে জুয়েলারি ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। প্রতি ভরিতে ...