প্রকাশিত: ২৬/১০/২০১৮ ৯:০৪ এএম

উখিয়া নিউজ ডটকম::
বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া ১১ লাখ রোহিঙ্গার জন্য যে বরাদ্দ রয়েছে তা দিয়ে আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত খাবার ও অন্যান্য মানবিক সহায়তা দেওয়া সম্ভব হবে। এ সময়ের মধ্যে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় অর্থ সহায়তা পাওয়া না গেলে ভয়াবহ বিপর্যয় নেমে আসবে বলে সংশ্নিষ্ট দাতা সংস্থাগুলো আশঙ্কা প্রকাশ করেছে।

আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর যৌথ সমন্বয় গ্রুপের (আইএসসিজি) কর্মকর্তা সৈকত দাশ জানিয়েছেন, বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের জন্য চাহিদার মাত্র ৪৫ শতাংশ তহবিল পাওয়া গেছে। ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গার খাদ্য ও অন্যান্য মানবিক সহায়তা খাতে ৯৫১ মিলিয়ন ডলার অর্থ চাহিদার কথা জানানো হয়। কিন্তু এই সংকটের এক বছর অতিবাহিত হলেও এ পর্যন্ত ৪২৬ মিলিয়ন ডলার অর্থ সহায়তা পাওয়া গেছে। ওই কর্মকর্তা জানান, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে আরও ৫২৫ মিলিয়ন ডলার অর্থ সহায়তার প্রয়োজন রয়েছে। এ অর্থ পাওয়া না গেলে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গারা চরম সংকটে পড়বে।

আইএসসিজির কমিউনি-কেশন অফিসার নায়ানা বোস জানান, বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গারা সম্পূর্ণরূপে মানবিক সহায়তার ওপর নির্ভরশীল। প্রতি মাসে দাতা সংস্থা এবং বাংলাদেশ সরকারের দেওয়া খাদ্য সাহায্যের ওপর এদের নির্ভর করতে হয়। আগামী মার্চ পর্যন্ত রোহিঙ্গাদের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এখনও ৬ কোটি ৬০ লাখ ডলার প্রয়োজন রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে মানসম্পন্ন শিক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা বিশাল এক সমস্যা। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ে ৯৮ শতাংশ কিশোর-কিশোরী এখনও মানসম্পন্ন শিক্ষার আওতার বাইরে। শিক্ষা খাতে চাহিদার মাত্র ২৯ শতাংশ অর্থ পাওয়া গেছে, যা দিয়ে রোহিঙ্গাদের শিক্ষা দেওয়া কোনোভাবেই সম্ভব হচ্ছে না।

জাতিসংঘের রোহিঙ্গা রেসপন্স কর্মসূচির প্রধান আনিকা স্যান্ডলান্ড বলেছেন, বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গার জন্য আন্তর্জাতিক সহযোগিতার পরিমাণ আশানুরূপ নয়। এদের জন্য চাহিদা মতো অর্থের জোগান আশঙ্কজনকভাবে কম। তিনি বলেন, সংকট মোকাবেলায় অর্থের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সর্বোচ্চ পর্যায়ে তদবির করা আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

রোহিঙ্গারা এমনিতেই তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছে। তার ওপর আগামী শীত মৌসুমে তাদের জন্য পরিস্থিতি আরও অবনতি হতে পারে। ৮০ শতাংশ নারী ও শিশুর সুরক্ষায় এখনও তেমন কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি বলে জানান এ কর্মকর্তা।

জাতিসংঘ কর্মকর্তারা বলেছেন, রোহিঙ্গাদের পাশাপাশি চরম ক্ষতির শিকার স্থানীয়দের জন্য জরুরি পুনর্বাসন কার্যক্রম হাতে নেওয়া অপরিহার্য হয়ে পড়েছে। স্থানীয়রা রোহিঙ্গাদের জন্য ঘরের দরজা খুলে দিয়ে এখন চরম বিপদে পড়েছে তারা। এখানে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের কারণে মারাত্মক পরিবেশ বিপর্যয় ঘটেছে। ভূমি এবং পানির মতো প্রাকৃতিক সম্পদও কমে আসছে। পরিবেশগত সংকট মোকাবেলায় দাতা সংস্থাগুলোর আরও সক্রিয় ভূমিকা দরকার।

জাতিসংঘের ত্রাণ সংস্থাগুলো মনে করে, বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া বিপুল পরিমাণ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী এবং স্থানীয়দের জন্য টেকসই এবং সম্পদের উপযোগী ব্যবহার নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সরকারকে দীর্ঘমেয়াদি সহায়তা দেওয়া প্রয়োজন রয়েছে। সেই সঙ্গে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের অবিলম্বে স্বদেশে ফেরত পাঠাতে মিয়ানমারের ওপর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপ বৃদ্ধি করতে হবে।

পাঠকের মতামত

উখিয়াবাসীর স্বপ্ন পূরণ করতে চাই – জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরীর বিবৃতি

গণমাধ্যমে প্রকাশিত একটি সংবাদের প্রেক্ষাপটে নিজের ফেসবুক প্রোফাইলে বিবৃতি দিয়েছেন উখিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ...