প্রকাশিত: ২৩/১১/২০১৭ ৮:১৮ পিএম , আপডেট: ১৭/০৮/২০১৮ ১০:৪০ এএম

আমরা প্রায় সময় দেখে থাকি কোন কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের সাথে ঘটনা ঘটলে ছাত্ররা যানবাহনে অগ্নিসংযোগ করে। মনে করা হয় তাতে আন্দোলন সফল! একটি স্বাধীন দেশে বাস বা দোকানপাট এ অগ্নিসংযোগ করে, সাধারণ মানুষের লাখ লাখ টাকা ক্ষতি করে, একটি দেশের অর্থনীতি পঙ্গু করে এ কেমন আন্দোলন! এ কেমন সফলতা! এই কেমন ছাত্রছাত্রীদের বৈশিষ্ট্য!

ডাকাত, সন্ত্রাস, স্ব-শিক্ষিত নামধারী কু-রাজনীতিবিদ’দের আন্দোলন আর দেশ গড়ার ভবিষ্যৎ কারিগরদের আন্দোলন একই ধরণের। মনুষ্যত্ব, মূল্যবোধ ও নৈতিকতাহীনদের আন্দোলন আর দেশ গড়ার হাতিয়ারদের আন্দোলন এক হলে তাদের সাথে ছাত্রছাত্রীদের পার্থক্য কোথায় আর জাতি কাদের উপর ভরসা করবে!

রাজনীতির মত মহৎ সেবাকে আজ সবচেয়ে নিকৃষ্ট শব্দে পরিণত করেছে এই দেশের কথিত রাজনীতিবিদেরা। আজকাল অনেক অভিভাবক দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ এ প্রিয় সন্তানকে দেওয়ার সময় একটিমাত্র উপদেশ দেই যেন বিষাক্ত রাজনীতিতে না-জড়াই! অথচ অন্যান্য উন্নত গণতন্ত্র দেশে সবচেয়ে ভাল ইমেজের লোকগুলো কেবল রাজনীতি করতে পারে। আর পুরো উল্টো চিত্র আমার দেশের রাজনীতির। এখানে সবচেয়ে খারাপ লোকগুলো এবং তাদের চাটুকারেরা রাজনীতি করে।

ফলে ছাত্রছাত্রীরা টাকার বিনিময়ে ফাঁস হওয়া প্রশ্নে জিপিএ-৫ নিয়ে ডিগ্রী লাভ করে ঘুষের মারফতে যোগদান করে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে। অতঃপর শুরু হয় দুর্নীতির মহোৎসব। দেশ যাচ্ছে রসাতলে! তাতে কিছুই আসে – যায়না বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কর্তাবাবুদের। কারণ তারা কেবল টাকা দিয়ে সার্টিফিকেট কিনে স্ব-শিক্ষিত হয়ে চাকুরীতে ঢুকেছে তাদের মধ্যে সুশিক্ষার কোন রেশবিন্দু নেই।

কোথায় যেন পড়েছিলাম একটি জাতি ধ্বংস করার জন্য পারমাণবিক বোমা বা ক্ষেপাণাস্ত্র নিক্ষেপের প্রয়োজন নেই। শুধু প্রয়োজন সেই জাতির শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস করা। এখানে শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস বলতে প্রশ্ন ফাঁসকে বেশি প্রধান্য দেওয়া হয়েছে। কারণ ছাত্ররাই সব স্তর পার করে একদিন একটি দেশের মেরুকরণ ঠিক করতে বিভিন্ন সেক্টরে অধিষ্ঠিত হয়। কেউ সুশিক্ষায় দীক্ষিত হয়ে বসে আর কেউ কু-শিক্ষা বা স্বশিক্ষায় বসে। বর্তমানে আমাদের দেশের প্রায় প্রতিটি সেক্টরে স্বশিক্ষিতদের আধিপত্য। এখানে সুশিক্ষিতরা বাকরুদ্ধ। ফলে মূল্যবোধ ও নৈতিকতা হারিয়ে তারা নিমজ্জিত হয়ে পড়ে দুর্নীতির মহোৎসবে।

একটি গণতন্ত্র দেশ এগিয়ে নেওয়ার জন্য সবচেয়ে বড় নিয়ামক হল সুস্থ রাজনীতি। যাকে বাদ দিয়ে কখনওই একটি গণতন্ত্র দেশের ভবিষ্যৎ ভাবা যায়না। অথচ আমার দেশের রাজনীতিবিদদের নাম শুনলে ভয়ে, আতংকে শিউরে উঠে খেটেখাওয়া সাধারণ মানুষ। তাদের অপ-রাজনীতি আজ সমগ্র জাতির অভিশাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাদের রোষানল থেকে বাঁচতে সুশিক্ষিত সচেতন লোক, মেধাবী ছাত্রছাত্রী আজ রাজনীতির বিষাক্ত ছোবলে যুক্ত হতে চাইনা।
যেখানে একটি গণতন্ত্র দেশ রাজনীতিবিদদের ক্ষমতা বলে চলে সেখানে সুশিক্ষিত, মেধাবীদের স্থান না হলে বা তারা যুক্ত না হলে এই দেশ বা জাতির কি হবে? কারা নেতৃত্ব দেবে এই জাতির! স্ব-শিক্ষিতরা না সুশিক্ষিতরা?

সকল আদর্শিক মানুষের মত আমারও একই চাওয়া। সুস্থ ও সুন্দর মনোমানষিকতায় পরিপূর্ণ হউক আমাদের রাজনীতিবিদদের হৃদয়। নিপাত যাক দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও অপ-রাজনীতি। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হউক প্রকৃত মেধা বিকাশের আদর্শিক স্থল। ছাত্রছাত্রী যেন ফিরে পাই সুশৃঙ্খল পরিবেশ। পরিহার হউক সংঘাতময় ছাত্র আন্দোলন। এখনই যথাযথ পদক্ষেপ না নিলে রাজনীতি ও শিক্ষা ব্যবস্থার করুণ আর্তনাদ থামানো দুর্বিষহ হয়ে পড়বে।

হেলাল উদ্দিন সাগর
নির্বাহী সম্পাদক
সেন্টমার্টিন বিডি নিউজ (এসবিএন), স্টাফ রিপোর্টার দৈনিক কক্সবাজার ৭১।

পাঠকের মতামত

নতুন রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকানোই যখন বড় চ্যালেঞ্জ!

মিয়ানমারের তিনটি প্রধান এথনিক রেজিস্ট্যান্ট গ্রুপ—তাং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি (টিএনএলএ), মিয়ানমার ন্যাশনাল এলায়েন্স (এমএমডিএ) এবং ...

একটি ফুল—

একটি ফুল, একটি ফুলের জন্যে কতো নিষ্পাপ গাছ প্রাণ হারালো, এই বর্বর শুকোনের দল বারংবার ...