প্রকাশিত: ১৯/০৩/২০১৯ ৭:৫১ এএম

ঢাকা: মাদকের গডফাদার ও বিক্রেতার ধরতে তিন ক্যাটাগরিতে তালিকা তৈরির কাজ শেষ হয়েছে। ‘এ’, ‘বি’ ও ‘সি’ এই তিন ক্যাটাগরিতে এবার তালিকা করা হয়েছে। সারাদেশ থেকে ‘এ’ ক্যাটাগরির অন্তত এক হাজার জন গডফাদারের নাম উঠে এসেছে তালিকায়। এছাড়া ‘বি’ ও ‘সি’ ক্যাটাগরিতে আরও প্রায় ৩০ হাজার মাদক ব্যবসায়ীর নাম রয়েছে বলে সারাবাংলাকে জানিয়েছেন একটি গোয়েন্দা সংস্থার একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।

এবার অভিযানের পালা। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর বৈঠকের মাধ্যমে খুব শিগগিরই অভিযান শুরুর ঘোষণা আসছে। এবারের মাদকবিরোধী অভিযান আরও জোরালো ও কৌশলী হবে জানান সংশ্লিষ্টরা।

বিজ্ঞাপন
সোমবার (১৮ মার্চ) মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সারাবাংলাকে বলেন, ‘দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা তিন ক্যাটাগরির এই তালিকা করে। এরই মধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তালিকা জমা পড়েছে। তালিকার একটি কপি মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরেও জমা দেওয়া হয়েছে।

‘এখন বৈঠকের দিনক্ষণের পালা। শিগগিরই একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠকের চুম্বক অংশ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পেশ করা হবে। এরপরই চুড়ান্ত অভিযান শুরু হবে’ বলেন ওই কর্মকর্তা।

তিনি জানান, নতুন তালিকার মধ্যে একই ব্যক্তির নাম প্রতিটি তালিকায় থাকলে তাকে ‘এ’ ক্যাটাগরি, দুটি তালিকায় থাকলে ‘বি’ক্যাটাগরি আর অন্যদের ‘সি’ ক্যাটাগরির অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

কবে নাগাদ অভিযান শুরু হতে পারে জানতে চাইলে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘আগামী এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। সেই বৈঠকেই সারাদেশে অভিযানের দিনক্ষণের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসবে। এজন্য মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর সব ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছে।’

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের আরেক কর্মকর্তা সোমবার সারাবাংলাকে বলেন, আগামী ৬ মে রমজান শুরু হবে। এর এক মাসের মাথায় ঈদুল ফিতর অনুষ্ঠিত হবে। সেই ক্ষেত্রে রোজার আগে মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু নিয়ে দ্বিমত আছে অনেক কর্মকর্তার। আর সরকার যদি চায় তবে যে কোনো সময় এ অভিযান শুরু হতে পারে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

অভিযান সম্পর্কে জানতে চাইলে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের অপর একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা সারাবাংলাকে বলেন, ‘এবার কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না। মাদক সরবরাহকারী, ডিলার, খুচরা বিক্রেতা, সেবনকারী, পৃষ্ঠপোষকতাকারী, সহায়তাকারী—সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে। এমনকি ‘এ’ ও ‘বি’ ক্যাটাগরির তালিকাপ্রাপ্তরা যাতে সহজে জামিন না পান সে উদ্যোগও নেওয়া হবে।

অন্যদিকে পুলিশসহ যারা মাদক নির্মূলে বিশেষ ভূমিকা পালন করবে তাদের পুরস্কার এবং যারা বিধি-বহির্ভূত কর্মকাণ্ড করবে তাদের তিরস্কারের ব্যবস্থাও থাকছে এবারের অভিযানে।

সূত্র জানায়, গত বছর র‌্যাব ও পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে মারা গেছে ২৬১ জন মাদক কারবারি। এদের বেশিরভাগই তালিকাভুক্ত মাদক ব্যবসায়ী ছিল। এবার হালনাগাদের সময় তাদের নাম বাদ দিয়ে নতুন তালিকা করা হয়েছে। মাদকের গড়ফাদারদের অনেকেই গত বছরের অভিযানে ধরাছোঁয়ার বাইরে ছিল, এমন ব্যক্তিদেরও তালিকায় আনা হয়েছে।

জানতে চাইলে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের মহাপরিচালক জামাল উদ্দিন বলেন, ‘এবার নতুন করে মাদক কারবারীদের তালিকা তৈরির কাজ শেষ হয়েছে। খুব শিগগিরই নতুন অভিযানের ঘোষণা আসতে পারে। নতুন আইনের আলোকেই এবারের অভিযানে পরিচালিত হবে।’

অভিযানের আগেই কেউ আত্মসমর্পণ করতে চাইলে তাদের ব্যাপারে কি সিদ্ধান্ত আসবে জানতে চাইলে ডিজি বলেন, ‘এরই মধ্যে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি কক্সবাজারে প্রায় ২০০ জন মাদক ব্যবসায়ী আত্মসমর্পণ করেছে। সারাদেশে বিচ্ছিন্নভাবে আরও প্রায় ১০০ জনের মতো মাদক ব্যবসায়ী আত্মসমর্পণ করেছে। আরও যারা মাদক ব্যবসা ছেড়ে ভালো পথে আসতে চায় তাদের সুস্বাগতম। এমনকি অভিযানের সময়ও কেউ যদি আত্মসমর্পণ করে তবে তাদেরও স্বাগতম জানানো হবে। অন্যথায় কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।’ সুত্র : সারা বাংলা

পাঠকের মতামত

আশ্রয় নেওয়া বিজিপিদের বিনিময়ে বাংলাদেশি বন্দি মুক্তি দেবে মিয়ানমার

বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিজিপি) সদস্যদের ফেরানোর বদলে দেশটির জান্তা সরকারের কারাগারে থাকা ...