প্রকাশিত: ১৬/০২/২০১৭ ৬:০২ পিএম
জসিম উদ্দিন টিপু, টেকনাফ ;:
 মিয়ানমারে সন্ত্রাসী হামলার পর সেদেশের সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে পরিচালিত যৌথ অভিযান ও অমানবিক নির্যাতনে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের অনেকে নিজ দেশে ফিরতে শুরু করেছেন। বিশেষ করে অবস্থাসম্পন্ন পরিবারের লোকেরা মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনীকে ফাঁকি দিয়ে কিংবা ম্যানেজ করে নিজ দেশে ঢুকে পড়ছেন। চলে যাওয়া রোহিঙ্গারা সেখানে আগের মতোই স্বাভাবিক জীবন-যাপন করছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। বিজিবি ও রোহিঙ্গা ক্যাম্প কমিটির সদস্যদের অনেকেই বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, গত কয়েকদিনে মিয়ানমারের ৯শ নাগরিক নাফ নদী দিয়ে নৌকা যোগে স্বদেশে চলে গেছেন। অবস্থাসম্পন্ন এসব লোক সহায়-সম্পদ রক্ষায় স্বইচ্ছায় মিয়ানমারে চলে গেছেন। টেকনাফ-উখিয়ায় অনিবন্ধিত রোহিঙ্গা ক্যাম্প এবং বিভিন্ন এলাকায় বিচ্ছিন্ন ভাবে অবস্থানরত মিয়ানমারের বিত্তশালী নাগরিকদের অনেকে নিজ দেশে চলে যেতে নানা ভাবে তত্পরতা চালাচ্ছেন।
লেদা রোহিঙ্গা ক্যাম্পের সভাপতি ডাক্তার দুুদু মিয়া বলেন, রাইম্যাবিল এলাকার মৌলভী মো. হোছন, রাইম্যাবিল গ্রাম কমিটির সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম, ধলু হোছনের পুত্র রশিদ আহমদ, তার পুত্র মৌলভী ছানা উল্লাহ, আনোয়ারা বেগম এবং বুরা সিকদারপাড়া এলাকার জুবেদা খাতুন পরিবার নিয়ে সপ্তাহ খানেক আগেই মিয়ানমার চলে গেছেন। এদের মতো অনেকেই জমি-জমা রক্ষা করতে নিজ দেশে চলে যাচ্ছেন।
লেদা অনিবন্ধিত রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আমির হোছাইন ও সদস্য ফয়েজ মুরব্বী বলেন, এখনও বিত্তশালীদের অনেক আছেন যারা চলে যেতে জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন।
মিয়ানমার থেকে আসা ৯শ’ রোহিঙ্গা নিজ দেশে চলে গেছেন জানিয়ে টেকনাফস্থ ২ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. আবুজার আল জাহিদ বলেন, অবস্থাসম্পন্ন আরো অনন্ত ১৪শ’ লোক স্বদেশে ফিরতে নানা ভাবে যোগাযোগ করছেন।
আতঙ্কে টেকনাফের জেলেরা:কক্সবাজারের টেকনাফে নাফ নদীর জেলেদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিজিপি) গুলিতে হতাহত এবং অপহরণের ঘটনার কারণে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নাফ নদী থেকে মাছ শিকারের সময় মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী বাংলাদেশের জলসীমায় প্রবেশ করে জেলেদের অপহরণ এবং বিভিন্ন ধরনের নির্যাতন চালায়।
গোয়েন্দা সূত্র জানায়, সর্বশেষ গত সোমবার নাফ নদীর হ্নীলা পয়েন্টে মাছ শিকার কালে বিজিপি এক জেলেকে ধরে নিয়ে পরে দাবিকৃত মুক্তিপণ নিয়ে ছেড়ে দেয়। এদিকে নাফ নদীতে মাছ শিকার কালে বিভিন্ন সময়ে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনীর হাতে আটক ১৯ বাংলাদেশি জেলে এখনো দেশে ফিরে আসেনি। এসব জেলে পরিবার বর্তমানে অভাব অনটনে দিন কাটাচ্ছে বলে জানা গেছে।
বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. আবুজার আল জাহিদ জানান, সীমান্তে গুলি করা আন্তর্জাতিক আইনে অপরাধ। মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী গুলি করে আইন লঙ্ঘন করছে। তবে আমরা কড়া ভাষায় প্রতিবাদ জানিয়েছি। এ ছাড়া জেলেদের বিষয়টি নিয়ে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সঙ্গে আলাপ-আলোচনা চলছে বলে তিনি দাবি করেন।

পাঠকের মতামত

কক্সবাজারে বায়ুবিদ্যুৎকেন্দ্র চালু, দৈনিক উৎপাদন ৩০ মেগাওয়াট

কক্সবাজার সদর উপজেলার বাঁকখালী নদীর খুরুশকুল উপকূলে বায়ুবিদ্যুৎকেন্দ্র চালু হয়েছেছবি: প্রথম আলো কক্সবাজার সদর উপজেলার ...

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে টার্গেট কিলিং!

কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে চলছে ‘টার্গেট কিলিং’। ক্যাম্পে আধিপত্য বিস্তার, মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজিসহ নানা অপরাধ কর্মকাণ্ড ...

জান্নাতুলকে খুনের কথা আদালতে স্বীকার করলেন কক্সবাজারের রেজা

রাজধানীর পান্থপথে আবাসিক হোটেলে চিকিৎসক জান্নাতুল নাঈম সিদ্দিকা হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন ...

খাদ্য সংকটে সেন্টমার্টিন

হেলাল উদ্দিন সাগর :: বৈরী আবহাওয়ার কারণে গত এক সপ্তাহ ধরে দেশের একমাত্র প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিন ...