প্রকাশিত: ১৭/০৭/২০১৬ ৬:০৬ এএম , আপডেট: ১৭/০৭/২০১৬ ৬:৫১ এএম

১। যৌতুক দাবী ও অন্যায় আচরণে অতিষ্ট করে স্বামীর সংসার ছেড়ে পিত্রালয়ে এসে নিরুপায় আদালতে মামলা করতে আসি, আমার স্বামীর বিরুদ্ধে। আমার বিজ্ঞ আইনজীবী বললেন,
মামলা করতে, কাগজ-কোর্ট ফি, কম্পোজ-প্রিন্টের ৩/৪ শত টাকা ছাড়া আর কোন খরচ নাই!
২। আমার কৌশলী/মূহুরী’কে যা ইচ্ছা বা যতটা সম্ভব ফি দিতে পারি, দাবী-দাওয়া নাই। এখন না থাকলে পরে দিলেও চলবে!
৩। আদালতের বেঞ্চে কাউকে কোন টাকা-পয়ঁসা দিতে হয় না! বরং অপারগদের কাগজ/কোর্ট ফি, কম্পোজ পর্যন্ত বকেয়া এমনকি ফ্রিও দেয়া হয়!
৪। মামলার আর্জিতে আমি বাদী, বিবাদী, স্বাক্ষী, সালিশকার সহ সংশ্লিষ্ট প্রত্যেকের নাম/ঠিকানা ছাড়াও মোবাইল নং, ইমেইল এ্যাড্রেস, ফেসবুক, টুইটার যা যা আছে বা সংগৃহীত- তাও লিখা হলো!
৫। ডকে দাঁড়িয়ে আমার বিজ্ঞ আইনজীবী কে অনুস্বরণে শপথ করে, আমার অভিযোগ বিজ্ঞ ম্যাজিষ্ট্রেটের কাছে তুলে ধরে প্রতিকার/বিচার চাইলাম, আমার আর্জি আর্জি ও বিজ্ঞ আইনজীবীর যুক্তি শুনে, বিবাদী ও স্বাক্ষীদের দু’দিনের মধ্যে হাজির হতে আদেশ দিলেন!
৬। ম্যাজিষ্ট্রেট মহোদয়ের আদেশ পেয়ে আদালতের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা (পেশকার/ষ্টেনোগ্রাফার) কিছুক্ষণের মধ্যেই বিবাদী ও স্বাক্ষীগণ সহ সংশ্লিষ্ট সকল কে আদালতের নিজস্ব মোবাইলে/ইন্টারনেটে কল/ ইমেইল করে ও ম্যাসেজ দিয়ে জানিয়ে দিলেন!
৭। আমার বিবাদী ও স্বাক্ষীরা মামলার সংবাদ পেয়ে, বিবাদীর অসুস্থ্য পিতাকে নিয়ে হাসপাতালে অবস্থানের কারণ দেখিয়ে (অনলাইনে উকালতনামায় স্বাক্ষর করে) আদালতে একখানা সময়ের আবেদন পাঠানো এবং আরো ৪ দিন পরে মামলার ধার্য়্য তারিখের কথা, আদালতের ম্যাসেজ পেয়ে, আমি অবগত হই।
৮। মামলার ধার্য্য দিনে আমি বাদী, স্বাক্ষী ও বিবাদী আদালতে হাজিরা দাখিল করি। শুনানীকালে উভয়পক্ষ নিজ নিজ বক্তব্য ও নিজেদের স্বাক্ষ্য-প্রমাণ ও বিজ্ঞ আইনজীবীর যুক্তিবাক্য উপস্থাপন করি!
৯। বিজ্ঞ ম্যাজিষ্ট্রেট উভয়পক্ষের ‘বক্তব্য, স্বাক্ষ্য-প্রমাণ, ঘটনার পারিপার্শ্বিকতা এবং আমি বাদী ও আমার স্বামী বিবাদী উভয়ের আপোষের আগ্রহ আর মামলা ধারা (যৌতুক নিরোধ আইনের ৪ ধারা) আপোষ যোগ্য’ ইত্যাদি বিবেচনায়’ উভয়পক্ষের বিজ্ঞ আইনজীবীগণ কে “১ ঘন্টার মধ্যে আমরা উভয়পক্ষকে নিয়ে চেম্বারে বৈঠকে বসে আদালত কে অবগত করতে নির্দেশ” দেন।
১০। তৎক্ষণাৎ আমি বাদীর চেম্বারে বৈঠকে বসে, বিবাদী আর আমার কাছে “যৌতুক সহ যে কোন অন্যায় দাবী করিবে এবং দাম্পত্য কলহ হয় মতো কোন অন্যায় আচরণ আমার প্রতি করিবে না” মর্মে অঙ্গীকার নামা দিলে, আমরা আমরা সর্ব সম্মতি ক্রমে আবার আদালতে হাজির হয়ে বিজ্ঞ ম্যাজিষ্ট্রেট কে বৈঠকের ফলাফল অবহিত করে আমি আমার বিজ্ঞ আইনজীবীর মাধ্যমে “বাদী পক্ষে আপোষ সূত্র মামলা প্রত্যাহারের আবেদন” করিলে, বিজ্ঞ ম্যাজিষ্ট্রেট মামলাটি ফৌজদারী কার্যবিধি আইনের ২৪৮ ধারায় নিষ্পত্তি করার আদেশ প্রচার করেন। মাত্র ১ সপ্তাহে একটি মামলার কাজ শেষ!

বেলাল আজাদঃ ফ্রি-ল্যান্স সংবাদকর্মী ও প্রধান সম্পাদক, বাংলাদেশের আইন কানুন।

পাঠকের মতামত

নতুন রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকানোই যখন বড় চ্যালেঞ্জ!

মিয়ানমারের তিনটি প্রধান এথনিক রেজিস্ট্যান্ট গ্রুপ—তাং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি (টিএনএলএ), মিয়ানমার ন্যাশনাল এলায়েন্স (এমএমডিএ) এবং ...

একটি ফুল—

একটি ফুল, একটি ফুলের জন্যে কতো নিষ্পাপ গাছ প্রাণ হারালো, এই বর্বর শুকোনের দল বারংবার ...