প্রকাশিত: ১২/০৪/২০২০ ৪:৫৩ পিএম , আপডেট: ১২/০৪/২০২০ ৪:৫৪ পিএম

ইউছুফ আরমান::
পৃথিবীতে ইতিহাসের অনন্য অসাধারন ব্যক্তি গুলোর বেশীর ভাগ ব্যক্তির জন্ম খুব সাধারন ঘরেই””! “পরিশ্রম ,সততা, নিষ্ঠা থাকলে হয়তো , একদিন আমার মত “সাধারন” ছেলেটার “সাধারন” এর সাথে “অ” টা যোগ হয়ে “অসাধারন” নামক শব্দটার পূর্ণজন্ম হবে৷!!

আমাদের মত মধ্যবিত্ত পরিবারের গুলো সবসময় অল্পতেই সুখ খুঁজে নেয়৷ কারণ তারা জানে অল্প-স্বল্পর চাইতে বেশি কিছু আশা করলে “সুখ”নামক বস্তুটা তাদের কপালে জুটবেনা৷ আমাদের মধ্যবিত্ত পরিবারের গুলোর কাছে যখন কোনো বন্ধু বিপদে পরলে টাকা ধার চাইতে আসে৷ তখন আমরা টাকা দিয়ে হেল্প করতে না পারলে উপদেশমূলক কিছু কথা শুনিয়ে সাহস জোগানোর চেষ্টা করি৷ আর সাহায্য চাইতে আসা বন্ধুটা যদি খুব আপন হয় তাহলে সে উপদেশ নামক অখাদ্যগুলো না শুনলেও শুনার মত ভান ধরে থাকে৷

আমাদের মধ্যবিত্ত পরিবারের মা গুলো তো আরও বেশি ত্যাগী৷ মা গুলো তার স্বামীর কষ্ট আর সন্তানের আবদার মেটানোর জন্য পারলে হয়তো নিজেই কষ্ট করে৷ বাবা-মা থেকে দেখে সন্তানটাও একসময় ত্যাগ স্বীকার করা শিখে যায়৷ অভাব থাকা সত্ত্বে ও মা যখন বলেঃ বাবা কি খাবি বল? তুই যা বলিস তাই রান্না করে খাওয়াবো তোকে! সন্তান বুঝতে পেরে বলে, আম্মু আলু বর্তা আর ডাল খেয়েছি অনেক দিন হলো। আজকে আমার জন্য শুধু আলু বর্তা আর ডাল বানাবা৷ বেচেঁ থাকুক আমার মত সাধারন ঘরের মানুষদের অসাধারন হওয়ার স্বপ্নটা৷ এর জন্য শুধু শরীরের তেজ থাকলেই চলবে না, বরং মনের তেজটাও চাই৷

মধ্যবিত্ত পরিবারের আনন্দগুলো সবার চোখে পড়ে৷ কিন্তু তাদের দুঃখগুলো দেখার বা অনূভব করার মত মানুষ খুব কমই থাকে৷ মধ্যবিত্ত পরিবারের দুঃখ কষ্টের অন্যতম সাক্ষী হলো “রাতে ঘুমানোর সময় তার মাথার নিচে দেওয়া বালিশটা”৷ মধ্যবিত্তরা বড় স্বপ্ন দেখতে ভয় পাই৷ কারণ তারা জানে স্বপ্নপূরণ না হওয়ার হতাশা কি জিনিস৷

পৃথিবীর তুলনায় নিজেকে মাপতে পারি তখন বুঝতে পারি যে-প্রয়োজন মেটাতে যা দরকার তা হয়ত পাওয়া যেতে পারে। কিন্তু এর বাইরে কিছু চাহিদা থাকলে অভাবের আর অভাব থাকবে। আমাদের শুধু স্বপ্ন থাকা চায়।

‘সবাই গরীবদের নিয়ে ব্যস্ত আর মধ্যবিত্তদের দুর্দশার কথা শুধু ফেসবুকে তুল ধরা যায়। কিন্তু বাস্তবতা বহুদূর।

বর্তমান বিশ্বব্যাপি মহামারী করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে সারাদেশে সব কিছু বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এই মুহূর্তে গৃহবন্দি সাধারণ মানুষ। নিম্ন আয়ের মানুষের হাতে খাবার এবং প্রয়োজনীয় দ্রব্য তুলে দিচ্ছেন অনেকেই। সরকারও গরিব ও নিম্ন আয়ের মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। তবে মধ্যবিত্তের পাশে নেই কেউ। ঘরে খাবার না থাকলেও মধ্যবিত্তরা লজ্জায় কিছু বলতে পারছে না। সারাদেশে লাখ লাখ মধ্যবিত্তের অবস্থাও প্রায় একই। মধ্যবিত্ত পরিবারের লোকগুলো আবেগাপ্লুত, ‘এটা কোনো জীবন হলো। সংসার চালাতে যুদ্ধ করতে হচ্ছে। চক্ষুলজ্জায় কষ্টগুলো প্রকাশ করা যায় না। এই যে আমরা মধ্যবিত্ত। আমাদের কোনো কষ্ট নেই। আছে শুধু সুখ। কিন্তু এর আড়ালে আমরা যে কত কষ্টে জীবন যাপন করি, তা বোঝানো যায় না। কেউ বোঝারও চেষ্টা করে না।’ সত্যিই, খিদের জ্বালা হচ্ছে সবচেয়ে বড় জ্বালা।

লেখকঃ-
ইউছুফ আরমান,
কলামিষ্ট, সাহিত্যিক,
ফাজিল, কামিল, বি.এ অনার্স, এম.এ, এলএল.বি। দক্ষিণ সাহিত্যিকাপল্লী, বিজিবি স্কুল সংলগ্ন রোড়, ০৬নং ওয়ার্ড, পৌরসভা, কক্সবাজার। 01615-804388
[email protected]

পাঠকের মতামত

নতুন রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকানোই যখন বড় চ্যালেঞ্জ!

মিয়ানমারের তিনটি প্রধান এথনিক রেজিস্ট্যান্ট গ্রুপ—তাং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি (টিএনএলএ), মিয়ানমার ন্যাশনাল এলায়েন্স (এমএমডিএ) এবং ...

একটি ফুল—

একটি ফুল, একটি ফুলের জন্যে কতো নিষ্পাপ গাছ প্রাণ হারালো, এই বর্বর শুকোনের দল বারংবার ...