প্রকাশিত: ১৯/০৭/২০১৯ ৯:৪১ এএম , আপডেট: ১৯/০৭/২০১৯ ৯:৪৮ এএম

মুহিববুল্লাহ মুহিব
পর্যটন নগরী কক্সবাজারে ক্রমেই বেড়ে চলেছে ম্যাসাজ পারলার। এসব পারলারের আড়ালে চলছে অনৈতিক ও অসামাজিক কর্মকাণ্ড। অভিযোগ আছে এই ধরনের অনৈতিক কর্মকাণ্ডের সুযোগ দিয়ে মোটা অংকের অর্থ মাসোহারা তুলছে এক শ্রেণির প্রভাবশালী।

কক্সবাজার হোটেল-মোটেল জোনের হুয়াইট বিচ হোটেলের তৃতীয় তলায় গড়ে উঠেছে অ্যাঞ্জেল টাস ম্যাসাজ পারলার। এছাড়া ওশান প্যারাডাইজ হোটেলের বিপরীত দিকে গড়ে উঠেছে আরও একটি ম্যাসাজ পারলার। কিন্তু এসব পারলারের ভেতরে ম্যাসাজের বদলে চলছে অবৈধ কর্মকাণ্ড।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, এসব পারলারে অনুমোদনের জন্য আবেদন করলেও তাদের পরিবেশ ভালো না থাকায় অনুমতি দেয়া হয়নি। তারপরও তারা স্থানীয় প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতাদের হাত করে এসব পারলারে অবৈধ কর্মকাণ্ড চলমান রেখেছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বাইরে থেকে ভেতরের পরিবেশ অনুমান করা খুবই কঠিন। ভেতরে প্রবেশ করলেই চোখে পড়বে ছিমছাম পরিপাটি সেলুন। অথচ এর মধ্যে চলছে ভয়ংকর অনৈতিক কর্মকাণ্ড। স্কুল-কলেজের উঠতি বয়সী ছেলেরাসহ যুব-সমাজের একটি বড় অংশ এদের কাস্টমার। সেখানে দেখা মিলে ম্যাসাজের দায়িত্বে থাকা সুন্দরী রমণীদের। যাদের দেখে বোঝার উপায় নেই তারা কী পতিতা নাকি অন্যকিছু।

একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্র বলছে, শুধু স্কুল-কলেজ পড়ুয়ারাই নয়, আড়ালে এ ম্যাসাজ পারলারে আসে ইয়াবা গডফাদাররাও। তারা এখানে এসে আত্মগোপনে থাকে। আর এসব ম্যাসাজ পারলারের মালিকরা মোটা অংকের টাকার লাভে প্রশাসনকে ম্যানেজ করে এ কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে।

অ্যাঞ্জেল টাস ম্যাসাজ পারলারের কাস্টমার রাশেদ জানান, তিনি একজন ছাত্র। কক্সবাজারের একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েন। মাঝে মধ্যে এখানে আসেন শরীর ম্যাসাজ করাতে।

অ্যাঞ্জেল টাস ম্যাসাজ পারলারে কাজ করেন এমন একজনের নাম মিষ্টি (ছদ্মনাম)। তিনি জানান, মাসিক ১৫ হাজার টাকা বেতনে চাকরি করেন তিনি। তবে তিনি কী ধরনের ম্যাসাজ করেন সে ব্যাপারে প্রতিবেদকের প্রশ্নের উত্তরে চুপ হয়ে যান।

অ্যাঞ্জেল টাস ম্যাসাজ পারলারের পাশের ফ্ল্যাটের একজন জানান, এখানে অনৈতিক কাজ হয়, তা সবাই জানে। কিন্তু প্রশাসন তাদের কিছু বলে না। অসামাজিক এসব পারলার থেকে প্রশাসনের কিছু কর্মকর্তা মোটা অংকের মাসোহারা নিয়ে তাদের সুযোগ করে দেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কক্সবাজারের সাবেক এনডিসি লুৎফর রহমান সোহাগ বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ‘আমি দায়িত্বে থাকতে অ্যাঞ্জেল টাস ম্যাসাজ কর্তৃপক্ষ অনুমোদনের জন্য আবেদন করে। কিন্তু তাদের পরিবেশ ভালো না থাকায় এবং অবৈধ কর্মকাণ্ডের অভিযোগে অনুমোদন দেয়া হয়নি।’

মোবাইলে এসব বিষয়ে অ্যাঞ্জেল টাস ম্যাসাজ পারলারের ম্যানেজার সাজু বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ‘আমাদের জেলা প্রশাসনের সব অনুমোদন রয়েছে। আপনি এসে দেখে যান।’ পরে সেখানে গেলে কিছুই দেখাতে পারেননি তিনি। বরং আর্থিকভাবে এ প্রতিবেদককে ম্যানেজ করার চেষ্টা করেন।

এ বিষয়ে কক্সবাজারের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মো. আশরাফুল আবছার বলেন, ‘বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত নই। খোঁজ-খবর নিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
সুত্র” বার্তাটোয়েন্টিফোর

পাঠকের মতামত