প্রকাশিত: ২৮/০৫/২০১৭ ৯:৪৩ এএম , আপডেট: ১৭/০৮/২০১৮ ৫:২৯ পিএম

সরওয়ার আলম শাহীন, উখিয়া নিউজ ডটকম:;
মিয়ানমারে নির্যাতনের শিকার হয়ে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা এপারে বাংলাদেশের উখিয়া উপজেলার কুতুপালং ও বালুখালী রোহিঙ্গা বস্তিতে আশ্রয় নিয়েও মানবেতর জীবন যাপন করছে। সহায় সম্পদ,আত্মীয় স্বজন হারিয়ে রোহিঙ্গারা বাঁচার স্বপ্ন নিয়ে বাংলাদেশে এসেও কোন কূলকিনারা পাচ্ছে না। একদিকে প্রচন্ড গরমের খড়তাপে পুড়ছে,অন্যদিকে ক্ষুধার জ্বালায় অনেকেই কাতরাচ্ছে। এ এক বিভিষিকাময় পরিস্থিতি। ছোট ছোট শিশুরা মায়ের কাছে খাবার চাইলে,মা সন্তানদের খাবার দিতে পারছেনা। কুতুপালং ও সীমান্ত সংলগ্ন বালুখালীর বনভূমিতে বসবাসরত প্রায় লক্ষাধিক রোহিঙ্গা খাদ্য সংকট ও তীব্র গরমে দুর্বিষহ জীবনযাপন করছে। রমজানে রোজা কিভাবে রাখবে এ চিন্তায় অস্থির অসহায় এসব রোহিঙ্গারা।
শবিবার সকাল ১১ টার দিকে উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা বস্তি ও সাড়ে ১২ টার দিকে বালুখালী রোহিঙ্গা বস্তিতে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রার চিত্র দেখে এসব তথ্য জানা যায়। এ সময় কুতুপালং বস্তিতে বসবাসকারী রোহিঙ্গা আব্দুল করিম জানায়, মিয়ানমার থেকে সাম্প্রতিক সময়ে আসা অধিকাংশ রোহিঙ্গা হতদরিদ্র,বয়োবৃদ্ধ, শিশু। তীব্র গরমে পলিথিনে মোডা ঝুপড়ি ঘরে ঘুমানো তাদের কষ্টকর হয়ে পড়েছে। অনেকে রাতে একটু শীতল পরশের জন্য খোলা আকাশের নিচে রাত্রিযাপন করছে। তার উপর আছে ক্ষুধার যন্ত্রণা। পার্শ্ববর্তী আরেক স্থানে গিয়ে দেখা যায়,স্বামী-স্ত্রী, ৪ সন্তান নিয়ে ছয়জনের একটি পরিবার গরমের মধ্যে পলিথিনের একটি ঝুঁপড়িতে গাদাগাদি করে বসবাস করছে। জানতে চাইলে পরিবারের সদস্য বদি আলম জানায়, গরমের তীব্রতায় রাতে পলিথিন থেকে বৃষ্টির মতো পানি পড়ে। ঘরের ভেতরে যেন আগুন জ্বলছে। এভাবে রোহিঙ্গারা কষ্টের মধ্যে জীবন অতিবাহিত করলেও রমজানে এখনো এদের প্রতি কেউ সাহায্যর হাত বাড়িয়ে দেয়নি। তাই রমজানে এসব রোহিঙ্গারা রোজা কিভাবে রাখবে সে আশংকায় দিনাতিপাত করছে। এ ব্যাপারে কুতুপালং আনরেজিষ্টার্ড রোহিঙ্গা বস্তির চেয়ারম্যান আবু সিদ্দিক জানান, প্রথম দিকে বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা ব্যক্তিবর্গ এসে রোহিঙ্গাদের নগদ টাকা ও বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্য বিতরণ করতে দেখা গেলাও ইদানিং তাও নেই। তাই রোহিঙ্গারা একপ্রকার মানবেতর জীবনযাপন করছে। অনেকে না খেয়ে রোধের তীব্রতাপে ক্ষুধার জ্বালায় মরছে।

পাঠকের মতামত